পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৯তম আসর এরই মধ্যে জমে উঠেছে। রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে যাচ্ছেন আগ্রহীরা। বিক্রেতারা বলছেন, মেলায় বিক্রিও মোটামুটি জমে উঠেছে। আর এবারের আসরে শিশুদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে মিনি পার্ক।
মেলায় কেনাকাটার পাশাপাশি আগত শিশুদের বাড়তি বিনোদন যোগ করছে মেলার ভেতরের মিনি শিশু পার্ক। শীতের দাপট কিছুটা কমায় মেলায় দর্শনার্থীর সমাগম বেড়েছে।
সব বয়সের মানুষই ভীড় করছেন এ বিনোদন কেন্দ্রে। মেলায় সৌন্দর্য বর্ধক নানা উপকরণ উপভোগ্য হয়ে উঠেছে দর্শনার্থীদের কাছে। আর শিশুপার্কটি বিনোদনের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি ) মেলা প্রাঙ্গনে গিয়ে দেখে গেছে, বাংলাদেশ চায়না বাংলা ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের মূল ভবনের দক্ষিণ প্রান্তে বিনোদন জোন নামে একটি মিনি শিশু পার্ক স্থাপন করেছে। শিশুপার্কের মতোই বিনোদনের অনেক আয়োজনই আছে বানিজ্য মেলায়। পরিবারের বড়রা যখন ব্যস্ত কেনাকাটায় পার্কে তখন শিশুদের মাতামাতি।
মাসব্যাপী এ আয়োজনে শিশুদের হৈ-হুল্লোড় দেখে বোঝা যায় কতটা আনন্দিত তারা। মেলার এক কোনের বিনোদন পার্কটিতে ক্ষুদে বাহিনীর আনন্দ উল্লাসে উৎসাহ যোগাচ্ছেন তাদের অভিভাবকরাই।
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলাকে প্রাণবন্ত করতে রাখা হয়েছে শিশুদের বিনোদনে মিনি শিশুপার্ক।
কু ঝিকঝিক ট্রেন চলছে আর চরকি ঘুরছে, দোল খাচ্ছে নাগরদোলা। হানি সুইং, দোলনার পাশাপাশি, ভুতের বাড়ি, যাদু খেলা, হই-হুল্লোড় আর উচ্ছ্বাসে একটু বেশিই প্রাণবন্ত বাণিজ্য মেলার ছোট্ট এই শিশুপার্ক। মেলায় আসা শিশুরা এ সুযোগ একেবারেই হাতছাড়া করতে রাজি নন। মেলায় এসব রাইডের মাঝে ভুতের বাড়িতে ভিড় করছে তরুণ তরুনীরাও।
মেলার এ অস্থায়ী শিশু পার্কে এবার ১৫টি রাইডের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কেউ চাইলে ইলেকট্রিক সাম্পানে দোল খেতে পারেন। এই রাইডটির টিকিট মূল্য ১০০ টাকা। হেলিকপ্টার, ওয়ান্ডারফুল, সুইং চেয়ার, ভূতের বাড়ি, ঘোড়া, মেরি ঘোড়ায় চড়ে ঘুরতে পারবে। এ রাইডগুলোর সর্বিনম্ন টিকিটের মূল্য ৮০, সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা। পথশিশু ও প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য রয়েছে বিশেষ সুযোগ।
সরেজমিন দেখা যায়, এবার বাণিজ্য মেলার ২৯ তম আসরে শনিবার মেলার ১১ তম দিনও সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় শুক্রবারের জন সমাগম থেকে এর ক্রেতা দর্শনার্থীর উপস্থিতি ব্যতিক্রম ছিল না। বিকাল থেকেই দর্শনার্থীরা মেলায় আসতে শুরু করেন। সন্ধ্যার পর মেলায় দর্শনার্থীদের আগমন সবচেয়ে বেশি হয়। শিশু পার্কে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। নাগরদোলা, ম্যাজিক নৌকা, ট্রেনসহ বিভিন্ন রাইডে ছিল তাদের ভিড়। সব মিলিয়ে জমজমাট পরিবেশ বিরাজ করছিল শিশু পার্কে।
নরসিংদী থেকে পরিবার নিয়মেলায় ঘুরতে এসেছেন রায়হান মল্লিক। তিনি বলেন, আমার সাত বছরের ছেলে রিফাত মল্লিক বায়না ধরেছে ট্রেনে চড়বে। তার মা হাসনা হেনা সখের বসে ওঠালেন। বাণিজ্যমেলায় শিশু পার্ক পেয়ে ছেলে আমার ভেজায় খুশি। আমাদের কাছেও খুব ভালো লাগছে।
নাগরদোলায় চড়বে বলে বায়না ধরেছে শিশু নাফিজা । আবদার পূরণে বাবা-মা নিজেরাও সাথে চড়েছেন নাগর দোলায়। নাফিজার মা নাদিয়া আফরোজ জানান, ‘মেলায় শিশু পার্ক দেখে ও নাগর দোলায় উঠবেই। তাই আমরাও উঠালাম। মেলায় কেনাকাটার পাশাপাশি বাচ্চারা বিনোদন পাচ্ছে। আমার বাচ্চা রাইডসে উঠে বেশ খুশি।
বিনোদন জোন নামক শিশু পার্কে কর্মরত ম্যানেজার লিটন বলেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়াতে গতকাল ও আজ বিপুল জনসমাগম হয়েছে। আমাদের আয় রোজগারও ভালোই হয়েছে। আশা করি জানুয়ারির মাঝামাঝি মেলা পুরোদমে জমে উঠবে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সচিব ও বাণিজ্যমেলার পরিচালক বিবেক সরকার বলেন, মেলায় প্রতি বছরই শিশু পার্কের ব্যবস্থা রাখা হয়। যাতে শিশুরা মেলায় এসে আনন্দ করতে পারে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে বাণিজ্য মেলা কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। আজব এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। তবে জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মেলা পুরোদমে জমে উঠবে বলে আশা করছি।