দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় টানা দ্বিতীয় দিন শীর্ষ অবস্থানে উঠে এসেছে ঢাকা। সোমবার সকাল ৮টায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) ঢাকার স্কোর ছিল ২৬২।
বেলা ১২টার দিকে তালিকার শীর্ষ অবস্থানে চলে আসে ঢাকা, একিউআই মাত্রা নেমে আসে ২০৮-এ। এই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে চীনের উহান, সেখানে একিউআই মাত্রা ১৮৯। তৃতীয় অবস্থানে আছে চীনের রাজধানী শহর বেইজিং, একিউআই মাত্রা ১৮৫।
গতকালও রোববারও ঢাকা ছিল শীর্ষ অবস্থানে, মাত্রা ছিল ২৩৯। এদিন দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল চীনের শহর চ্যাংদু, একিউআই মাত্রা ছিল ২০০। তৃতীয় অবস্থানে ছিল ভারতের মুম্বাই, একিউআই মাত্রা ১৮৫।
বিশেষজ্ঞরা জানান, সাধারণত ছয় ধরনের পদার্থ এবং গ্যাসের কারণে দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়। এর মধ্যে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ধূলিকণা অর্থাৎ ‘পিএম (পার্টিকুলেটেড ম্যাটার) ২ দশমিক ৫’-কে ঢাকায় দূষণের জন্য বেশি দায়ী করা হয়। ক্ষতিকর ছয় ধরনের পদার্থের মধ্যে প্রথমেই আছে ‘পিএম ২ দশমিক ৫’ অথবা ২ দশমিক ৫ মাইক্রো গ্রাম সাইজের ক্ষুদ্র কণা। এরপর ‘পিএম-১০’ সবচেয়ে বেশি। বাকি চারটির মধ্যে আছে সালফার ডাইঅক্সাইড, নাইট্রোজেন, কার্বন মনোক্সাইড এবং সিসা। এই ছয় পদার্থ ও গ্যাসের ভগ্নাংশ গড় করেই বায়ুর সূচক নির্ধারণ করা হয়। সেই সূচককে বলা হয় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই)।
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে ঢাকা ও এর আশেপাশের এলাকায় চলছে অভিযান। ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তর রাজধানীর বড় সড়কগুলোতে পানি ছিটিয়ে ধুলা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘এটি পর্যাপ্ত নয়’।
এদিকে নির্মাণ কার্যক্রম সৃষ্ট বায়ুদূষণ, অবৈধ ইটভাটা, গাড়ির কালো ধোঁয়া বিশেষ করে বড় বড় নির্মাণ কার্যক্রমের দূষণের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান জোরদার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার।
দেশের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে ‘বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা-২২’ অনুসারে গঠিত বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির ১ম সভা গত ২ ফেব্রুয়ারি বিকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় রাস্তায় পানি ছেটানোসহ রাস্তার ধুলাবালি পরিষ্কারের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পৌরবর্জ্য পোড়ানোর বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশন নিয়মিত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। না ঢেকে খোলা ট্রাকে যাতে মাটি, বালি, ময়লা পরিবহন করতে না পারে সে বিষয়ে বিআরটিএ ও পুলিশ বিভাগ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বায়ুমানের তারতম্য নির্ধারণে একটি কারিগরি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, বায়ুদূষণকারী পোড়ানো ইটের বিকল্প ব্লক ইটকে সহজলভ্য ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য করণীয় নির্ধারণ বিষয়ে একটি সুপারিশমালা প্রণয়ন ও দাখিল করতে হবে। সকল মন্ত্রণালয়ের অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নকালে দূষণ নিয়ন্ত্রণে সকল সচিবকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ করা হয়।