ডিম বিক্রি হচ্ছে বছরের সবচেয়ে কম দামে

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন রিপোর্ট | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ১২ মাস আগে
সংগৃহীত ছবি

শীত আসার পর সবজির দাম কমার পাশাপাশি ডিম এবং গরুর মাংসের দামও কিছুটা কমেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে কমেছে মুরগির মাংসের দামও। এর মধ্যে এখন ডিম বিক্রি হচ্ছে বছরের সবচেয়ে কম দামে।

রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে প্রতি ডজন ফার্মের ডিম এখন ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে ডিমের ডজন ১২০ থেকে ১৩০ টাকা।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজার, বাড্ডা ও জোয়ারসাহারা বাজারে সবজি ও পেঁয়াজের দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় কম দামে বিক্রি হয়েছে। তবে চিনি, আটা-ময়দা ও ডালের দাম বাড়তি ছিল।

ঢাকার পাইকারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমানত উল্লাহ বলেন, ‘ডিমের দাম বর্তমানে কমে যে পর্যায়ে এসেছে, এর চেয়ে কমে গেলে খামারিদের ক্ষতি হবে। তাদেরও তো টিকে থাকতে হবে। বৃহস্পতিবার পাইকারিতে ১০০ ডিম বিক্রি করা হয়েছে ৮৫০ টাকায়। যা গত দুই-তিন সপ্তাহ আগেও এক হাজার টাকার ওপরে ছিল।’

দাম কমার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের দিকে ডিমের দাম কমে আসে। এ সময়ে শীতের সবজি বাজারে চলে আসায় কম দামে ক্রেতারা সবজি কিনতে পারে। এবারও তা-ই হয়েছে। ’ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বর্তমানে দেশে প্রতিদিন চার-সাড়ে চার কোটি ডিম উৎপাদন হচ্ছে।’

রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজারের খুচরা ডিম বিক্রেতা মো. রাজীব মিয়া বলেন, ‘ডিম এখন এই বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। খুচরায় প্রতি ডজন ডিম ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করছি। কেউ বেশি ডিম নিতে চাইলে ডজন ১১০ টাকাও রাখা হচ্ছে।’

কয়েকটি করপোরেট কম্পানি প্যাকেটজাত ডিমের দাম এখনো কমায়নি। আগের বাড়তি দামেই বিক্রি করছে।

সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির বৃহস্পতিবারের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে খুচরায় ডিমের দাম কমে এখন প্রতি হালি ৪০ থেকে ৪৩ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। মহাখালী কাঁচাবাজারে চায়ের দোকানি মো. সিরাজ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘বাসায় নিয়মিত ডিম রান্না হয়। যখন ডিমের ডজন ১৫০ টাকা হয়েছিল, তখন ডিম বাদ দিয়েছিলাম। দাম কমে যাওয়ায় এখন আবার খাচ্ছি।’

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাজারগুলোতে বাড়তি দামে বিক্রি হয়েছে চিনি, আটা-ময়দা ও ডাল। খোলা চিনি প্রতি কেজি ১৫০ টাকা, খোলা আটা প্রতি কেজি ৫০ টাকা, দুই কেজি ওজনের প্যাকেটজাত আটা ১৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। ময়দার দামও বেড়েছে। প্যাকেটজাত দুই কেজি ময়দা এখন ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। এক মাস আগে দাম ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা।

কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা বেড়ে চিকন মসুর ডাল ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে এবং মোটা মসুর ডাল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা কেজি।

সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি মানভেদে ১১০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতি কেজি মানভেদে ১০০ থেকে ১১০ টাকা। আদা প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা। দেশি রসুন কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা ও আমদানি করা রসুন ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

মুরগি ও মাংসের দাম কমেছে
মুরগির দাম কিছুটা কমে ব্রয়লার প্রতি কেজি ১৬৫ থেকে ১৭৫ টাকা ও সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। দাম কমে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগে গরুর মাংসের কেজি ছিল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা। তবে রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বর এলাকায় গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫৮০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

সবজির দাম কমতির দিকে
রাজধানীর বাজারগুলোতে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে। খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা, শিম ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন মানভেদে ৫০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। পটোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর ১০০ থেকে ১২০ টাকা, মুলা ও পেঁপে ৪০ টাকা ও নতুন আলু ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারে এখনো টমেটোর দাম বাড়তি। পাকা টমেটো প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা ও কাঁচা টমেটো ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।