রাত সাড়ে ৩টায় সংগীতশিল্পী ও গানবাংলা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কৌশিক হোসেন তাপসের ঘরের বাথরুমে লুকিয়েছিলেন ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী।
আর এই খবর প্রকাশ হয় নারী উদ্যোক্তা, গানবাংলা টেলিভিশন ও টিএম নেটওয়ার্কের চেয়ারপারসন ফারজানা মুন্নীর এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে।
গত ৪ নভেম্বর মধ্যরাতে এ স্ট্যাটাস দেওয়া হয়।
ফারজানা মুন্নির স্ট্যাটাসে বলা হয়, ‘তাপস ও বুবলীর মাঝে সম্পর্ক চলছে। বুবলী আমার পরিবার ধ্বংস করছে, যেভাবে করেছে অপু বিশ্বাসের জীবন। শাকিব খানকে ব্ল্যাকমেইল করে প্রেগন্যান্ট হয়েছেন, এখন তার টার্গেট তাপস। যদি আমার কিছু হয়, এর জন্য দায়ী থাকবেন তাপস ও বুবলী।’
পরে অবশ্য ফারজানা মুন্নির তরফ থেকে জানানো হয়, ফেসবুক আইডি হ্যাকারদের কবলে পড়েছিল। একইভাবে বুবলীর পক্ষ থেকেও তাই জানানো হয়। এ বিষয়টি অনেকে ধাপাচাপা পড়তেই শুক্রবার রাত থেকে ফেসবুকের কয়েকটি পেজে বুললী-তাপসের প্রেম নিয়ে ফারজানা ও চিত্র অপু বিশ্বাসের কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে।
আর অডিও থেকেই জানা গেল নতুন তথ্য, তা হলো— তাপস-বুবলীর প্রেম নিয়ে সেই পোস্টটি নিজেই দিয়েছিলেন মুন্নি। তার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়নি। অপু বিশ্বাসের সঙ্গে কথোপকথনের ফাঁস হওয়া একটি কল-রেকর্ডে নিজের মুখে সেটাই বলেছেন তিনি।
ফারজানা মুন্নি বলেন, ‘আমি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার পর তাপসের সঙ্গে আমার পরিবারের সবাই বসেছিলেন। দেখো অপু, আমি তো এখনো সংসার করি। তাপস তো এখনো আমার জামাই। তার পর যখন আমাকে বলল, এটা দাও (ফেসবুক আইডি হ্যাকের স্ট্যাটাস), তখন আমি এটা দিলাম। আমার কোনো কিছু হ্যাক হয় নাই, শুধু স্ট্যাটাসটা হ্যাক হইছে না, তাই না?’
যে রাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাসটি দিয়েছিলেন, তখন তাপসের সঙ্গে গানবাংলা টেলিভিশনের অফিসে একান্তে সময় কাটাচ্ছিলেন বলে জানালেন মুন্নি।
তিনি বলেন, ‘এই তাপসকে আমি চিনতেছি না। তাপস যদি এই মেয়েকে বলে এখন সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবা, সে কথামতো দাঁড়িয়ে থাকবে। তুমি গানবাংলার সিকিউরিটি গার্ডকে জিজ্ঞেস করো; জানতে পারেব ও (বুবলী) কখন ঢোকে কখন বের হয়! তুমি জানো না কী হচ্ছে দুজনের! আমি তোমাকে (অপু বিশ্বাস) বোঝাতে পারব না।
‘না পেরে শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে তাপসকে ভিডিওকল করে বলছি, বুবলীকে দাও। আমি জানি ওখানে বুবলী আছে। বাথরুমে লুকিয়ে ছিল সে (বুবলী)। সে বাথরুম থেকে বের হলো। তার পর আমি বললাম, বুবলী তোমার লজ্জা লাগে না? তুমি একটা মেয়ে না? তোমার খারাপ লাগে না? ও (বুবলী) আমার কথা শুনে হাসল। ওই হাসিটা দেখে আমি সহ্য করতে পারিনি। তখনই তো আমি ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছি।’
অপুর সঙ্গে কথায় কথায় শাকিব খানের প্রসঙ্গও টানেন মুন্নি। তার দাবি, শাকিবের ওপর প্রতিশোধ নিতে তাপসকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন বুবলী।
তার কথায়, ‘বুবলী শাকিবকে ধ্বংস করবে। ও (বুবলী) তাকে কন্ট্রোল করতে পারছে না। রিভেঞ্জ নিতে চায়। এ জন্য তাপসকে ব্যবহার করতেছে। তাপস এটা বুঝতেছে না। তবে ও একদিন বুঝবে।’
বুবলীর মতো খারাপ মেয়ে কখনো দেখেননি বলেও সেই অডিওতে বলতে শোনা যায় মুন্নিকে। তিনি বলেন, ‘আমি এ রকম খারাপ মানুষ আমার লাইফে দেখি নাই। আমি তো একটা মেয়ে। আমার যথেষ্ট বয়স হয়েছে। তোমরা তো ছোট। দুনিয়ায় অনেক কিছু দেখে আজকে এতদূর আসছি। যে কোনো সংসার ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য এই মেয়ে এনাফ। এই বিচার কে করবে জানি না। ওর বিচার আল্লাহ করবে।’
বুবলী দিন-রাত গানবাংলা টেলিভিশনের অফিসে পড়ে থাকেন। চ্যানেলটির নিজস্ব গাড়িতে তাকে আনা-নেওয়া করা হয় বলেও তাতে জানান মুন্নি।
এ নিয়ে মুন্নি বলেন, ‘বুবলী কোনো দিন বাসায় থাকে না। কোনো সাংবাদিক দিয়ে ওর বাসার দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করাও যে, ও কয়টার সময় বের হয় আর কয়টার সময় বাসায় আসে! গানবাংলার গাড়ি কয়টায় ঢোকে, কয়টায় নামিয়ে দিয়ে যায়! আমি হা হয়ে থাকি। কী হচ্ছে এসব! একটা মেয়ে সারাক্ষণ তাপসের সঙ্গে থাকে। ওর মতো ভালো মেয়ে নাকি তাপস কখনো দেখেনি।’
তিনি বলেন, ‘বুবলীকে গানবাংলার গাড়ি নিয়ে আসে। আবার দিয়ে আসে। ও তাপসকে বোঝাতে চাচ্ছে, শাকিব আর তার পরিবার তাদের মিলিয়ে দিতে চাচ্ছে, কিন্তু সে সেটা চাচ্ছে না। এখন শুধু তাপসের বুদ্ধিতে চলবে। দেখো না চুপ করে আছে। কোনো স্টেটমেন্ট দিচ্ছে না।’
সেই কথোপকথনে মুন্নি দাবি করেন, বুবলী এখন তাপসের নির্দেশনায় চলছে। সম্প্রতি শাকিব-অপুর ছেলে জয়ের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে একটা ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন বুবলী। সেটাও নাকি তাপসের পরামর্শে।
বুবলী ছেলেদের কথার জাদুতে মোহিত করে ফেলেন বলে মনে করেন মুন্নি। নিজে নিজে গল্প বানিয়ে তাপসকে আয়ত্তে নিয়ে এসেছেন।
১৩ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের ফোনালাপটি কয়েকটি ফেসবুক পেজে দেখা গেছে। তবে কথোপকথনের অপু বিশ্বাসের কথাগুলো কেটে দেওয়া হয়েছে। শুধু ফারজানা মুন্নির কণ্ঠ শোনা গেছে। তবে তিনি যে অপু বিশ্বাসের সঙ্গেই কথা বলছিলেন, সেটা বোঝা যায় কথার মাঝখানে তার নাম ধরে ডাকা থেকে।
তবে এ নিয়ে জানতে শনিবার সকাল থেকে অপু বিশ্বাসের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
এদিকে ভাইরাল এই কল-রেকর্ডের বিষয়ে জানতে গানবাংলা টিভির জনসংযোগ কর্মকর্তা রুদ্র হকের ফোনে কল করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।