২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংস্করণ:
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ব্যাটার হিসেবে ‘টাইমড আউট’ হয়েছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। দিল্লিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টাইমড আউট দেখানো হয়ে তাকে। এরপর থেকেই ক্রিকেট বিশ্ব দুইভাগে বিভক্ত।
কেউ কেউ এই আউটের আবেদন করায় বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের পক্ষ নিচ্ছেন, কেউবা আবার ক্রিকেটীয় চেতনার কথা বলে ম্যাথুসের পাশে দাঁড়াচ্ছেন।
এবার এ ঘটনায় সাকিবের বিপক্ষে চলে গেলেন খোদ বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড। টাইমড আউটের ব্যাপারটা মোটেও পছন্দ হয়নি কিংবদন্তি এই দক্ষিণ আফ্রিকান ফাস্ট বোলারের। ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকব্লগ ডটনেটে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড স্পষ্ট করেই বলেছেন, ‘(ক্রিকেট মাঠে) আমি এমন কিছু দেখতে চাই না’
ঘটনাটা দেখার পর ডোনাল্ডের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া কী ছিল? এমন প্রশ্নে দক্ষিণ আফ্রিকান এই কিংবদন্তি বলেছেন, ‘আমার মন বলছিল মাঠে ঢুকে বলি, যা হয়েছে যথেষ্ট হয়েছে, আমরা এর পক্ষে না। আমরা এমন দল না যে এর পক্ষ নেব। আমি শুধু সেখানে গিয়ে বলতে চাচ্ছিলাম, “যথেষ্ট হয়েছে আর না”। এটা আমার তাৎক্ষণিক ভাবনা।’
ডোনাল্ড আরও বলেন, ‘আমি তো প্রধান কোচ না, আমি দায়িত্বে নেই। আমি মারাই এরাসমাসকে বলতে দেখেছি, ‘‘অ্যাঞ্জেলো, দয়া করে তুমি এখন মাঠ ছাড়তে পারো।’ এরপর দেখেছি, অ্যাঞ্জেলো হেলমেট তুলে নিল, এরপর বিজ্ঞাপনী বোর্ডের দিকে ছুড়ে মারল। আসলে, আমি বিস্মিত হয়েছি।’
পুরো ব্যাপারটাকে ক্রিকেটীয় চেতনার বিরোধীও মনে করেন ডোনাল্ড, ‘আপনি এই খেলার প্রতি, একে অন্যের প্রতি সম্মান ও মর্যাদার কথা বলুন। ক্রিকেটের চেতনার কথা বলুন। আমি এমন জিনিস দেখতে চাই না। এটি আসলে আমার ব্যাপার। আমার কথা হচ্ছে, এটা হতে পারে না। এটা হবে না। কিন্তু আমরা সেটিই দেখেছি। জানি না, আমার মন সঙ্গে সঙ্গেই বলছিল, এটা হতে পারে না। এটা একেবারেই হতে পারে না!’
এই ঘটনায় বাংলাদেশের জয়ের মাহাত্ম্য কিছুটা হলেও কমে গেছে বলে মনে করেন ডোনাল্ড, ‘আমার মনে হয় এটার (টাইমড আউট) কারণে বাংলাদেশের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ম্লান হয়ে গেছে। সত্যি বলতে আমি এখনো একটু হতভম্ব। ব্যক্তি ও ক্রিকেটার হিসেবে এটি আসলে আমার মূল্যবোধের ব্যাপার। বয়সভিত্তিক দল, ক্লাব ক্রিকেট, রাজ্য ক্রিকেট, আন্তর্জাতিক, আমার গোটা জীবনে কখনোই, কখনোই এমন কিছু দেখিনি নিশ্চিতভাবেই।’
ম্যাথুস যে রকম পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন, এ রকম ঘটনা যে যেকারও সঙ্গেই ঘটতে পারে, সেটিও মনে করিয়ে দিতে গিয়ে একটি উদাহরণও টেনেছেন ডোনাল্ড, ‘শরীফুলের একটি ঘটনা বলতে পারি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে ভুল জুতো পরে মাঠে ঢুকেছিল সে। সাদা ওপর সবুজ জুতো পরে এসেছিল। বুট জোড়া পাল্টাতে তার সময় লেগেছে এবং নির্ধারিত সময় সে পেরিয়েও গিয়েছিল। এবার এই একইরকম ঘটনায় কিছুই বলা হয়নি। একটি শব্দও না।’
পুরো ঘটনায় যে ডোনাল্ড প্রচণ্ড হতাশ, তা বোঝা গেল তার পরের কথাতেও। তিনি বলেন, ‘এটা (টাইমড আউট) দেখতে খুব হতাশার লেগেছে। মানলাম সাকিব সুযোগ নিয়েছে। সে বলেছে, ‘আমি জেতার জন্য যা যা সম্ভব করেছি। ’ আপনি আমার কথা শুনেই বুঝতে পারছেন, ব্যাপারটা আমার অপছন্দ, এমন কিছু আমি পছন্দ করি না। এমন কিছু ঘটতে দেখা সত্যিই খুব কঠিন। শ্রীলঙ্কার অন্যতম সেরা খেলোয়াড় কোনো বল না খেলেই আউট হয়ে চলে গেল! আমার মনোভাব এটাই।’
