হুজুর ডেকে সাজানো বিয়ের অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হল শাখা ছাত্রলীগ এক নেতার বিরুদ্ধে। চার মাস সংসারের পর তার স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত খারাপ আচরণ ও রাজনৈতিক ভয়ভীতি প্রদর্শন করতেন তিনি৷ এক পর্যায়ে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।
সোমবার (২ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ছাত্রলীগ নেতার স্ত্রী পরিচয় দেওয়া ভুক্তভোগী ওই নারী রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম মমিনুল ইসলাম মমিন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।
এছাড়া তিনি সৈয়দ আমির আলী হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি এবং ফিশারিজ বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তার বাড়ি নড়াইল জেলায়।
অভিযোগপত্রে ওই নারী উল্লেখ করেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যলয়ের ছাত্র মমিনুল ইসলাম একটা হুজুরকে ডেকে মিথ্যা বিয়ের নাটক করে। স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে আমার সঙ্গে বসবাস করে। বিগত চারমাস আমি তার সাথে সংসার করেছি। কিন্তু কিছুদিন ধরে তার আচার-ব্যবহার খুবই খারাপ দেখি এবং আমার সাথে সে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এই সময় আমার পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নাই। আমার বাবা পঙ্গু, তার সাথে আমার যোগাযোগ নাই। আমার মা হার্ট অ্যাটাকের রোগী। আমার কোনো অভিভাবক নাই। সেই সুযোগে সে আমাকে রাজনৈতিক ভয় দেখায়। আমি আপনার কাছে সাহায্য চাচ্ছি। দয়া করে আমাকে সাহায্য করুন। ‘
অভিযোগের বিষয়ে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী জানান, গত ছয় মাস আগে মমিনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়৷ এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক হয়৷ পরে চার মাস আগে একজন হুজুর ডেকে কালিমা পড়িয়ে মৌখিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কাজলা এলাকার একটি বাসা ভাড়া নিয়ে একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন তারা। কিন্তু গত কয়েক দিন আগে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করার কথা বললে মমিন তার সঙ্গে খারাপ আচরণ ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে সে ওই মৌখিক বিয়ের কথা বললে তিনি সেটা অস্বীকার করেন৷
তিনি আরও জানান, প্রেমের সম্পর্কের পর তারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় একসাথে ঘুরতেও গিয়েছেন। কিন্তু এখন বিয়ের কথা বললে সে ‘ছাত্রলীগ নেতা’ বলে প্রভাব খাটিয়ে হুমকি দেন। তিন দিন ধরে মমিন তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন। নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি৷ বিষয়টি নিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন এবং থানায়তেও জানান। এছাড়া তিনি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন৷
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা মমিনুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, একটা অভিযোগপত্র পেয়েছি। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলে তারা যে সুপারিশ দিবে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷