সদ্য পাস হওয়া সাইবার নিরাপত্তা বিল-২০২৩ এ ৪টি জামিনের অযোগ্য ধারা রাখা হয়েছে। এ আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা এক কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
একনজরে দেখে নিন জামিন অযোগ্য কোন ধারায় কী শাস্তি:
জামিন অযোগ্য ১৭ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি প্রাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে (ক) বেআইনি প্রবেশ করেন; বা (খ) বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে ঐ কাঠামোর ক্ষতিসাধন বা বিনষ্ট বা অকার্যকর করেন অথবা করার চেষ্টা করেন, তাহলে ঐ ব্যক্তির অনুরূপ কাজ হবে একটি অপরাধ। (ক) ধারায় কোনো ব্যক্তি কোনো অপরাধ করলে তিনি সর্বোচ্চ ৩ বছরের কারাদণ্ড বা ২৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
(খ) ধারার অধীনে কোনো অপরাধ করলে সর্বোচ্চ ৬ বছরের কারাদণ্ড বা ১ কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ’
জামিন অযোগ্য ১৯ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি (ক) কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক থেকে কোনো উপাত্ত, উপাত্ত ভাণ্ডার তথ্য বা তার উদ্ধৃতাংশ সংগ্রহ করেন, বা স্থানান্তরযোগ্য জমাকৃত তথ্য-উপাত্তসহ ঐ কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কের তথ্য সংগ্রহ করেন বা কোনো উপাত্তের অনুলিপি বা অংশ বিশেষ সংগ্রহ করেন; (খ) কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোনো ধরনের সংক্রামক, ম্যালওয়্যার বা ক্ষতিকর সফটওয়্যার প্রবেশ করান বা প্রবেশ করানোর চেষ্টা করেন; (গ) ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, উপাত্ত বা কম্পিউটারের উপাত্ত-ভাণ্ডারের ক্ষতিসাধন করেন বা ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করেন বা ঐ কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে রক্ষিত অন্য কোনো প্রোগ্রামের ক্ষতিসাধন করেন বা করার চেষ্টা করেন; (ঘ) কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে কোনো বৈধ বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে কোনো উপায়ে প্রবেশ করতে বাধা দেন বা চেষ্টা করেন; (ঙ) ইচ্ছাকৃতভাবে প্রেরক বা গ্রাহকের অনুমতি ব্যতীত, কোনো পণ্য বা সেবা বিপণনের উদ্দেশ্যে স্প্যাম উৎপাদন বা বাজারজাত করেন বা চেষ্টা করেন বা অযাচিত ইলেক্ট্রনিক মেইল প্রেরণ করেন; (চ) কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপ বা কারসাজি করে কোনো ব্যক্তির সেবাগ্রহণ বা ধার্যকৃত চার্জ অন্যের হিসাবে জমা করেন বা চেষ্টা করেন, তাহলে ঐ ব্যক্তির অনুরূপ কাহ হবে একটি অপরাধ। ’ এই ধারায় সংঘটিত অপরাধের শাস্তি সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড।
জামিন অযোগ্য ২৭ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি (ক) রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা, নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করা এবং জনগণ বা উহার কোনো অংশের মধ্যে ভয়ভীতি সঞ্চার করিবার অভিপ্রায়ে কোনো কম্পিউটার বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেট নেটওয়ার্কে বৈধ প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন বা বেআইনি প্রবেশ করেন বা চেষ্টা করেন; (খ) কোনো ডিজিটাল ডিভাইসে এরূপ দূষণ সৃষ্টি করেন বা ম্যালওয়ার প্রবেশ করান যার ফলে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে বা গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হন বা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়; (গ) জনসাধারণের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ ও সেবা ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংসসাধন করেন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোর উপর বিরূপ প্রভাব বিস্তার করেন; (ঘ) ইচ্ছাকৃত কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক, সংরক্ষিত কোনো তথ্য-উপাত্ত বা কম্পিউটার ডাটাবেজে প্রবেশ বা অনুপ্রবেশ করেন বা এরূপ কোনো সংরক্ষিত তথ্য-উপাত্ত বা কম্পিউটার ডাটাবেজে প্রবেশ করেন যা বৈদেশিক কোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বা জনশৃংখলা পরিপন্থী কোনো কাজে ব্যবহৃত হতে পারে অথবা বৈদেশিক কোনো রাষ্ট্র বা কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সুবিধার্থে ব্যবহার করা হতে পারে, তা সাইবার সন্ত্রাস অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। কোনো ব্যক্তি এ ধারার অধীনে কোনো অপরাধ করলে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা ১ কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ’
জামিন অযোগ্য ৩৩ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি হ্যাকিং করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এজন্য তিনি সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা ১ কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এই ধারায় ‘হ্যাকিং’-এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, (ক) কম্পিউটার তথ্য ভাণ্ডারের কোনো তথ্য বিনাশ, বাতিল, পরিবর্তন বা মূল্য বা উপযোগিতা হ্রাসকরণ বা অন্য কোনোভাবে ক্ষতিসাধন; (খ) নিজ মালিকানা বা দখলবিহীন কোনো কম্পিউটার, সার্ভার, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশের মাধ্যমে ক্ষতিসাধন।’