যেভাবে আন্দোলন এগিয়ে নিতে চায় বিএনপি

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন রিপোর্ট
প্রকাশ: ১ বছর আগে
ঢাকায় বিএনপির গণমিছিল। ফাইল ফটো

সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে অক্টোবরে চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়ার কথা বিএনপির। এর আগে পূর্বপ্রস্তুতিমূলক বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তৃণমূলকে চাঙ্গা রাখতে চান দলের নীতিনির্ধারকরা। এরই অংশ হিসেবে চলতি মাসে জেলা পর্যায়ে রোডমার্চ কিংবা জনসভার মতো কর্মসূচি ঘোষণার কথা ভাবছেন তারা।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের এক বৈঠকে এমন পরিকল্পনার কথা উঠে এসেছে। বিষয়টি প্রস্তাব আকারে পাঠানো হয়েছে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে। তার অনুমোদন পাওয়ার পর যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র জোট ও দলগুলোর সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করবে বিএনপি।

দলটির সংশ্লিষ্ট একাধিক নেতা জানান, সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হলেও এ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। ওই বৈঠকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সম্ভাব্য কর্মসূচির প্রস্তাব তৈরি করে তার কাছে পাঠানোর দায়িত্ব দেন স্থায়ী কমিটির সদস্যদের। বিএনপির স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য চিকিৎসা ও অন্যান্য প্রয়োজনে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। যারা ঢাকায় রয়েছেন; তারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশ অনুযায়ী মঙ্গলবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সম্ভাব্য কর্মসূচি নিয়ে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, মঙ্গলবারের বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান প্রমুখ। তাদের আলোচনার ভিত্তিতে চলতি মাসে জেলায় জেলায় রোডমার্চ কিংবা ঢাকাসহ বৃহত্তর ১৯ জেলায় জনসভা আয়োজনের বিষয়টি উঠে আসে। এরই মধ্যে এই দুটি কর্মসূচির পরিকল্পনা উল্লেখ করে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে তারেক রহমানের কাছে। তিনি স্থায়ী কমিটির সঙ্গে ফের বৈঠক করে কিংবা এককভাবে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবেন। তারপর এ বিষয়ে মিত্রদের মতামত নেওয়া হবে।

নতুন কর্মসূচি নিয়ে বিএনপির অন্যতম মিত্র জোট- গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলছেন, তারা চলতি মাসে আরও কিছু কর্মসূচি নেওয়ার পক্ষে। এজন্য ছাত্র ও শ্রমিক কনভেনশনসহ আরও কিছু কর্মসূচির প্রস্তাব দেওয়া হবে বিএনপিকে। আগামী শনিবার বিএনপির সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠকে এসব প্রস্তাব দেওয়া হবে।

এদিকে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ‘মিথ্যা’ মামলায় সাজা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করে এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে জনসভা করবে বিএনপি। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। এ কর্মসূচি পালনের জন্য যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদেরও প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি।

উত্তরের দুই বিভাগে রোডমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা

এক দফা দাবির আন্দোলনের অংশ হিসেবে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে সম্মিলিতভাবে রোডমার্চ করবে বিএনপির তিন সংগঠন—যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। ১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বর এ কর্মসূচি পালন করা হবে। এ কর্মসূচিতে বিএনপি মহাসচিব ছাড়াও দলের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত থাকবেন।

বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তিন সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের উপস্থিতিতে যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

তিনি জানান, ১৬ সেপ্টেম্বর রংপুর থেকে দিনাজপুর পর্যন্ত এবং ১৭ সেপ্টেম্বর বগুড়া থেকে রাজশাহী পর্যন্ত রোডমার্চ কর্মসূচি পালন করা হবে। প্রতিটি রোডমার্চের শুরু ও শেষে দুটি জনসভা হবে এবং পথে আরও কিছু পথসভা হবে। গাড়ি, মোটরসাইকেলসহ যে যার মতো করে এই রোডমার্চ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন।

যুবদল সভাপতি আরও জানান, আপাতত দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হলেও পর্যায়ক্রমে আরও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।