পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক:
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বড় সংখ্যায় শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিটি ‘চতুর্থ গণনিয়োগ বিজ্ঞপ্তি’ নামে পরিচিত হবে। এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবিতে প্রতীকী অনশন করেছেন নিবন্ধনধারী প্রার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকাল ১০টায় রাজধানীর ইস্কাটনে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি চলে। এতে কয়েক হাজার প্রার্থীরা অংশগ্রহণ করে।
এরপর দুপুর ১২টায় এনটিআরসিএ সচিব মো. ওবায়েদুর রহমান গিয়ে অনশনকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি নভেম্বর মাসের মধ্যেই প্রকাশ হবে। তিনি বলেন, আজকালের মধ্যে মাউশি থেকে একটা চিঠি পাবো। তারপর অফিসিয়াল কাজ করতে কয়েকদিন সময় লাগবে। এছাড়া প্রতিদিনই আমরা প্রতিনিধি মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছি কাজের ফলাফল জানতে।
অনশনের ব্যানারে লেখা চলতি মাসের মধ্যে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। ইনশাআল্লাহ এটা খুব দ্রুতই হবে। চলতি মাসের ভেতরেই হবে। এবার আবেদনে অনেক পরিবর্তন হয়েছে, তাই আগের মতো কোনো ভুল হবে না- যোগ করেন তিনি।’
বিশেষ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে এনটিআরসিএ সচিব বলেন, বিশেষের জন্য আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছি। এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করছি। যদি কালকে আমরা অনুমোদন পাই তবে এক সপ্তাহের ভেতরেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।
তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এমপিওভুক্ত ও নন-এমপিও স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে ৩১ হাজার ১০১, মাদ্রাসা, কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনায় ২০ হাজার ৯৯৬ এবং সংরক্ষিত ২ হাজার ২০৭ জনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার কথা ছিল।
এর আগে দুই ঘন্টাব্যাপী প্রতীকী অনশনে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ১-১৬তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের হাজারো প্রার্থীরা অংশ নেয়। ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তির লক্ষ্যে এ প্রতীকী অনশনে অংশ নিয়ে তারা বলেন, বারবারই একই দাবি নিয়ে আমাদের আন্দোলন করতে হচ্ছে সেটা ভাবতেও খুব কষ্ট হয়। আমাদের অনেকের সংসার ভেঙে গেছে, কারো বয়স বেড়ে গেছে অপেক্ষা শেষ হচ্ছে না।
ঝিনাইদহে থেকে আসা ইমরান খান বলেন, আমরা প্রথম থেকেই লক্ষ্য করেছি এনটিআরসিএ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর চুড়ান্ত নিয়োগে একটা বড় সময় নেন। আমরা যেহেতু চার বছর সময় নষ্ট করেছি, জীবন থেকে হারিয়েছি তাই আকৃতি জানাই সবগুলো যেনো দ্রুততার সঙ্গে হয়।
বরগুনা থেকে আসা শাহিন শুভ বলেন, আর কত অপেক্ষা। করোনার দোহাই দিয়ে অনেক সময় নিয়েছে। এবার দাবি আদায় না হলে আমরা এক চুলও ছাড় দিবো না। আহাজারি করেই বলেন, আমার বিয়ে হচ্ছে না। পরিবার থেকে আড়চোখে দেখে সবাই। পাবনাতে বাড়ি আমার, আর কত সুস্থ থাকবো। মনে হচ্ছে পাগলা গারদে চলে যাই। জীবনের সব আশা হারিয়ে ফেলছি।
চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি এম এ আলম বলেন, আমরা নিবন্ধনধারীরা সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হয়েছি। অনেকের বয়স শেষ হয়ে গেছে, অনেকের শেষ হওয়ার পথে। আমরা হতাশায় দিন পার করছি। এই বিষয়ে দ্রুত সমাধান হোক।
উল্লেখ্য, গেলো বছরের ৩০ মার্চ তৃতীয় ধাপে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ৫৪ হাজার ৩০৪ জন শিক্ষক নিয়োগে গণনিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। ওই বিজ্ঞপ্তির আওতায় ফল প্রকাশ হয় গত বছরের ১৫ জুলাই। সেখান থেকে ৩৪ হাজার ৭৩ জন শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।