প্রিয় পাঠকের কাছে আজকে বিশেষ বিশেষ কিছু দোয়া সম্পর্কে তুলে ধরলাম।
কুরআন-সুন্নাহ থেকে নির্বাচন করে ব্যাপক অর্থ বোধক এবং একান্ত প্রয়োজনীয় কতিপয় দুয়া এবং সেগুলোর অর্থ (বেশ কিছু দুয়ার বাংলা উচ্চারণ সহ) প্রদান করা হল। এ দুয়াগুলো আমরা আল্লাহ তায়ালার নিকট মুনাজাত করার সময়, সকাল- সন্ধ্যায় কিংবা অন্য যে কোন সময় পাঠ করতে পারি। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাওফীক দান করুন, আল্লাহুম্মা আমিন।
১) رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাঁও ওয়া ফিল্ আখিরাতি হাসানাতাঁও ওয়াকিনা আযাবান্নার। অর্থঃ “হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদিগকে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ দান কর এবং আমাদেরকে দোযখের আযাব হতে রক্ষা কর।” (সূরা বাকারা- ২০১)
২) رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنْتَ مَوْلَانَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ “হে আমাদের প্রতিপালক! যদি আমাদের ভ্রম হয় অথবা ত্রুটি হয় তজ্জন্যে আমাদেরকে ধৃত করবেন না, হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর যেরূপ গুরুভার অর্পণ করেছিলেন, আমাদের উপর তদ্রূপ ভার অর্পণ করবেন না; হে আমাদের প্রভু, যা আমাদের শক্তির অতীত ঐরূপ ভার বহনে আমাদেরকে বাধ্য করবেন না এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন ও আমাদেরকে মার্জনা করুন এবং আমাদের উপর দয়া করুন; আপনিই আমাদের অভিভাবক। অতএব কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন। (সূরা বাকারা- ২৮৬)
৩) رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا রাব্বানা হাবলানা মিন আযওয়াজিনা ওয়া র্যুরিয়্যাতিনা কুররাতা আয়ুনিন্। ওয়াজ্ আলনা লিল মুাত্তাকীনা ইমামা। অর্থঃ “হে আমাদের পরওয়ারদেগার! আমাদের স্ত্রীদের ও সন্তানদেরকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা স্বরূপ করে দাও এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শ স্বরূপ করে দাও।” (সূরা ফুরক্বান- ৭৪)
৪) رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِنْ لَمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنْ الْخَاسِرِينَ রাব্বানা যালামনা আনফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানা কূনান্না মিনাল খাসেরীন। অর্থঃ “হে আমাদের প্রভু! আমরা আমাদের নফসের উপর যুলুম করেছি, তুমি যদি আমাদের ক্ষমা না কর, আমাদের প্রতি করুণা না কর তবে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।” (সূরা আ‘রাফ- ২৩)
৫) رَبَّنَا اصْرِفْ عَنَّا عَذَابَ جَهَنَّمَ إِنَّ عَذَابَهَا كَانَ غَرَامًا إنَّهاَ ساَءَتْ مُسْتَقَرًّ وَمُقاَماً রাব্বানাছরিফ ‘আন্না আযাবা জাহান্নামা, ইন্না আযাবাহা কানা গারামা, ইন্নাহা সাআত মুস্তার্ক্বারাও ওয়া মুকামা। অর্থঃ হে আমাদের রব! আমাদের থেকে জাহান্নামের শাস্তি হটিয়ে দাও। নিশ্চয় এর শাস্তি নিশ্চিত বিনাশ। বসবাস ও আবাসস্থল হিসেবে তা কত নিকৃষ্ট জায়গা। (সূরা ফুরক্বান- ৬৫)
৬) رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ. রাব্বানা লা তুযিগ্ কুলূবানা বা‘দা ইয হাদায়তানা, ওয়া হাব লানা মিন লাদুনকা রাহমাতান ইন্নাকা আনতাল ওয়াহ্হাব। অর্থ: “হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের হেদায়াত দানের পর আমাদের হৃদয়কে বক্র করে দিও না। আর তোমার পক্ষ থেকে আমাদেরকে রহমত দান কর। নিশ্চয় তুমিই অধিক দানকারী।” (সূরা আল ইমরান- ৮)
৭) رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلًّا لِلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ “হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে এবং ঈমানে অগ্রণী আমাদের ভ্রাতাদেরকে ক্ষমা করুন। আর মুমিনদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে হিংসা-বিদ্বেষ রাখবেন না। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি তো দয়াদ্র, পরম দয়ালু।” (সূরা হাশর- ১০)
৮) رَبَّناَ زِدْناَ عِلْماً وَألْحِقْناَ بَالصاَّلِحِيْنَ “হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের জ্ঞান বৃদ্ধি করে দাও এবং আমাদেরকে নেককারদের অন্তর্ভূক্ত কর।”
৯) اللهمَّ إنِّيْ أعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذاَبِ جَهَنَّمَ، وَمِنْ عَذاَبِ الْقَبْرِ، وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْياَ وَالْمَمَاتِ، وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيْحِ الدَّجاَّلِ “হে আল্লাহ্! নিশ্চয় আমি তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি জাহান্নামের শাস্তি থেকে, কবরের আযাব থেকে, জীবন-মৃত্যুর ফিৎনা থেকে এবং মাসীহ দাজ্জালের ফিৎনা থেকে।”
১০) اللهمَّ إنِّيْ أعُوْذُ بِكَ مِنْ الْهَمِّ وَالْحُزْنِ، وأعُوْذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسْلِ، وَمِنَ الْبُخْلِ وَالْجُبْنِ، وأعُوْذُ بِكَ مِنْ غَلَبَةِ الدَّيْنِ، وَقَهْرِ الرِّجاَلِ “হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনা থেকে, তোমার কাছে আশ্রয় কামনা করছি অপরাগতা ও অলসতা থেকে, কাপুরুষতা ও কৃপণতা থেকে এবং আশ্রয় চাচ্ছি ঋণের বোঝা ও মানুষের বলপ্রয়োগ থেকে। ”
১১) اللهمَّ إنِّيْ أعُوْذُ بِكَ أنْ أرَدَّ إلىَ أرْذَلِ الْعُمْرِ. “হে আল্লাহ্! তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি অতিবার্ধক্যে পৌঁছা থেকে।”
১২) اللهم إنَّا نَسْأَلُكَ خَشْيَتَكَ فِيْ الْغَيْبِ وَالشَّهاَدَةِ، وَنَسْأَلُكَ كَلِمَةَ الْحَقِّ فِيْ الرِّضاَ وَالْغَضَبِ، وَنَسْأَلُكَ الْقَصْدَ فِيْ الْغِنَى وَالْفَقْرِ، وَنَسْأَلُكَ نَعِيْماً لاَ يَنْفَدُ، وَنَسْأَلُكَ قُرَّةَ عَيْنٍ لاَ تَنْقَطِعْ، وَنَسْأَلُكَ الرِّضاَ بَعْدَ الْقَضَاءِ، وَنَسْألُكَ بَرْدَ الْعَيْشِ بَعْدَ الْمَوْتِ، ونسألُكَ لَذَّةَ النَّظَرِ إلى وَجْهِكَ الْكَرِيْمِ، وَالشَّوْقَ إلىَ لِقاَئِكَ، فِيْ غَيْرِ ضَراَّءَ مَضَرَّةٍ وَلاَ فِتْنَةٍ مُضِلَّةٍ “হে আল্লাহ্! গোপনে ও প্রকাশ্যে সর্বাবস্থায় তোমাকে যেন ভয় করতে পারি। সন্তুষ্টি এবং ক্রোধের অবস্থায় সত্য কথা বলার তাওফীক চাই। তোমার কাছে কামনা করি অভাব ও প্রাচুর্যের মধ্যপন্থা। তোমার কাছে প্রার্থনা করি এমন নেআমতের যা কখনো শেষ হবে না, প্রার্থনা করছি এমন চক্ষু শীতলকারী বিষয় যা বিচ্ছন্ন হবে না। তক্বদীরের উপর সন্তুষ্ট হওয়ার তাওফীক চাই। মৃত্যুর পর সুখী জীবন চাই এবং কামনা করি তোমার সম্মানিত চেহারার প্রতি দৃষ্টিপাত করার আনন্দ, তোমার সক্ষাত লাভের আকর্ষণ যাতে কোন ক্ষতি নেই, নেই কোন বিভ্রান্তিকারী ফিৎনা।”
১৩) اللهم زَيِّناَّ بِزِيْنَةِ الْإيْمَانِ، وَاجْعَلْناَ هُداَةً مُهْتَدِيْنَ “হে আল্লাহ্ আমাদেরকে ঈমানের সাজে সজ্জিত কর। আর আমাদেরকে কর হেদায়াতকারী যার দ্বারা অন্যরা হেদায়াত লাভ করতে পারে।”
১৪) اللهم إناَّ نَسْأَلُكَ الْهُدَى وَالتُّقَى وَالْعَفاَفَ وَالْغِنىَ “হে আল্লাহ্! আমরা চাই তোমার কাছে হোদয়াত, তাক্বওয়া, পবিত্রতা ও অভাবমুক্তি।”
১৫) اللهم آتِ أنْفُسَناَ تَقْوَاهاَ، وَزَكِّهاَ أنْتَ خَيْرُ مَنْ زَكاَّهاَ، أنْتَ وَلِيُّهاَوَمَوْلاَهاَ “হে আল্লাহ্ আমাদের আত্মাকে দান কর তাক্বওয়া, তাকে পবিত্র কর। তুমিই তাকে উত্তম পবিত্রকারী। তুমিই তার বন্ধু, অভিভাবক।”
১৬) اللهمَّ فَقِّهْناَ فِيْ الدِّيْنِ “হে আল্লাহ্! আমাদেরকে দ্বীনের বিষয়ে গভীর জ্ঞান দান কর।”
১৭) اللهمَّ إناَّ نَعُوْذُ بِكَ مِنْ عِلْمٍ لاَ يَنْفَعُ، وَقَلْبٍ لاَ يَخْشَعُ، وَنَفْسٍ لاَ تَشْبَعٍ، وَدَعْوَةٍ لاَ يُسْتَجاَبُ لَهاَ “হে আল্লাহ্! আমরা তোমার কাছে আশ্রয় কামনা করি এমন জ্ঞান থেকে যা কোন উপকার দেয় না, এমন হৃদয় থেকে যা ভীত হয় না, এমন আত্মা থেকে যা পরিতৃপ্ত হয় না এবং এমন দুআ থেকে যা কবুল করা হয় না।”
১৮) اللهمَّ إناَّ نَعُوْذُ بِكَ مِنْ زَوَالِ نِعْمَتِكَ وَتَحَوُّلِ عاَفِيَتِكَ، وَفُجاَءَةِ نِقْمَتِكَ، وَجَمِيْعِ سَخَطِكَ হে আল্লাহ্! তোমার কাছে আশ্রয় কামনা করছি- তোমার নেআমতের সমাপ্তি থেকে, তোমার ক্ষমা বন্ধ হয়ে যাওয়া থেকে, তোমার পক্ষ থেকে হঠাৎ শাস্তি আসা থেকে এবং তোমার যাবতীয় ক্রোধ থেকে।
১৯) اللهمَّ أصْلِحْ لَناَ دِيْنَناَ الذِّيْ هُوَ عِصْمَةُ أمْرِناَ، وَأصْلِحْ لَناَ دُنْياَناَ التِّيْ فِيْهاَ مَعاَشُناَ، وَأصْلِحْ لَناَ آخِرَتَناَ التِّيْ إلَيْهاَ مَعاَدُناَ، وَاجْعَلِ الْحَياَةَ زِياَدَةً لَناَ فِيْ كُلِّ خَيْرٍ، وَاجْعَلِ الْمَوْتَ رَاحَةً لَناَ مِنْ كُلِّ شَرٍّ হে আল্লাহ্! তুমি আমাদের দ্বীনকে সংশোধন করে দাও যা আমাদের সকল বিষয়কে রক্ষাকারী। সংশোধন কর আমাদের দুনিয়াকে যাতে রয়েছে আমাদের জীবিকা। সংশোধন কর আমাদের আখেরাত যা আমাদের শেষ ঠিকানা। সবধরণের কল্যাণে আমাদের জীবনকে সমৃদ্ধ করে দাও। আর মৃত্যুকে কর সবধরণের অকল্যাণ থেকে নিস্তার স্বরূপ।
২০) اللهمَّ ألْهِمْناَ رُشْدَناَ وَقِناَ شَرَّ أنْفُسِناَ হে আল্লাহ্! আমাদেরকে সঠিক পথের তাওফীক দাও এবং আমাদের বাঁচাও স্বীয় আত্মার অনিষ্ট থেকে।’
২১) اللهمَّ رَحْمَتَكَ نَرْجُوْا، فَلاَ تَكِلْناَ إلىَ أنْفُسِناَ طَرْفَةَ عَيْنٍ، وأصْلِحْ لَناَ شَأْنَناَ كُلَّهُ، لاَ إلَهَ إلاَّ أنْتَ হে আল্লাহ্! তোমার করুণা কামনা করি, সুতরাং এক পলকের জন্য আমাদেরকে নিজের উপর ছেড়ে দিও না। আমাদের প্রতিটি বিষয় সংশোধন করে দাও। তুমি ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই।
২২) اللهم إناَّ نَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْراَتِ، وَتَرْكِ الْمُنْكَراَتِ، وَحُبَّ الْمَساَكِيْنَ، وَأنْ تَغْفِرَ لَناَ وَتَرْحَمَناَ، وَإذاَ أرَدْتَ بِعِباَدِكَ فِتْنَةً فَتَوَفِّناَ إلَيْكَ غَيْرَ مَفْتُوْنِيْنَ হে আল্লাহ্! আমরা তোমার কাছে প্রার্থনা করি ভাল কাজ করা, খারাপ কাজ পরিত্যাগ করা ও মিসকীনদেরকে ভালবাসার তাওফীক। আর তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর ও দয়া কর। তোমার বান্দাদের যদি ফিৎনায় ফেলতে চাও তবে তা থেকে মুক্তি প্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত করে আমাদের মৃত্যু দাও।
২৩) اللهمَّ نَسْأَلُكَ حُبَّكَ، وَحُبَّ مَنْ يُحِبُّكَ، وَحُبَّ الْعَمَلِ الذِّيْ يُقَرِّبُناَ إلَيْكَ হে আল্লাহ্! তোমার কাছে প্রার্থনা করি তোমার ভালবাসা, তোমাকে যে ভালবাসে তার ভালবাসা এবং এমন আমলের প্রতি ভালবাসা যা তোমার নৈকট্য প্রদান করবে।
২৪) اللهمَّ حَبِّبْ إلَيْناَ الْإيْماَنَ وَزَيِّنْهُ فِيْ قُلُوْبِناَ، وَكَرِّهْ إلَيْناَ الْكُفْرَ وَالْفُسُوْقَ وَالْعِصْياَنَ، وَاجْعَلْناَ مِنَ الرَّاشِدِيْنَ হে আল্লাহ্! ঈমানকে আমাদের কাছে প্রিয় বস্তু কর, তা আমাদের অন্তরে সুসজ্জিত কর। আর কুফরী, ফাসেকী এবং নাফারমানীকে আমদের কাছে ঘৃণিত বিষয় কর।
২৫) اللهمَّ إناَّ نَعُوْذُ بِكَ مِنْ جَهْدِ الْبَلاَءِ، وَدَرْكِ الشَّقاَءِ، وَسُوْءِ الْقَضاَءِ، وَشَماَتَةِ الْأَعْداَءِ “হে আল্লাহ্! আশ্রয় প্রার্থনা করি অসহনীয় কঠিন বিপদ থেকে, দুর্ভাগ্যবান হওয়া থেকে, মন্দ ফায়সালা থেকে এবং (আমার বিপদে) শত্রুদের হাঁসা-হাঁসি থেকে।”
২৬) اللهمَّ اقْسِمْ لَناَ مِنْ خَشْيَتِكَ ماَ تَحُوْلُ بِهِ بَيْنَناَ وَبَيْنَ مَعْصِيَتِكَ، وَمِنْ طاَعَتِكَ ماَ تُبَلِّغُناَ بِهِ جَنَّتَكَ، وَمِنَ الْيَقِيْنِ ماَ تُهَوِّنُ بِهِ عَلَيْناَ مَصاَئِبَ الدُّنْياَ، وَمَتِّعْناَ بِأَسْماَعِناَ وَأَبْصاَرِناَ وَقُوَّاتِناَ ماَ أحْيَيْتَناَ، واَجْعَلْهاَ الواَرِثَ مِناَّ، واَجْعَلْ ثَأْرَناَ عَلىَ مَنْ ظَلَمَناَ، وَانْصُرْناَ عَلىَ مَنْ عاَداَناَ، وَلاَ تَجْعَلِ الدُّنْياَ أَكْبَرَ هَمِّناَ، وَلاَ تَجْعَلْ مُصِيْبَتَناَ فِيْ دِيْنِناَ، وَلاَ تُسِلِّطْ عَلَيْناَ بِذُنُوْبِناَ مَنْ لاَ يَخاَفُكَ وَلاَ يَرْحَمُناَ “হে আল্লাহ্! তোমার ভয় থেকে কিছু অংশ আমাদের মাঝে বণ্টন করে দাও- যা তোমার নাফারমানী ও আমাদের মাঝে বাঁধাদানকারী হবে। তোমার আনুগত্য থেকে এমন কিছু দান কর- যা তোমার জান্নাতে পৌঁছে দিবে, এমন বিশ্বাস দান কর- যার দ্বারা আমাদের উপর দুনিয়ার সব ধরণের বিপদ হালকা অনুভব হবে। আমাদেরকে যত দিন জীবিতি রাখবে ততদিন আমাদের কান, চোখ ও শক্তি দ্বারা আমাদেরকে উপকৃত কর এবং আমাদের মধ্যে থেকে এগুলোর উত্তরাধিকারী বানাও। আমাদের উপর যারা অত্যাচার করে তাদের থেকে প্রতিশোধ নাও এবং শত্রুদের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য কর। দুনিয়াকে আমাদের চিন্তা-ফিকিরের বস্তু বানিয়ে দিও না, দ্বীনী বিষয়ে আমাদেরকে বিপদে ফেলিও না। আমাদের পাপের কারণে এমন ব্যক্তিকে আমাদের কর্তৃত্বকারী করো না যে তোমাকে ভয় করে না এবং আমাদের উপর দয়া করে না।”
২৭) اللهمَّ إناَّ نَسْأَلُكَ مُوْجِباَتِ رَحْمَتِكَ وَعَزاَئِمَ مَغْفِرَتِكَ، وَالْغَنِيْمَةِ مِنْ كُلِّ بِرٍّ، وَالسَّلاَمَةِ مِنْ كُلِّ شَرٍّ، وَالْفَوْزَ باِلْجَنَّةِ، وَالنَّجاَةَ مِنْ النَّارِ হে আল্লাহ্! আমরা তোমার কাছে প্রার্থনা করি, তোমার রহমতের আবশ্যকতা, তোমার ক্ষমার দৃঢ়তা, প্রত্যেকটি সৎকাজের গণীমত, প্রত্যেক অমঙ্গল থেকে নিরাপত্তা, জান্নাতের বিজয় এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি।
২৮) اللهمَّ مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قُلُوْبَناَ عَلىَ دِيْنِكَ- اللهمَّ مُصَرِّفَ الْقُـلُوْبِ صَرِّفْ قُلُوْبَناَ عَلىَ طاَعَتِكَ অর্থ: “হে অন্তকরণের পরিবর্তনকারী আল্লাহ্! আমাদের অন্তরকে তোমার দ্বীনের উপর অটল অবিচল রাখ। হে হৃদয় সমূহের পরিবর্তনকারী আল্লাহ্! আমাদের হৃদয়গুলোকে তোমার আনুগত্যের দিকে ফিরিয়ে দাও।”
২৯) اللهمَّ أعِنَّا عَلىَ ذِكْرِكَ وَشُكْرِكَ وَحُسْنِ عِباَدَتِكَ হে আল্লাহ্! আমাদেরকে সাহায্য কর তোমার যিকির করতে, তোমার কৃতজ্ঞতা করতে এবং সুন্দরভাবে তোমার ইবাদত করতে।
৩০) اللهمَّ أحْسِنْ عاَقِبَتَناَ فِيْ الأُمُوْرِ كُلِّهاَ، وَأَجِرْناَ مِنْ خِزْيِ الدُّنْياَ وَعَذاَبِ الآخِرَةِ “হে আল্লাহ্! আমাদের প্রতিটি বিষয়ের শেষ পরিণতি সুন্দর কর। আর আমাদেরকে দুনিয়ার লাঞ্ছনা ও আখেরাতের শাস্তি থেকে আশ্রয় দান কর।
৩১) اللهمَّ لاَ تَدَعْ لَناَ ذَنْباً إلاَّ غَفَرْتَهُ، وَلاَ عَيْباً إلاَّ سَتَرْتَهُ، وَلاَ هَمّاً إلاَّ فَرَّجْتَهُ، وَلاَ دَيْناً إلاَّ قَضَيْتَهُ، وَلاَ حاَجَةً مِنْ حَواَئِجِ الدُّنْياَ وَالآخِرَةِ هِيَ لَكَ رَضًى وَلَناَ صَلاَحٌ إلاَّ قَضَيْتَهاَ ياَ أرْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ “হে আল্লাহ্! আমাদের প্রত্যেকটি গুনাহ ক্ষমা করে দাও প্রত্যেকটি ত্রুটি গোপন করে দাও. প্রত্যেকটি দুশ্চিন্তা দূর করে দাও, সব ঋণ পরিশোধ করে দাও। আর দুনিয়া বা আখেরাতের যে কোন প্রয়োজন যাতে তোমার সন্তুষ্টি রয়েছে ও আমাদের তাতে কল্যাণ রয়েছে তা আমাদের জন্য ফায়সালা করে দাও হে দয়াশীলদের মধ্যে সর্বাধিক দয়াবান।
৩২) اللهمَّ إناَّ نَسْأَلُكَ مِنَ الْخَيْرِ كُلِّهِ عاَجِلِهِ وَآجِلِهِ، ماَ عَلِمْناَ مِنْهُ وَماَ لَمْ نَعْلَمْ، وَنَعُوْذُ بِكَ مِنَ الشَّرِّ كُلِّهِ عاَجِلِهِ وَآجِلِهِ، ماَ عَلِمْناَ مِنْهُ وَماَ لَمْ نَعْلَمْ আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা মিনাল খাইরে কুল্লিহি আজেলিহি ওয়া আজিলিহ্ মা আলিমনা মিনহু অমা লাম না’লাম। ওয়া নাঊযুবিকা মিনাশ্ শাররি কুল্লিহি আ’জেলিহি ওয়া আজিলিহ, মা আলিমনা মিনহু অমা লাম না’লাম। অর্থঃ হে আল্লাহ আমরা আপনার কাছে বর্তমান ও ভবিষ্যতের যাবতীয় কল্যাণ- যা আমরা জানি এবং জানি না- তা সবই প্রার্থনা করছি। বর্তমান ও ভবিষ্যতের যাবতীয় অকল্যাণ- যা আমরা জানি এবং জানি না- তার সবগুলো থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
৩৩)اللهمَّ صَلِّ عَلىَ مُحَمَّدٍ وَعَلىَ آلِ مُحَمَّدٍ كَماَ صَلَّيْتَ عَلىَ إبْراَهِيْمَ وَعَلىَ آلِ إبْراَهِيْمَ، إنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ، وَباَرِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَماَ باَرَكْتَ عَلىَ إبْراَهِيْمَ وَعَلىَ آلِ إبْراَهِيْمَ، إنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ আল্লাহুম্মা ছাল্লি আ’লা মুহাম্মাদ ওয়া আ’লা আলি মুহাম্মাদ। কামা ছাল্লায়তা আলা ইবরাহীমা ওয়া আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। ওয়া বারেক আলা মুহাম্মাদ ওয়া আ’লা আলি মুহাম্মাদ কামা বারাকতা আলা ইবরাহীমা ওয়া আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে আমল করার তাওফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন।
লেখক: হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট।