মো. মতিউর রহমান সরদার:
মহান আল্লাহপাক যত প্রকারের পেশার মানুষ দুনিয়ার বুকে প্রেরণ করেছেন, তাদের মাঝে অন্যতম সেবক শ্রেণির এবং বিশেষ আলোকিত পেশার ও দায়িত্ব পালনের মানুষ হচ্ছেন- বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ও ধর্মের গণমাধ্যম পেশায় নিয়োজিত মানুষজন ও গণবান্ধব এবং গণমাধ্যমের মালিক-সম্পাদক- প্রকাশক-লেখক, গবেষক-সাংবাদিক-কলামিষ্ট, কবি-সাহিত্যিক-ছড়াকার। উক্ত মহান পেশার আলোকিত মানুষজন সমন্বয়ের ভিত্তিতে প্রতিদিন মানুষের ও সৃষ্টির কল্যাণে সত্য তথ্য প্রকাশ করেন এবং নিরলসভাবে লিখে যান কাগজের পাতা ভরে। কিন্ত তাদের অনেকেরই অনেক খবর রয়েই যায় অপ্রকাশ এবং কাগজে লেখার বাহিরে।
সকলের খবর প্রতিদিন আসে না কাগজের পাতা ভরে।তবুও তাঁরা লেখার মাঝে ত্যাগের বিনিময় অবদান রেখেই চলছেন দুনিয়া জুড়ে। কাগজের পাতা ভরে লিখে যান এবং দৃশ্যে দেখিয়ে দেন মঙ্গলময় কাজের ও বিশ্বের ভারসাম্যতা ধরে রাখার মহান লক্ষ্য সামনে উপস্থিত রাখার মাধ্যমে।মুহুর্তের খবর মুহুর্তের ভিতরে ছড়িয়ে দেয় বিশ্ব বাজারে। সে কারণেই বিশ্ব বাজার আলোর মুখ দেখতে পারে,তা নাহলে বিশ্ব ডুবে যেতো আধাঁরে। বিশ্বের গণমাধ্যমের মালিক-সম্পাদক-প্রকাশক-লেখক-গবেষক ও কলামিষ্ট আছেন, যাঁরা মহান আল্লাহপাকের দখলে থেকে এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রেমিক হয়ে, পৃথিবীর বুকে কল্যাণকর কাজে লেখা ও প্রকাশের মাধ্যমে, মানুষ ও সৃষ্টির কল্যাণে অবদান রাখার জন্য নিয়োজিত থাকবেনই। তারা সুবিধা ও অসুবিধার দিকে না তাকিয়ে নিরলসভাবে কাজ করেই যাচ্ছেন।ঐসব আলোকিত জগতের মানুষ বিশ্বাস করেন-মহান আল্লাহপাক, তাদেরকে এই জগতের মাধ্যমে ভালো কাজ করার জন্য দুনিয়ার বুকে প্রেরণ করেছেন এবং তাদের জন্য পরবর্তিতে ভালো ফসল ভোগ করার সুযোগ মহান স্রষ্টার হাতে রেখেছেন। সুতরাং ন্যায়ের উপরে থেকেই পেশাগত দায়িত্ব পালনে সক্রীয় রয়েছেন। এর মাধ্যমে হক পথে যে উপার্জন আসে, সে উপর্জনের উপরে খুশি থেকেই দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করেই যাচ্ছেন।কাজ করতে গিয়ে কেউ প্রাণ হারাচ্ছেন কিংবা হুমকির মাঝে প্রতিদিন জীবন যাপন করছেন।তারা মনে প্রাণে এবং একান্তভাবেই বিশ্বাস করেন যে, উল্লেখিত পেশার সাথে সংশ্লিষ্টদের উপরে-মহান আল্লাহপাক বিশেষ গুরু দায়িত্ব অর্পণ করেছেন বলেই দুনিয়ার বুকে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই তারা অবশ্যই লোভ-ক্ষোভ,সুবিধা-অসুবিধার উর্ধ্বে থেকে মহান পেশার মানদন্ড বজায় রেখে প্রতিদিন সু-সংবাদ ও দুঃসংবাদ পরিবেশন করার ভিত্তিতে গুরু দায়িত্বের হক আদায় করেন।
বাংলাদেশেও গণমাধ্যম জগতের অনেক সম্পাদক-প্রকাশক-লেখক-গবেষক ও কলামিষ্ট আছেন, যারা অতীতেও ঝুঁকি নিয়ে, জীবন দিয়ে বিশ্বময় দেশ ও জাতির স্বার্থের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন। দেখুন-সারা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন প্রকারের ক্ষতিকর ও মঙ্গলময় অনেক কর্মকান্ড প্রতিদিন বাস্তবায়ন হচ্ছে। সেগুলো কিন্ত গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিগণ বিশ্ববাসীর নজরে এনে অবদান রাখছেন। সেসব সংবাদ দেখে ও পড়ে প্রতিটি মানুষ ভালো-মন্দের হিসেব করতে ও পথ চলতে পারছেন।
অন্যদিকে বিশ্বের কোন কোন গহিন জংগলে কতো জাতের-নামের ও রঙ্গের জীব-জানোয়ার-পশু,পাখি বসবাস করছে এবং তাদের জীবন যাপন সম্পর্কে সরাসরিভাবে দৃশ্যে এনে দেখার সুযোগ করে দিচ্ছেন, যা আলোকিত গণমাধ্যমের কম অবদান নয়।এমনকি মহাসাগর-সাগর ও নদীর ভিতরে যেসকল মাছসহ সামূদ্রীক জীব বসবাস করে, তাদের জীবনযাপন ও আচরণ কেমন হয়, তাও গণমাধ্যম দেখিয়ে, মহান স্রষ্টার সৃষ্টি দেখার এবং তাঁর শক্তি নিয়ে চিন্তা বা গবেষণা করার সুযোগ করে দিচ্ছেন। এর ফলে মানুষ গবেষণার প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন।
উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত এবং সৃষ্টির শ্রেষ্ট জীব মানুষের দাবীদার, তাদের মধ্য থেকেও কেউ নিকৃষ্টতম অমানুষের কাজ করে-কেউ আবার মানুষের কাজ করে, মানুষের মান-সন্মান বজায় রাখে, তাও গণমাধ্যম বান্ধব দেখিয়ে থাকেন। সুতরাং গণমাধ্যম গণমানুষের পক্ষে কাজ করে। কোন কোন অমানুষের হাত থেকে কোন কোন মানুষ-মানুষের প্রাণ বাঁচিয়ে থাকেন। এমনকি মানুষসহ জীব-জানোয়ারের হাত থেকে, জীব-জানোয়ার ও মানুষের প্রাণ রক্ষা করে থাকে। এছাড়াও সমূদ্রের মাছ ও ভয়ংকর প্রাণির মুখ থেকে, অনেক মাছ ও জলজ জীবজন্তু এবং মানুষের প্রাণ ও সাগরের মাছ এবং জীবের প্রাণ রক্ষা করে থাকে। সুতরাং গণমাধ্যম অনেকভাবে অবদান রেখে যাচ্ছেন।আলোকিত গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ মানুষের মত প্রকাশের ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে সুযোগ-সুবিধার দরজা উম্মুক্ত রেখেছেন।
বিশ্বের কিছু সংখ্যক সুবিধাবাদীদের জন্যই আলোকিত গণমাধ্যম ব্যক্তিগণ যথাযথভাবে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে পারেন না।অনেক গণমাধ্যম সম্পাদক-প্রকাশক আছেন, যাদের ব্যাংক একাউন্ট আছে এবং থাকবে,যা অত্যন্ত স্বাভাবিক এবং আইনের বাধ্যবাধকতার বিষয়। কিন্ত অস্বাভাবিক বিষয় হলো কেউ ব্যাংকে লিখিত দিয়েছেন,জীবনে ব্যাংকের টাকার সুদ গ্রহণ করবেন না। আবার অনেক সাংবাদিকের ব্যাংক একাউন্টই নেই ও থাকলেও টাকা নেই এবং শূন্যের উপরেই ভাসমান জীবন যাপন। যাই হোক যার যার ধর্মীয় চেতনার আলোকে দেশ ও বিদেশের অনেক গণমাধ্যমের মানুষ জীবন যাপন করেন, যা কেউ জানি, কেউ জানি না।তাই না জেনে কাউকে মন্তব্য করি না এবং করা উচিৎ বলে মনে করি না।অনেকে সেই আদর্শ মেনে চলেন।
শুনা কথায় মন্তব্য করা সহজ, কিন্ত বাস্তবতা জানা বড় কঠিন বিষয়। যাই হোক এই সকল সম্পাদক ও প্রকাশকদের স্টাফ ও সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক এবং লেখকও নীতি-আদর্শবান হয়ে থাকেন।তবে তাদের জীবন কাটে অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে,যাদের সংবাদ সকলে রাখেন না এবং বাস্তবতা জানেন না,আর কাগজের পাতায় সব জীবনী আসে না।অনেক লেখক ও সাংবাদিক দেখেছি, যারা ব্যাক্তিগত প্রয়োজনীয় টাকা ব্যয় করে, কম্পিউটারে কম্পোজ করার বিল পরিশোধ করেছেন এবং সকল পত্রিকায় প্রেরণ করেছেন এবং এভাবেই কল্যাণকর কাজে অবদান রেখেছেন। তারা দেশ, জাতি ও বিশ্ব মানব সমাজের জন্য মঙ্গলময় কাজে ব্যাক্তিগত অর্থ ব্যয় করে থাকেন।
গুটিকয়েক হলুদ সাংবাদিকের জন্য সাংবাদিক মহল নিয়ে সমালোচনা করা অন্যায়।অনেক ত্যাগী মালিক-সম্পাদক, প্রকাশক-লেখক, গবেষক, সাংবাদিক ও কলামিষ্ট বিশ্ব থেকে শেষ হওয়ার নয় এবং শেষ হবে না।হয়তো প্রতিদিন সংখ্যা কমে যাবে এবং তিলে-তিলে নিঃশেষ হয়ে এক সময় দুনিয়ার মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে বিদায় নিবেন, কিন্ত কর্মগুণে বেঁচে থাকবেন। যাঁরা খেয়ে-না খেয়ে,রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে-জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন, এরকম জানা-শুনা, দেখা কাউকে প্রশ্ন করা হলে-উত্তরে যে দামী কথাগুলো বলেছেন। বলেছেন-ভালো কোন কাজে অবদান রাখতে হলে, অবশ্যই ত্যাগ স্বীকার ও ব্যয় করতে হয়।তাছাড়া কি পরবর্তিতে লাভের আশা করা যায়? দুনিয়ার বুকে স্থায়ীভাবে থাকাও সম্ভব নয়!
মহান এই পেশার সাথে যাঁরাই জড়িত আছেন, তাদের দায়বদ্ধতা অন্যান্য পেশার মানুষের ও নেতৃত্বের চেয়ে অনেকগুণে বেশি।আরো বলেন-আমার লেখা সংবাদ বা কোন কলমের লেখা পড়ার পরে একটি ব্যাক্যও যদি দেশ-জাতি, সমাজ, মানুষের কাছে আমলের হিসেবে গণ্য হয়, সেখানেই আমাদের আলোকিত গণমাধ্যমের লাভ রয়েছে। তিনি শুধু ধর্মের হিসেবই করবেন না, তিনি কর্মের হিসেবও ছেড়ে দিবেন না। তাছাড়া সবসময় নগদে লাভের হিসাব করলেই হবে না, বাকীর ফলও পরে পাওয়া যাবে, সে হিসাবও করতে হবে এবং পেশাগত দায়িত্বের হকও আদায় করতে হবে। কাজ করতে হবে, তাকে রাজী-খুশি করার জন্য, যিনি জীবনকে করবেন ধন্য।
ডাক-ঢোল পিটিয়ে এবং মাইকিং না করে অনেকেই নিরবে, এভাবেই কাজ ও সহযোগিতা করে যান, যাদের খবর কাগজের পাতায় আসে না। অনেক কাগজের পাতা ভরে যায় মরনের পরে এবং পরিবারের উন্নয়নে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন, এগিয়ে আসেন, তাও মরনের পরে। কিন্ত জীদ্দশায় কেউ কাউকে জানতে-বুঝে-বিশ্বাস করতে চায় না, সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন না, যা সেই শ্রেনীর সম্পাদক ও প্রকাশক, লেখক এবং সাংবাদিকদের জন্য বড় ব্যাথা। যাঁরা বাস্তবতার আলোকে কাজ করেন,তারা পরিবারকে সময় দিতে পারেন না, খোঁজ-খবর রাখতে পারেন না, দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে পারেন না এবং জীবন গোছানো হয় না, জীবনের গতি কোথায় যাবে,সে হিসেব করার সুযোগও পায় না।
আমরা নিজের বিষয়কে খুব গভীরভাবে হিসেব করি, অন্যকে বুঝতে চাই না।পৃথিবীর কোন স্বাদ ভোগ করার ভাগ্য এই পেশার উক্ত শ্রেনীর সম্পাদক-প্রকাশক,লেখক ও সাংবাদিকদের হয় না।অনেক গণমাধ্যমের মালিক-সম্পাদক ও প্রকাশক অনুমতি নিয়েছেন দেশ-জাতির কল্যাণে কাজ করার লক্ষ্য সামনে রেখে।মহান এ পেশার কাজে পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁরা ভালো উতসাহ পেয়েছেন।গণমাধ্যম জগতের মাধ্যম থেকে হক পথে যে আয়-উপার্জন হয়, সে টাকা দিয়ে স্টাফসহ লেখক ও সাংবাদিকদের পিছনে ব্যয় করে থাকেন। যদি কোন মালিক-সম্পাদক ও প্রকাশকের অন্য কোন বৈধ ব্যবসা থেকে থাকে,তবে সেই ব্যবসার আয়-উপার্জন দিয়ে,পরিবার নিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপনের উপরে খুশি থাকেন।অনেকে মহান এই পেশাকে বেছে নিয়েছেন সম্পাদনা-প্রকাশনা ও লেখার মাঝে কল্যাণকর কাজে অবদান রাখার জন্য,আর এভাবেই তিনি মানুষের কর্মের মাঝে, মানুষের জীবনকে করেন ধন্য।অনেক মালিক স্টাফদের বেতন ঠিকমতো দিতে পারেন না এবং পারেন না,অনেক লেখককে সন্মানিত করতে।
কিন্ত কথার মাধ্যমেও মানুষকে খুশি করতে পারেন,তাতেও অনেক স্টাফ ও লেখক খুশি থাকেন এবং মহান বিধাতার প্রতি আনুগত্য স্বীকার করেই লেখার কাজে নিয়োজিত থাকেন,আর দেরিতে হলেও,স্টাফদের বেতন মালিক পরিশোধ করেন।সম্পাদনা-প্রকাশনা এবং লেখার জগতের চেয়ে,আমার দৃষ্টিতে ভালো কোন জগত দেখিনা,এ জগত যেন এক মহাসাগর।এই গণমাধ্যম জগতের বাসিন্দা বানিয়ে কাজ করার জন্য স্বাধীনতা দান করেছেন মহান বিধাতা।গণমাধ্যম জগতে কাজ করে কাজ শেষ করার ভাগ্য করো হবেনা।কিন্ত পৃথিবীর বুকে আমরা বিবেককে অন্ধ করে-কেউ-কেউ খর্ব করছি,মহান পেশার স্বাধীনতা।দেশের রাজনৈতিক মতানৈক্যের ও প্রতিহিংসার শিকার হয়ে অনেকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।তাদের মধ্য থেকেও মহান পেশার এই জগতে প্রবেশ করেছেন সত্যকে মানুষের সামনে হাজির করার উদ্দেশ্য নিয়ে।রাজনৈতিক জগত ত্যাগ করে,অনেক আলোকিত মানুষ প্রবেশ করেছেন,সম্পাদনা-প্রকাশনা ও লেখারমতো আলোকিত স্বাধীন জগতে।এই আলোকিত জগতের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করার মাধ্যমে প্রশান্তি পাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে প্রবেশ করেছেন,কিন্ত প্রশান্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং ব্যাথা অনুভব করছেন।
এই জগতে কেউ আসেন দেওয়ার জন্য এবং কেউ আসেন সীমাহীন উপার্জন করে নেওয়ার জন্য ও নিয়েছেন,যার প্রমানও আছে।তারা প্রয়োজনীয় স্তর হাতে রেখে চলে,সুতরাং তাদেরকে কে কি বলে?তাদেরকে কিছু বলার এবং কঠিন বিচারের আওতায় নেওয়ার জায়গা কি আছে?গণমাধ্যমের মাধ্যমে যাঁরা দেওয়ার জন্য আসেন,তারা এপারে না হলেও,পরপারের স্থায়ী জীবনকে ধন্য করে নিবেন এবং সেই বিশ্বাস নিয়ে আমলের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন এবং প্রতিদিন কোন না কোনভাবে দেশ-জাতি ও বিশ্বকে ভালো ফসল দিচ্ছেন।যাঁরা বিভিন্নভাবে শুধুই নেওয়ার জন্য আসেন,তারা পরপারে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকাভূক্ত হবে,তাতে কোন সন্ধেহ নেই।এই জগতে কেউ আসেন আমিরের অবস্থান ও অবস্থা নিয়ে।তারা এজগতে এসে এবং দিয়ে কেউ ফকিরের অবস্থা ও অবস্থানে চলে যান,কিন্ত পেশার ও মানব জগতকে দিয়ে যান।কেউ ফকিরের অবস্থা ও অবস্থান নিয়ে এবং ভালো কাজ করার অঙ্গীকার করে এই আলোর জগতে প্রবেশ করেন।প্রবেশ করার পরে অনেকেই অঙ্গীকারের স্থানে ঠিক থাকতে পারেন না।
কেউ সৃষ্টি করে ক্ষতিকর চক্র এবং ভালো,মন্দ সব পথেই আয়-উপার্জনের পথ বের করে।দেশ ও জাতির কল্যাণের পক্ষে উল্লেখযোগ্য কাজ না করে নিজের ও পরিবারের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সবরকমের অন্যায় কাজ করে।সে কর্মের প্রভাব দেশ-জাতি এবং সমাজের উপরেই পরে।তখন মহান পেশার মান নিয়ে প্রশ্ন আসে?গণমাধ্যমসহ সমাজ সচেতন মানুষ তাদেরকে ভালো দৃষ্টিতে দেখেন না,যা কেউ বুঝে,কেউ বুঝি না।অনেকের কর্ম দেখেই সমাজের অনেক ভালো ছেলে ও মেয়েরাও কু-পরিকল্পনা,কৌশল শিখে এবং ঐ পথে প্রবেশ করে।রাজনৈতিক অনেক কু-শিক্ষার ভয়াবহ ক্ষতিকর প্রভাব মহান পেশার গণমাধ্যমেও ছড়িয়েছে,যা পরিত্যাগ করা দরকার।অনেক পত্রিকার মালিক-সম্পাদক-প্রকাশক ঠিকমতো স্টাফ এবং সাংবাদিকদের বেতন দিতে পারেন না ন্যায় পথে থাকার কারনে।
গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট কেউ জীবিকার প্রয়োজনে সামান্য অন্যায় করার পরে দুঃখ করে বলে আমাদেরকে চলতে হবে বলে বাধ্য হয়ে কিছু অন্যায় করি। তাদের কথা শুনে অনেক কথার উত্তর দেওয়া যায় না!সাংবাদিকদের সুখ-দুঃখ নিয়ে কথা বলার ও সহযোগিতা করার জন্য সাংবাদিক ইউনিয়ন আছে এবং আছেন নেতা।তারা যদি একটু ত্যাগ স্বীকার করে ভালো উদ্যোগ গ্রহন করেন,তবে গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্টদের জীবনে ভালো পরিবর্তন আসতে পারে এবং সুযোগ পাবে পেশার মান ও স্বচ্ছতা বজায় রেখে কাজ করার।সাংবাদিকদের সুখ-দুঃখ নিয়ে আলাপ-আলোচনা হলেও,উন্নয়নের মুখ সকল সাংবাদিক দেখার সুযোগ পায় না,সামান্য হলেও রয়েছে বৈষম্যতা।সৎ-নিরীহ,নীতি ও আদর্শবান কতোজন সাধারণ সাংবাদিক বাস্তবে উপকৃত হয়,সে কথার উত্তর নেই,কিন্ত নেতা বানানো এবং নেতার উন্নয়নের জন্য অনেকেই যুগ-যুগ ধরে ব্যাবহার হই,এছাড়া আর উত্তর কই!গণতান্ত্রিক নিয়ম-নীতি ও কর্মযোগ্যতার মূল্যায়ন এবং সেই হিসেবে নির্ধারিত সময় সংগঠনের নির্বাচন হওয়া গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টদের দীর্ঘদিনের আশা।আলোকিত গণমাধ্যমের মালিক ও সাংবাদিক নেতাদের সমন্বয় হলে এবং সমস্যা বুঝে সহায়তায় এগিয়ে এলেই ভালো আশাগুলো পুরন হবে।এর ফলে কোন সাংবাদিক অদক্ষ থাকবে না এবং অসহায় রবে না ও বিপদগামী পথে পা বাড়াবে না।যারা ভালো পথে কাজ করতে চায়,তাদেরকে যথাস্থানে সুযোগ দেওয়া উচিৎ।
পেশাগত দায়িত্বের কাজ না করে নেতা হওয়ার ও উপাধী পাওয়াসহ সুবিধা পাওয়ার পথ বন্ধ হওয়া দরকার।তাতে পেশাদারদের মূল্যায়ন হবে এবং কাজ করে নেতা হওয়ার প্রতি আগ্রহী হবে।কাজ না করে নেতা হবে আর বসে বসে চেয়ার গরম করবে-টেবিল থাপরিয়ে গরম রাখবে,গরম ভাতে পানি দিবে,সে পথ বন্ধ করতে হবে।সাংবাদিক নেতারদের ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে হীন-নীতির রাজনীতিতে পরিবর্তন আসলে কাজ করার মানুষের সংখ্যা কমে যাবে না এবং অপকর্মের মানুষের সংখ্যা দেখা যাবে না।সরকার অনুমোদিত যে কোন সংগঠনের নির্বাচন যথাসময় হওয়া কাম্য।সরকার অনুমোদিত সংগঠনের নির্বাচন যথাসময় কেন হবে না এবং এর কারন কি,তা নেতাদেরকেই খুঁজে বের করতে হবে।অন্যদিকে প্যানেল-চ্যানেল ও কাউন্সিলার কেন্দ্রীক নির্বাচন বাদ দিয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতির নির্বাচন চালু করার দরকার আছে।নিয়ম-নীতির ভিতরে প্রবেশ না করলে।এক শ্রেনী আজীবন ক্ষমতায় থাকা ও খাওয়ার শিক্ষাই পাবে।তখন অপকর্মের মানুষ ছাড়া মানুষ পাওয়ার ভাগ্য জাতির কম হবে এবং যুব পন্ডিতদের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিতে হবে,যাদেরকে সুবিধাবাদী কতিপয় নেতারা সৃষ্টি করেছে এবং ভালো মানুষদেরকে ঘর বন্দি করে রেখেছে।ওদের সংখ্যা বেশি নয়,খুবই কম।তবে তারা মনে করে যে,বড় বড় নেতার সাথে চলে আর লিয়াজো রাখলেই নেতা হওয়া যায় এবং পদ-পদবীও পাওয়া ও নির্বাচিত হওয়া যায়।তাই সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখের সাথে মিশে এবং কাজ করে নেতা হওয়ার প্রতি দিনদিন অনাগ্রহী হচ্ছে,যা এক প্রকারের কু-কালচার।নেতাদেরকে এব্যাপারেও সচেতন হওয়া জরুরি।
গণমাধ্যমের সাথে যাঁরা জড়িত,তাদের কার কেমন জীবন যাপন ও অবস্থা,সেদিকে নিরপেক্ষ লক্ষ্য রাখার দায়িত্ব,গণমাধ্যমের বিভিন্ন স্তরে যাঁরা বিভিন্নভাবে নেতৃত্বদান করছেন তাদের।এই পেশার সাথে জড়িতদের গতিবিধি এবং কার কর্ম কেমন সে হিসেবও করতে হবে প্রতিনিধিদেরকে।যাদের দ্বারা পেশার মান ক্ষুন্ন হয় না,বরং আলোকিত হয়,তাদেরকে সন্মানিত করে,ভালো পথে প্রবেশ করার প্রতি আগ্রহী করতে হবে।সাংবাদিক এবং রাজনীতিবিদের নীতি এক হলে,গণমাধ্যমের মান নিয়ে প্রশ্ন আসে।সুতরাং যার যে পেশা তাকে সে পেশার নির্ধারিত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের মাধ্যমে তাঁর পরিচয় ফুটিয়ে তোলার দায়িত্ব তাঁর নিজের এবং এজন্য নেতাদেরকেও সহযোগিতা করা দরকার।যারা গণতন্ত্রের শিক্ষা দেবেন-তারাই যদি বাস্তবে কাজ করে,কাজ করার সু-শিক্ষা না দেন,চর্চা না করেন,তাহলে জাতি কি করে ওসবের শিক্ষা পাবেন?যারা গান শুনাবেন,তারা যদি গানের মান এবং অর্থ না বুঝেন,তবে সে গান অনর্থে পরিনত হবে।সুতরাং কথানুযায়ী কাজ করার মানুসিকতা সম্পন্ন মানুষদেরকেই সামনে এগিয়ে আসতে হবে।এখন গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগন পারেন ওসব বাঁধা দূর করে আলোর পথে প্রবেশ করাতে এবং দিনদিন ভালো আলোচনার মাঝে প্রবেশ করতে।
গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিগন কল্যাণকর কঠিন কঠিন যুদ্ধে বিজয় অর্জনে সহায়ক হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অবদানের স্বাক্ষর রেখেছেন এবং রেখে চলছেন।পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে গণমাধ্যমের লোকজন বিভিন্নভাবে হত্যার শিকার হয় ও প্রাণ হারাচ্ছেন।তাদেরকে শহীদ সাংবাদিক হিসেবে গণ্য করে,সে মোতাবেক মর্যাদা দেওয়া দরকার।এ মহান দায়িত্ব পালন করতে হবে বিশ্ব গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে। গণমাধ্যম হচ্ছে বিশ্বের ভারসাম্যতা রক্ষা করে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখার অন্যতম মাধ্যম। তাই গণমাধ্যমের সকল শহীদ সাংবাদিকসহ গণমাধ্যমের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল স্তরের দায়িত্ব পালনরত ব্যক্তিদের মূল্যায়নে আমার এ লেখাগুলো উৎসর্গ করলাম।
লেখক: সাংবাদিক, গবেষক এবং কলামিষ্ট।