পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক:
মেটা মালিকানাধীন জনপ্রিয় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ইনস্টাগ্রাম। ছবি ও ভিডিও শেয়ারিংয়ের এই প্লাটফর্মটি দীর্ঘদিন থেকেই জনপ্রিয় কনটেন্ট নির্মাতারদের জন্য আয়ের দারুন এক মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
এবার সরাসরি ফলোয়ারদের কাছ থেকেই আয়ের সুযোগ দিতে নতুন টুল চালু করছে ইনস্টাগ্রাম। ডিজিটাল কালেক্টিবলস নামের এই টুল কাজে লাগিয়ে কনটেন্ট নির্মাতারা নিজেদের তৈরি বিভিন্ন কনটেন্ট প্রদর্শনের বিনিময়ে ফলোয়ারদের কাছ থেকে সরাসরি অর্থ সংগ্রহ করতে পারবেন।
অর্থাৎ জনপ্রিয় নির্মাতাদের ভিডিও দেখতে হলে প্রতিমাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হবে ফলোয়ারদের। প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে কিছু ব্যবহারকারীদের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে এটি চালু করেছে ইনস্টাগ্রাম কর্তৃপক্ষ।
ইনস্টাগ্রাম থেকে আয় করার আরো আট কৌশল
বর্তমানে ইনস্টাগ্রাম থেকে টাকা আয় করার অনেক উপায় তৈরি হয়েছে। কিন্তু, অনেকেই এখনো ইনস্টাগ্রাম থেকে টাকা আয় করার সঠিক পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে জানেন না। যার কারণে, ইনস্টাগ্রাম একাউন্টে হাজার হাজার ফলোয়ার থাকলেও ইনস্টাগ্রাম থেকে টাকা আয় করতে পারছেন না। আপনিও কি ইনস্টাগ্রাম থেকে টাকা আয় করতে চান?
১.ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে আয়
আপনার ইনস্টাগ্রাম আইডিটা যদি খুব জনপ্রিয় হয়। তাহলে, আপনি আপনার আইডি কাজে লাগিয়ে সব ধরনের প্রোডাক্ট প্রমোট করতে পারবেন। সব ধরনের ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন। এছাড়া, আপনি যদি বেশি জনপ্রিয় নাও হন, তবুও আপনি এই ধরনের কাজ করতে পারবেন।
এটি সম্ভব হবে যদি আপনি ইনস্টাগ্রামে খুব বেশি সময় দেন, নিজের সব ধরনের কাজ শেয়ার করেন। তাহলে, আপনার ফলোয়াররা আপনাকে বিশ্বাস করবে এবং ভরসা করবে। আপনাকে এমন একটি জায়গা তৈরি করতে হবে ফলোয়ারসদের মনে, যাতে তারা আপনাকে দেখেই পণ্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়।
অনেক কোম্পানি আছে যারা তাদের প্রোডাক্ট এর বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্য এমন লোক খুজেঁ বেড়ায়। ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে এই কাজ করে, আপনি অনেক ভালো আয় করতে পারবেন। তবে, কাজ শুরু করার আগে অবশ্যই আপনার ফলোয়ার সম্পর্কে আপনার ধারনা থাকতে হবে। ঠিক কি ধরনের পণ্য তারা পছন্দ করবে তা জানা থাকলে আপনি সেই সব পণ্যের বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন।
কিছু ভালো ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং প্লাটফর্ম হচ্ছে:
২. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনস্টাগ্রাম থেকে আয় করা যায়। একটি প্রোডাক্টের নির্দিষ্ট পরিমান বিক্রি করে দিলে, সেখান থেকে কোম্পানি কিছু কমিশন দেয়। এটাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
যে কোম্পানির পণ্য বিক্রি করা হবে বা যে যে পণ্য বিক্রি করা হবে তার লিংক নিজের ইনস্টাগ্রাম আইডিতে শেয়ার করতে হবে। যাতে ফলোয়ারসরা খুব সহজেই বুঝতে পারে, আর নির্দিষ্ট পণ্য টি খুঁজে পায়। বেশি বেশি পোস্ট করে ফলোয়ারসদের কাছাকাছি থাকতে হবে এবং প্রতি পোস্টেই পণ্যের প্রচারের বিষয়টি পরিষ্কার করতে হবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারদের জন্য কিছু ভালো ওয়েবসাইট নিচে দেওয়া হলো:
৩. নতুনদের সাহায্য করা
আপনি যদি ইনস্টাগ্রামে খুব জনপ্রিয় হয়ে থাকেন। তাহলে, আপনি অনলাইনে নতুনদের সাহায্য করার, বিনিময়ে আয় করতে পারেন। যারা ইনস্টাগ্রামে নতুন, যারা জনপ্রিয় হতে চায়। তাদেরকে অনলাইনে কোর্স কিংবা কনাসাল্টটেনসি দিতে পারেন। আর এর বিনিময়ে আপনি তাদের থেকে, টাকা আয় করতে পারবেন।
অনেকে আছে যারা জানে না, কিভাবে স্পনসরশিপ রিকুয়েস্ট দিতে হয়, এড প্রচার করতে হয়, ভুয়া ফলোয়ার যাচাই করা যায় । নতুন যারা তারা অনেকেই তাদের নিজস্ব ব্র্যান্ডটিকে প্রচার করতে চায়, কিন্তু পারে না। আপনি আপনার দক্ষতা কাজে লাগিয়ে, তাদেরকে সাহায্য করতে পারেন। বিনিময়ে আপনার আয় হবে।
৪. ইনস্টাগ্রাম ক্যাপশন বিক্রি করে
ইনস্টাগ্রামে কিছু পোস্ট করার জন্য সুন্দর ক্যাপশন দিতে হয়। ক্যাপশন ভালো হলে সেটা রিচ হয় বেশি। এখানে অনেকেই আছে যারা তাদের ব্যবসার প্রচারের জন্য সুন্দর কোন ক্যাপশন পান না। তাদের কাছে আপনি এই ক্যাপশন বিক্রি করবেন।
এই কাজ পাওয়ার জন্য, অবশ্যই আপনার পারসোনাল আইডিতে কিছু ভালো ভালো ক্যাপশন রাখতে হবে। এছাড়া, আপনার ক্যাপশন সম্বলিত যেসব পোস্ট খুব বেশি রিচ হয়েছে তার লিংক ও আইডিতে রাখতে হবে। কারণ, নিয়োগকর্তা কাজ দেখে তারপর কাজে নিয়োগ দিবেন। তাই, এ সব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
৫. পোস্টার, ছবি ও অন্যান্য জনপ্রিয় জিনিস বিক্রি করে
ইনস্টাগ্রাম যেহেতু ছবি প্রধান। তাই, এখানে ছবি বিক্রি করেই আপনি আয় করতে পারেন। আপনি যদি ভালো পোস্টার লিখতে পারেন বা খুব সুন্দর ফটোগ্রাফি করতে পারেন। তাহলে, তা বিক্রি করে ইনস্টাগ্রাম থেকে আয় করতে পারেন।
এছাড়াও, বিভিন্ন পেইন্টিং, ড্রয়িং, এনিমেশন বা বিভিন্ন ভিডিও তৈরি করতে পারেন। উপরে সুন্দর একটি ক্যাপশন দিয়ে তা পোস্ট করতে পারেন। এই সম্বন্ধীয় বিভিন্ন লেখা আপনার পারসোনাল আইডিতে একটি লিংক দিয়ে যুক্ত করে দিতে পারেন। ইনস্টাগ্রাম থেকে আয় করার এটি একটি অন্যতম উপায়।
ছবি, পোস্টার ও ড্রয়িং বিক্রি করে আয় করার কিছু ওয়েবসাইট হলো:
৬. নিজের পণ্য বিক্রি করা
নিজের ব্যবসার পণ্য ও বিক্রি করা যায় ইন্সটাগ্রামে। ব্যবসা শুরু করার পর ব্যবসার পণ্য রাখার জন্য অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট স্থানের দরকার হয়ে থাকে। সেদিক বিবেচনায় ইনস্টাগ্রাম চমৎকার স্থান।
ইনস্টাগ্রাম শপ এর মাধ্যমে সরাসরি পণ্য বিক্রি করা যায়। প্রয়োজনে লিংক যুক্ত করে দেয়া যায় যেখান থেকে ফলোয়ারসরা সরাসরি নির্দিষ্ট পণ্যটি দেখে কিনে নিতে পারবে।
৭. ড্রপশিপিং এর মাধ্যমে আয়
ড্রপশিপিং এর মাধ্যমে আয় একটি চমৎকার আইডিয়া। ড্রপশিপিং এ পণ্য স্টোর করার কোন ঝামেলাই থাকে না। যে পণ্যটি বিক্রি হয়েছে সেটি সম্পর্কে সাপ্লায়ারদের জানানো হলে তারাই সেটি কাস্টমার এর কাছে পৌঁছে দিবে।
এখানে নিজের আর কোন চিন্তা করতে হয় না। ড্রপশিপিং ব্যবসায় কোন পণ্য নিজেকে স্টোর করতে হয়না, এখানে নেই কোন প্যাকেজিং এর ঝামেলা। বাড়তি ঝামেলা ছাড়াই নিশ্চিন্তে বিক্রি করা যায়। তবে এই কাজের জন্য একটা ড্রপশিপিং স্টোর সেট করতে হবে।
কিছু ড্রপশিপিং ওয়েবসাইট এর নাম হলো:
৮. জনপ্রিয় প্রোফাইল বিক্রি করে টাকা আয়
ইন্সটাগ্রামে একটি জনপ্রিয় প্রোফাইল বিক্রি করে টাকা আয় করা যায়। এমন অনেকেই আছে যারা ইনস্টাগ্রাম প্রচুর সময় ও পরিশ্রম দিয়ে একটা আইডি গড়ে তোলে যেখানে লাখ লাখ ফলোয়ারস থাকে। এই রকম প্রোফাইল তৈরি করে সেটি বিক্রি করে আয় করা যায়।
প্রোফাইল বিক্রি করার ওয়েবাসাইটের নাম: