টাকা দিবস উদযাপন শনিবার

:: পা.রি. রিপোর্ট ::
প্রকাশ: ২ years ago

নিজস্ব নোট ও মূদ্রা একটি স্বাধীন দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের নিজস্ব মূূদ্রা না থাকার কারণে সার্বিক অর্থ ব্যবস্থা প্রকট সংকটের মধ্যে পড়ে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নেতৃত্বের সরকার সদ্য স্বাধীন দেশে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে কাগজি টাকার প্রচলন শুরু করে ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ।
ব্যাংকনোট সংগ্রাহকদের মধ্যে বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞান চর্চার প্রসারের উদ্দেশ্যে ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র ব্যাংকনোট এবং মুদ্রা-বিষয়ক তথ্য ও গবেষণাধর্মী ত্রৈমাসিক পত্রিকা হিসেবে কালেক্টার (COLLECtOR) প্রকাশিত হয়ে আসছে। শুরু থেকেই সংগ্রাহকদের মধ্যে পত্রিকাটির গ্রহণযোগ্যতা লক্ষণীয়।

পাবলিক রিঅ্যাকশনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

গত পাঁচ দশকের ব্যাংকনোটে খুঁজে পাওয়া যাবে বাংলাদেশের ইতিহাস। ইতিহাসকে বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ও দেশীয় নোট সংগ্রহে উদ্বুদ্ধ করতে কালেক্টার (COLLECtOR) পরিবার ২০২০ সালে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ৪ মার্চ কে ‘টাকা দিবস’ হিসেবে পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং পরের বছর ২০২১ সাল থেকেই প্রত্রি বছর ৪ মার্চ কে ‘টাকা দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় আগামী ৪ মার্চ শনিবার দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মশালা ও আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন করতে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানস্থল: ৬৮, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫।

 

টাকা দিবসের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
হানাদার বাহিনী দেশকে মেধাশূণ্য করতে যেমন বুদ্ধিজীবি হত্যায় মেতেছিল, তেমনি স্বাধীন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে সর্বোচ্চভাবে বাঁধাগ্রস্থ করতে নগদ টাকা (রূপি নোট) পুড়িয়েছিল। এক হিসেবে, শুধু ঢাকার মতিঝিলে কয়েকশ কোটি টাকার নোট তারা আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করেছিল।
বাংলাদেশের সরকার ৯ মাসের ধ্বংসস্তুপ থেকে দেশকে পুনর্গঠন বিষয়ে তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সজাগ ছিল। তাইতো সরকার আনুষ্ঠানিক বিজয়ের মাত্র ১০ দিনের মধ্যে “টাকা” কে বাংলাদেশের জাতীয় মুদ্রা হিসেবে ঘোষনা করে এবং

কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে “বাংলাদেশ ব্যাংক” প্রতিষ্ঠার আইন প্রণয়ন করে। সরকারী এক দলিলে দেখা যায়, স্বাধীনতা লাভের পক্ষকাল অতিক্রান্ত হওয়ার পূর্বেই বাংলাদেশের “টাকা” ছাপানোর প্রক্রিয়া শুরু করে। কাগজি নোটের নিরাপত্তা বজায় রেখে নোট ছাপানো সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে হলেও তা ১২ থেকে ১৫ মাস সময়ের প্রয়োজন। বাংলাদেশের প্রয়োজনকে বিবেচনা করা বন্ধুরাষ্ট্র ভারত তাদের ব্যাংকনোট ছাপানোর ছাপখানায় বাংলাদেশের নোট দ্রুততার সাথে ছাপিয়ে দিতে রাজি হয়।


স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি ব্যতীত বাঙ্গালি সত্যিকারের স্বাধীনতা উপভোগ করতে পারছিল না। সেই সুযোগ আসে ১০ জানুয়ারী ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে। তিনি এসেই দেশ বিনির্মাণে ঝাপিয়ে পড়েন। তার সরকার প্রথম যে কয়জন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেন, তার মধ্যে অন্যতম হলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর আ. ন. ম. হামিদুল্লাহ।
অপ্রতুল ব্যাংক নোট নিয়ে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা যাত্রা শুরু করলেও যুদ্ধ বিধ্বস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাংকনোট যোগান ও সরবরাহের প্রধান অন্তরায় হয়ে দাড়ায়। ইতিমধ্যে স্বল্পতম সময়ে বাংলাদেশের নিজস্ব ১ টাকা ও ১০০ টাকা ভারত থেকে ছেপে আসে, যা ৪ মার্চ ১৯৭২ সালে প্রথমবারের মত প্রকাশ করা হয়। দেশের সকল অঞ্চলে বাংলাদেশের নিজস্ব নোট পৌঁছে দিতে সরকার সচেষ্টই ছিল। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নোট পৌঁছানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত হেলিকপ্টারসমূহ এ কাজে ব্যবহার করার আদেশ দেন। সরকারের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ব্যাংক পরবর্তী কয়েক মাসের মধ্যে উন্নত নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যযুক্ত পর্যাপ্ত পরিমানে বিভিন্ন মূল্যমানের টাকা নোট প্রয়োজন অনুযায়ী সরবরাহ করার সামর্থ অর্জন করে।
কালেক্টার, বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র ব্যাংক নোট ও মুদ্রা বিষয়ক তথ্য ও গবেষণাধর্মী পত্রিকা। বাংলাদেশের প্রথম কাগজি টাকা প্রচলনের ঐতিহাসিক দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে কালেক্টার ২০২১ সালে ৪ মার্চ প্রথমবারের মতো “টাকা দিবস” হিসেবে উদযাপন করতে সিদ্ধান্ত নেয়।

উদ্যোগটি শুধু সৌখিন ব্যাংকনোট সংগ্রাহকগণ সাদরে গ্রহণ করেনি, জাতীয় প্রিন্টি মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও অনলাইন ভিত্তিক সংবাদ সংস্থাগুলোও যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে প্রচার করে। গত বছর ২০২২ সালে বাংলাদেশের প্রথম কাগজি টাকা প্রচলণের সুবর্ণজয়ন্তী (১৯৭২-২০২২) কে সামনে রেখে ব্যাপক উদ্দিপনার সাথে টাকা দিবস পালিত হয়েছিল।


আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে ভার্চুয়াল মতামত ও অন্যান্য ভিডিও পাবেন।

গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন।


Public Reaction একটি মতামতভিত্তিক সাইট।
মূলধারার সংবাদ এবং মতামত, প্রবন্ধ, গল্প, কবিতাসহ সৃজনশীল লেখা প্রকাশের একটি মুক্তমাধ্যম এটি। লিখুন আপনিও।
ইমেইল: opinion2mail@gmail.com, info@publicreaction.net