তাদের নিয়ে আবার মন্তব্য করলেন হিরো আলম

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক
প্রকাশ: ২ years ago

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে নতুন মন্তব্য করেছেন আলোচিত ইউটিউবার হিরো আলম।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন আপনি জিরো হয়েছেন- এমন প্রশ্নে হিরো আলম বলেছেন, ‘এ কথা অনেক ব্যাথিত করেছে আমাকে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল দুজনই আমাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছেন। দুই দলই মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করেনি আমাকে। কোনো রাজনীতিবিদ কাউকে ছোট করে কথা বলতে পারেন না।

তারা এলিট শ্রেণির লোকদের সম্মান করে, কিন্তু নিম্নশ্রেণির লোকদের সম্মান করে না; কিন্তু তারা নিম্নশ্রেণির মানুষদের সমর্থন নিয়েই তো নেতা হয়েছে। এটা ভুলে গেছে।’

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচনে প্রত্যাশা অনুযায়ী ভোট পেয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি প্রত্যাশার থেকেও বেশি ভোট পেয়েছি। ভোটের মাঠে এবার জনগণের যাওয়ার কথা ছিল না। আমার জন্য শুধু ভোট কেন্দ্রে গিয়েছিল ভোটাররা। আমি না দাঁড়ালে ভোট কেন্দ্রে এত লোক কখনোই উপস্থিত হতো না। আমি কিন্তু ভোটে হারিনি, তবে ফলাফলে হারিয়েছে সরকার। নির্বাচনে কোনোভাবে আমাকে পেছনে ফেলতে না পেরে ফলাফল পরিবর্তন করে হারিয়েছে আমাকে।’

‘আপনার কার্যক্রম নিয়ে মানুষ এক সময় হাসাহাসি করত; কিন্তু নির্বাচনের ফল বলছে বর্তমানে মানুষের আস্থা অর্জনের জায়গায় পৌঁছেছেন আপনি। সেটা কীভাবে সম্ভব হয়েছে বলে আপনি মনে করেন?’ এই প্রশ্ন হিরো আলম বলেন, ‘আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে থাকেন। আমি ধৈর্য ধরেছি। মানুষ একসময় আমি কোনোকিছু করলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করত, গালি দিত- এটা আমি বুঝতে পারতাম; তারপরও লেগে থাকতাম। তবে আমি বিশ্বাস করতাম, শত্রুরাও আমাকে বুকে টেনে নেবে। মানুষের ভুল ভাঙবে। সেটা ভেঙেছে।’

কাজের ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন আনবেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে কাজের পরিবর্তন এনেছি। হাস্যকর, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করবে মানুষ-এমন কাজ করব না। মানুষের যে ভালোবাসা পেয়েছি, সেই ভালোবাসা ধরে রাখার জন্য সব সময় ভালো কাজের মধ্যে থাকব।’

‘ইতোমধ্যে নির্বাচনের ভোট পুনরায় গণনার দাবি করেছেন, পরবর্তী কী পদক্ষেপ নেবেন- এই প্রশ্নে হিরো আলম বলেন, ‘ফল পুনর্গণনার জন্য আবেদন করেছি। দেখি কি রেজাল্ট আসে। সেটার পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী পরিকল্পনা নির্ধারণ করব। ইতিবাচক ফলাফল না আসলে অবশ্যই আদালতে যাব।’

আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ রকম মারধর করে নির্বাচন হলে অংশ নেওয়া আর না নেওয়া সমান। এখন পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই নির্বাচণে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা আছে। সময়সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতেও পারে।’

কোনো রাজনৈতিক দল আমন্ত্রণ জানালে সেক্ষেত্রে ভূমিকা কী হবে জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, ‘এই মুহূর্তে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। ভবিষ্যতে ভেবেচিন্তে দেখব, কী করা যায়।’

মুভি, গান চালিয়ে যাবেন কি না সে বিষয়ে হিরো আলম বলেন, ‘মানুষ একটা অবস্থানে চলে গেলে চাইলেও আর উল্টাপাল্টা কাজ করা যায় না। আমি সিনেমা চালিয়ে যাব। তবে যে কাজই করি না কেন, এখন থেকে মানসম্মত কাজ করব।’

এসময় নিজের পরিবার নিয়ে হিরো আলম বলেন, ‘পরিবার নিয়ে অনেক সুখে আছি। পরিবারের সদস্য পাঁচজন। স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলে। সন্তানেরা এলাকায় পড়াশুনা করছে।’

নিজের সম্পদ নিয়ে হিরো আলম বলেন, ‘আমার সম্পদ নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন। তবে এটা হিংসাত্মক ও ইর্ষা মনোভাব থেকে। আমার বিভিন্ন উৎস রয়েছে আয়ের। সেখান থেকে টাকা জমিয়েছি।’

নির্বাচনে এত টাকা খরচ হলো- এ টাকার উৎস কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার আয়ের উৎস অনেক। তার মধ্যে কনর্সাট, ফেসবুক, ইউটিউব থেকে অনেক আয় হয়। পাশাপাশি ক্যাবল বিজনেস আছে।’

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ ছিল বিএনপি ভোটে পৃষ্ঠপোষকতা করে- এ বিষয়ে হিরো আলম বলেন, ‘বিএনপি আমাকে কোনো পৃষ্ঠপোষকতা করে না। ভোটেও দাঁড় করায়নি। আমি স্বেচ্ছায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছি। আর বিএনপি দাঁড় করালে মাঠে তো বিএনপির নেতাকর্মীরা থাকত। তা কী ছিল? আমার নির্বাচনি প্রচারে কোনো দলের নেতা অংশ নেয়নি এবং আমি আহ্বানও করিনি। বিএনপির সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই এবং যোগাযোগও নেই।’

‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি সংসদকে হেয় করতেই হিরো আলমকে নিয়ে খেলছে’ এ বিষয়ে হিরো আলম বলেন, ‘এলিট শ্রেণির লোক আমাকে মানতে চায় না। তাদের ধারণা আমি সংসদে গেলে সংসদের মানসম্মান কমে যাবে। তারা শুধু এলিট শ্রেণির লোকদের সম্মান করতে চায়।’

সিলেটের উপহারের গাড়ির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গাড়িটি যে ফিটনেসবিহীন ও কাগজপত্রের ঝামেলা ছিল এটা আগে জানতাম না। তবে উপহারের জিনিস নষ্ট হলেও সেটা উপহার। ওই গাড়িতে পাঁচ লাখ টাকা খরচ হলেও ঠিক করে জনসেবার জন্য অ্যাম্বুলেন্স বানাব।’

গাড়ি নিতে গিয়ে কীভাবে মামলা খেলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা যে গাড়িতে ছিলাম সেটি ৮০ কিলোমিটার বেগে চলছিল। হাইওয়ে পুলিশ দাঁড় করিয়ে আইন অনুযায়ী ২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তা পরিশোধ করেছি।’


আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে ভার্চুয়াল মতামত ও অন্যান্য ভিডিও পাবেন।

গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন।