মেট্রোরেলের পর এবার পাতাল রেলের যুগে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ। আজ বেলা ১১টায় দেশের প্রথম পাতাল রেল নির্মাণকাজের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি চালু হলে প্রতি ১০০ সেকেন্ড পরপর চলাচল করবে।
পাতাল মেট্রোরেল ঢাকার জনসংখ্যার হিসাব এবং বাস্তবতার নিরিখে নির্মাণ করা হচ্ছে।
এই পাতাল রেল নির্মাণ কাজের বাস্তবায়ন করবে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
ডিএমটিসিএল জানায়, ৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-১ দুটি অংশে বিভক্ত। অংশ দুটি হল- বিমানবন্দর রুট (বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর) এবং পূর্বাচল রুট (নতুন বাজার থেকে পিতলগঞ্জ ডিপো)।
বিমানবন্দর রুটের মোট দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার এবং মোট পাতাল স্টেশন সংখ্যা ১২টি। বিমানবন্দর রুটেই বাংলাদেশে প্রথম পাতাল বা আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল নির্মিত হতে যাচ্ছে। পূর্বাচল রুটের মোট দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৩৬৯ কিলোমিটার।
সম্পূর্ণ অংশ উড়াল এবং মোট স্টেশন সংখ্যা ৯টি। তন্মধ্যে ৭টি স্টেশন হবে উড়াল। নদ্দা ও নতুন বাজার স্টেশনদ্বয় বিমানবন্দর রুটের অংশ হিসেবে পাতালে নির্মিত হবে। নতুন বাজার স্টেশনে এমআরটি লাইন-৫ (নর্দার্ন রুট) এর সঙ্গে আন্তঃলাইন সংযোগ থাকবে।
নদ্দা ও নতুন বাজার স্টেশনের আন্তঃরুট সংযোগ ব্যবহার করে বিমানবন্দর রুট থেকে পূর্বাচল রুটে এবং পূর্বাচল রুট থেকে বিমানবন্দর রুটে যাওয়া যাবে। গত বছরের ডিসেম্বরেই উভয় রুটের সকল বিস্তারিত বিশ্লেষণ, সার্ভে, প্রাথমিক নকশা ও চূড়ান্ত নকশা সম্পন্ন করা হয়েছে।
এমআরটি লাইন-১ এর ডিপো ও ডিপো এক্সেস করিডোর নির্মাণের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার পিতলগঞ্জ ও ব্রাহ্মণখালী মৌজার ৯২ দশমিক ৯৭২ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়।
গত বছরের ২৩ অক্টোবর এমআরটি লাইন-১ এর নির্মাণ কাজ তত্ত্বাবধানের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এমআরটি লাইন-১ এর নির্মাণ কাজ মোট ১২টি প্যাকেজের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
জানা গেছে, পাতালপথে কমলাপুর, রাজারবাগ, মালিবাগ, হাতিরঝিল, রামপুরা, পূর্ব হাতিরঝিল, বাড্ডা, উত্তর বাড্ডা, নতুন বাজার, নর্দা, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ ও বিমানবন্দরে স্টেশন থাকবে। প্লাটফর্মে ওঠা নামার জন্য উভয় পথের স্টেশনে থাকবে লিফট, সিঁড়ি ও এস্কেলেটর।
ডিএমটিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক গণমাধ্যমে জানান, রূপগঞ্জের পিতলগঞ্জ মৌজায় ৮৮ দশমিক ৭১ একর জমিতে হবে মেট্রোর ডিপো। এতে হবে ৬০৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। বিমানবন্দর রুট ও পূর্বাচল রুটে চলাচলকারী সব মেট্রো এই ডিপোর সুবিধা পাবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী মোট ৬ ধাপে মেট্রোরেল নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে সরকার। সে পরিকল্পনার প্রথম ধাপে গঠন করা হয় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড। উড়াল ও পাতাল রেলপথ মিলিয়ে ৬ ধাপে রয়েছে এমআরটি লাইন-৬, এমআরটি লাইন-১, এমআরটি লাইন-৫ এ দুই রুট রয়েছে নর্দার্ন ও সাউদার্ন, এমআরটি লাইন-২, এমআরটি লাইন-৪। এর মধ্যে এমআরটি লাইন-৬ দিয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়।