স্পোর্টস ডেস্ক:
ফাইনালে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। যুদ্ধের দামামা বাজছে কাতার বিশ্বকাপে। লিওনেল মেসি নাকি কিলিয়ান এমবাপ্পে, কার হাতে উঠবে শিরোপা? জানতে অধীর অপেক্ষায় পুরো বিশ্ব। সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছে ৯০ মিনিট লড়াইয়ের সাক্ষী হতে, সেটা মাঠে কিংবা টিভি অথবা অনলাইন লাইভ স্ট্রিমিংয়ে। কিন্তু ভুলে যাওয়া যাবে না, ফাইনালের আগের দিন রয়েছে বিশ্বকাপের একটি ম্যাচ।
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় আল রায়ানের খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হচ্ছে ক্রোয়েশিয়া ও মরক্কো। সেমিফাইনালের দুই পরাজিত দলকে নিয়ে হবে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ, যাকে বিশ্বকাপের ‘বাজে ম্যাচ’ অভিহিত করছেন মরক্কান কোচ ওয়ালিদ রেগরাগুই। তারপরও ম্যাচটি জেতার তাড়নায় কোনও ঘাটতি নেই।
প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে উঠে এরই মধ্যে ইতিহাসের পাতায় ঢুকে গেছে মরক্কো। কিন্তু ২-০ গোলে ফ্রান্সের কাছে হেরে ফাইনালের স্বাদ পায়নি তারা। অন্যদিকে ক্রোয়েশিয়া ৩-০ গোলে সেমিফাইনালে হেরে গেছে আর্জেন্টিনার কাছে। ফাইনালে উঠতে না পারার কষ্ট বুকে নিয়ে ব্রোঞ্জ পদক ও প্রাইজমানির জন্য মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল। জিতলে একটি ব্রোঞ্জ পদক ও ২৭ মিলিয়ন ডলার পকেটে পুরবে দল, হেরে যাওয়া দল দুই মিলিয়ন ডলার কম পাবে, মানে ২৫ মিলিয়ন।
এই ম্যাচ নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাচ্ছেন না ক্রোয়েশিয়া কোচ জ্লাতকো দালিচ। দলের প্রাণভোমরা লুকা মদরিচকে বেঞ্চে রেখে একাদশ সাজাবেন। মিডফিল্ডের আরেক তারকা মার্সেলো ব্রোজোভিচও সম্ভবত বেঞ্চে থাকবেন। রক্ষণে নজর কাড়া জোসকো ভারদিওলকেও মূল একাদশে না রাখার কথা শোনা যাচ্ছে।
তবে দালিচের বিশ্বাস, আগামী বিশ্বকাপে মদরিচ না খেললেও ২০২৪ সালের ইউরোতে দলে পাবেন, ‘আমি আশা করি সে আমাদের সঙ্গে থাকবে। তবে সে কেমন বোধ করে সেটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তবে আমি মোটামুটি নিশ্চিত সে থাকবে।’
বেলজিয়াম, স্পেন ও পর্তুগালকে হারিয়ে বিশ্ব কাঁপানো মরক্কো সেমিফাইনালে উঠে চমক দেখিয়েছে। এখন ক্রোয়েশিয়াকে হারাতে পারলে ষোলোকলা পূর্ণ হবে। এই ম্যাচকে খুব একটা মূল্যায়ন না করলেও তাই জিততে মুখিয়ে রেগরাগুই।
তৃতীয় স্থান নির্ধারণী লড়াইকে বিশ্বকাপের ‘বাজে ম্যাচ’ বললেও চতুর্থ হয়ে শেষ করতে চান না মরক্কো কোচ বলেন, ‘ভিন্ন কিছু হলে এবং ফাইনালে খেলতে পারলে ভালো লাগতো। কিন্তু আরেকটি ম্যাচ খেলার আছে, আমরা পোডিয়ামে থাকতে চাই। আমরা জানি ক্রোয়েশিয়া তৃতীয় হয়ে শেষ করতে চায়, আমরা তাদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলেছি, তাই এটা দারুণ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তৃতীয় হয়ে শেষ করা আর চতুর্থ হয়ে শেষ করা এক নয় এবং আমরা মেডেল সঙ্গে নিয়ে ঘরে ফিরতে চাই।’
ক্রোয়েশিয়া দুটি ম্যাচ খেলেও মরক্কোকে হারাতে পারেনি। ১৯৯৬ সালে হাসান দ্বিতীয় ট্রফির সেমিফাইনালে ২-২ গোলে ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে জেতে মরক্কানরা। এরপর দেখা হয়েছে চলতি বিশ্বকাপে, গ্রুপের প্রথম ম্যাচটি ক্রোটদের রুখে দেয় মরক্কো। তারপর তো ইতিহাস গড়লো, যার সমাপ্তি মধুর হয় নাকি সেটাই দেখার অপেক্ষা।