নয়াপল্টনে রোববার পর্যন্ত দোকান খোলা যাবে না

::
প্রকাশ: ২ years ago
রাজধানী নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনের রাস্তার ২ পাশে দোকান বন্ধ। ৮ ডিসেম্বর ২০২২। ছবি: পাবলিক রিঅ্যাকশন

পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক:
নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনের রাস্তার ২ পাশে ‘আগামী রোববার পর্যন্ত দোকান খোলা যাবে না’ বলে সেখানে কর্তব্যরত এক পুলিশ কর্মকর্তাকে বলতে শোনা গেছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে সেই পুলিশ কর্মকর্তাকে এমনটি বলতে শোনা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় এক দোকানি তার দোকানের শাটার খুলতে গেলে পুলিশের পরিদর্শক পদের একজন চিৎকার করে বলেন, ‘আগামী রোববার পর্যন্ত দোকান খোলা যাবে না’।

এমন নির্দেশ পাওয়ার পর তিনি দোকান বন্ধ করে চলে যান।

অপর এক দোকানি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সকালে দোকান খুলতে এসেছিলাম। পুলিশ দোকান খুলতে মানা করেছে। তাই দোকান বন্ধ রেখে দাঁড়িয়ে আছি। বেলা বাড়লে যদি পরিস্থিতি বদলায় তাই দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছি।’

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ আছে। কার্যালয়ের সামনে শুধু পুলিশের উপস্থিতি।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিজয়নগর মোড় থেকে নয়াপল্টনে যাওয়ার রাস্তায় চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে সেই রাস্তায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। গণমাধ্যমের গাড়িগুলোকেও সেই রাস্তায় প্রবেশে বাধা দিতে দেখা গেছে।

নয়াপল্টনের আশপাশের গলির মুখেও পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। অনেক জিজ্ঞাসাবাদের পর বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া পুলিশ এই সড়কে কাউকে ঢুকতে দেয়নি।

 

গলির মুখ বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ, কেউ বের হতে পারছেন না
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে ওই সড়কে সংযুক্ত গলিগুলোও অবরুদ্ধ করে রেখেছে পুলিশ।

সরেজমিনে দেখা যায়, বর্তমানে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে শুধু পুলিশের উপস্থিতি। এর আশেপাশের গলিগুলোর প্রবেশ মুখের গেট বন্ধ করে রেখেছে পুলিশ। গেটের ভেতরে আটকে পড়া লোকজনদের আকুতি করতে শোনা যায় তাদের বের হওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য। তাদের কেউ ব্যাংকে যাওয়ার জন্য, কেউবা অফিসে যাওয়ার জন্য এসব গলি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তবে, কাউকেই বের হতে দেওয়া হয়নি।

বিজয়নগর মোড় থেকে নয়াপল্টনে যাওয়ার রাস্তায় পুলিশ চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। নয়াপল্টনের আশপাশের গলির মুখেও পুলিশ অবস্থান নিয়েছে।

 

ভোগান্তিতে নয়াপল্টন ও এর আশেপাশের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তা ও এর আশেপাশের গলি অবরুদ্ধ করে রাখায় ভোগান্তিতে পড়েছে ওই এলাকার এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দেখা যায়, বিএনপি কার্যালয়ের সামনে শুধু পুলিশের উপস্থিতি। এর আশেপাশের গলিগুলোর প্রবেশ মুখের গেট বন্ধ করে রেখেছে পুলিশ।

এই এলাকার কলেজগুলোতে যেসব এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে আসতে হচ্ছে তারা পড়েছেন ভোগান্তিতে। অনেকে ঘুরে অন্য এলাকা দিয়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলেও কয়েকজনকে দেখা যায় নয়াপল্টনের এই সড়ক দিয়েই পরীক্ষার হলের দিকে যেতে।

সকাল সোয়া ১০টার দিকে নটরডেম কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দেখা যায় আরামবাগ মোড় থেকে পায়ে হেঁটে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পরীক্ষার্থী বলেন, ‘এমনিতেই পরীক্ষা নিয়ে চিন্তায় আছি। তারপরে আবার এই এলাকায় এই পরিস্থিতি। অন্য দিক দিয়ে যাব, সেই উপায় নেই। সব রাস্তায় প্রচণ্ড জ্যাম। বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে নয়াপল্টনের এই রাস্তা দিয়েই হেঁটে হেঁটে যাচ্ছি। নইলে আজ আর পরীক্ষা দিতে পারব না।’

উল্লেখ্য, আজ সকাল ১১টা থেকে উচ্চতর গণিত দ্বিতীয় পত্র ও ইসলাম শিক্ষা দ্বিতীয় পত্র এবং দুপুর ২টা থেকে গার্হস্থ্য বিজ্ঞান প্রথম পত্র ও সংস্কৃতি প্রথম পত্র বিষয়ে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে গতকাল বিকাল ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় পুলিশ। এ ঘটনায় বিএনপির ১ জন নিহত এবং কয়েকশ জন আহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে গতকাল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজকের পুলিশি সন্ত্রাসে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছেন, রক্তাক্ত হয়েছেন, ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন। অনেকে চিকিৎসাধীন আছেন। সর্বশেষ জানতে পেরেছি এখন পর্যন্ত আমাদের একজন নেতা মারা গেছেন। আরও অন্তত একজনের অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর। তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।’

‘আশঙ্কাজনক আহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। পুলিশের আকস্মিক বর্বরোচিত আক্রমণে আমরা এখনো সম্পূর্ণ তথ্য পাইনি। আহতদের খবর নেওয়ার চেষ্টা করছি,’ বলেন তিনি।

গতকাল বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি এবং খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী শিমুল বিশ্বাসকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতারা। এই নেতারা ছাড়াও বিএনপির ২ শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে দলটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।