স্পোর্টস ডেস্ক:
গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে নিলেও শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে পর্তুগালকে। অন্যদিকে ব্রাজিলের সঙ্গে পেরে না উঠলেও সার্বিয়া ও ক্যামেরুনকে হারিয়ে নকআউট নিশ্চিত করেছে সুইজারল্যান্ড। ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর সম্ভাব্য শেষ বিশ্বকাপে নিজেদের যাত্রার সমাপ্তি যে এখনই টানতে চাইবে না পর্তুগিজরা তা বলাই বাহুল্য। ফলে সুইসদের পরের রাউন্ডে যেতে করতে হবে ‘বিশেষ কিছু’।
ম্যাচের ফলাফল জানা যাবে ম্যাচ শেষেই, তবে তার আগে কাগজে কলমে দুদলের সামর্থ্য ও সাম্প্রতিক ফর্মের আলোকে ভবিষ্যৎবাণী নিয়ে হাজির আমরা। পাশাপাশি দুই দলের সম্ভাব্য একাদশ, ফর্মেশনও তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য:
কখন?
মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টা
কোথায়?
লুসাইল স্টেডিয়াম
টিম নিউজ
রক্ষণের অপরিহার্য সদস্য নুনো মেন্দেসের ছিটকে যাওয়া ভোগাতে পারে পর্তুগিজদের। পিএসজি সেন্টার ব্যাক দানিলো পেরেইরার আছে চোট। পুরোপুরি সেরে উঠতে আরও কয়েকদিন সময় লাগতে পারে তার। ঝুঁকি নিয়ে তাকে খেলাবেন কিনা তা নির্ভর করছে কোচ ফার্নান্দো সান্তোসের ওপর। পোর্তো মিডফিল্ডার ওতাভিও ফিরতে পারেন এই ম্যাচে। শুরুর একাদশে তাকে না রাখলে বদলী হিসেবে নামাতে পারেন সান্তোস।
অসুস্থতার কারণে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে সার্বিয়ার বিপক্ষে খেলেননি সুইজারল্যান্ড গোলরক্ষক ইয়ান সোমার। এই ম্যাচেও তার একাদশে ফেরার সম্ভাবনা কম।
নজরে থাকবেন যারা
বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে এখন পর্যন্ত গোলহীন পর্তুগিজ শিবিরের সবচেয়ে বড় তারকা রোনালদো। সেই জুজু সুইসদের বিপক্ষেই কাটাবেন, এমনই প্রত্যাশা থাকবে ভক্তদের। ফিনিশিংয়ে অতীতের ধার হারানো সিআর সেভেনের সরূপে ফেরা হতে পারে পর্তুগালের জয়ের চাবিকাঠি। মাঝমাঠে ব্রুনো ফার্নান্দেস, বের্নার্দো সিলভার মতো তারকাদেরও নিতে হবে বাড়তি দায়িত্ব। রক্ষণে অভিজ্ঞতার ছাপ রাখতে হবে পেপেকে।
শেষ আটের স্বপ্ন সত্যি করতে সুইসদের তিন বিভাগকেই জ্বলে উঠতে হবে। অভিজ্ঞ তারকা জেরদান শাকিরিকে রাখতে হবে ভূমিকা। সঙ্গে ক্যামেরুনের বিপক্ষে জয়সূচক গোল করা ব্রিল এম্বোলোর ওপরও থাকবে প্রত্যাশার চাপ। তবে পর্তুগিজ রক্ষণ ভেদ করতে নিজেদের সেরা ফুটবলটাই খেলতে হবে মুরাত ইয়াকিনের শিষ্যদের। ডিফেন্সে ম্যানচেস্টার সিটির ম্যানুয়েল আকানজিকে দিতে হবে সামনে থেকে নেতৃত্ব।
সম্ভাব্য লাইন আপ
পর্তুগাল: (৪-৩-১-২): দিয়োগো কস্তা (গোলরক্ষক), জোয়াও ক্যানসেলো, রুবেন দিয়াস, পেপে, দিয়োগো দালত, উইলিয়াম কারভালহো, রুবেন নেভেস, বের্নার্দো সিলভা, ব্রুনো ফার্নান্দেস, ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, জোয়াও ফেলিক্স
সুইজারল্যান্ড: (৪-২-৩-১): গ্রেগর কোবেল (গোলরক্ষক), ম্যানুয়েল আকানজি, ফ্যাবিয়ান শার, রিকার্ডো রদ্রিগেজ, সিলভান উইডমার, গ্রানিত জাকা, রেমো ফ্রেউলার, জেরদান শাকিরি, জিব্রিল সো, রুবেন ভার্গাস, ব্রিল এমবোলো
প্রেডিকশন
কাগজে কলমে পর্তুগিজরা এগিয়ে থাকলেও সুইসরাও ঘটাতে পারে অঘটন। কোরিয়া ম্যাচের ভুল শুধরে না নামলে তাই কড়া মূল্য দিতে হতে পারে রোনালদোর দলকে। তবে তারকারা জ্বলে উঠলে অনেকটাই সহজ হয়ে পড়বে পর্তুগালের কাজ।
সম্ভাব্য স্কোর:
পর্তুগাল ২-১ সুইজারল্যান্ড
ম্যাচ ফ্যাক্টস
১. এখন পর্যন্ত ২৫ বার মুখোমুখি হয়েছে পর্তুগাল ও সুইজারল্যান্ড। জয়ের সংখ্যায় এগিয়ে সুইসরাই, তাদের ১১ জয়ের বিপরীতে পর্তুগিজদের জয় নয়টিতে। পাঁচটি খেলা হয়েছে ড্র। নেশন্স লিগে তাদের সর্বশেষ দেখায়ও শেষ হাসি হেসেছিল শাকিরিরাই।
২. ২০০৬ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলা পর্তুগাল শেষ তিনটি বিশ্বকাপের একটিতেও পার করতে পারেনি শেষ ষোলো। ২০১৪ সালে তারা ছিটকে যায় গ্রুপ পর্ব থেকেই। ২০১০ ও ২০১৮ সালে এই শেষ ষোলোতেই থেমেছিল তাদের যাত্রা।
৩. চলতি বছরে দুই দলের তৃতীয় মোকাবিলা হতে চলেছে এটি। প্রথম দুটি লড়াইয়ে একবার করে জয় পেয়েছে পর্তুগাল ও সুইজারল্যান্ড।
৪. সুইসদের জালে একবার বল পাঠাতে পারলেই রোনালদো ছুঁয়ে ফেলবেন সাবেক পর্তুগিজ কিংবদন্তি ইউসেবিওকে। সাবেক এই তারকার নয় গোলই ফুটবলের মহাযজ্ঞে কোনো সেলেসাও দাস কুইনাস খেলোয়াড়ের করা সর্বোচ্চ গোল।
৫. শেষ চার বিশ্বকাপের তিনটিতেই শেষ ষোলোতে খেলেছে সুইজারল্যান্ড। তবে ১৯৫৪ সালের পর আর কখনোই কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার গৌরব অর্জন করতে পারেনি দলটি।
৬. রোনালদোদের বিপক্ষে গোল করলেই বিশ্বকাপে সুইজারল্যান্ডের সর্বোচ্চ গোলদাতা বনে যাবেন শাকিরি।