প্রবীর মিত্র ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন, জানতেন না অনেকেই

:: আনন্দধারা প্রতিবেদক | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ২ সপ্তাহ আগে

চার দশক রুপালি পর্দায় অভিনয় দিয়ে দর্শকদের মন জয় করা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত বর্ষীয়ান অভিনেতা প্রবীর মিত্রের মৃত্যুতে শোকে ছেয়ে গেছে বিনোদন অঙ্গন। তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসে অনেকেই স্মৃতিচারণ করেছেন। এ সময় চলচ্চিত্র অভিনেতা সুব্রত চক্রবর্তী জানিয়েছেন, তার ইসলাম ধর্ম গ্রহণের বিষয়টিও।

সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘উনি ভাবিকে বিয়ের সময় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তখন নাম রেখেছিলেন হাসান ইমাম। তবে অভিনয় করার জন্য তিনি পরিচিত হয়েছেন প্রবীর মিত্র নামেই। দাদা হিসেবে আমাদের অঙ্গনে প্রবীর দাদাই ছিলেন। ছোট-বড় সবাই উনাকে দাদা বলেই ডাকতেন।’

‘প্রবীর দা আমাদের অভিভাবক ছিলেন। কতকিছু শিখেছি উনার কাছে। একে একে সবাই চলে যাচ্ছে।’, বলেন সুব্রত।

সংকটাপন্ন অবস্থায় প্রবীর মিত্র রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। রোববার (০৫ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

প্রবীর মিত্রের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন তারকারা। ছবি: সংগৃহীত

বেশ কয়েক বছর আগে একটি ভিডিওতে প্রবীর মিত্রকে বলতে শোনা যায়— আমি তো কনভার্ট হয়েই ওর মাকে বিয়ে করেছিলাম। তখন মুসলমান হয়েছিলাম। তখন প্রয়োজন হয়েছিল মুসলমান হওয়া।

ধর্ম নিয়ে প্রবীর মিত্রের ভাবনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ধর্ম নিয়ে আমার কোনো বাড়াবাড়ি নেই। সবার উপরে মানুষ সত্য তার উপরে নাই। মানুষ সবার উপরে বলেও জানান এ অভিনেতা।

উল্লেখ্য, কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র ১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট কুমিল্লার চান্দিনায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম প্রবীর কুমার মিত্র। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া এ অভিনেতা স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্কুলজীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন তিনি।

প্রবীর মিত্র ১৯৬৯ সালে প্রয়াত এইচ আকবরের ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। যদিও এ ছবিটি ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারি মুক্তি পায়। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তিনি ‘নায়ক’ হিসেবে কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। সর্বশেষ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ‘রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ সিনেমায়। পরবর্তী সময় নায়ক না হয়ে চরিত্রাভিনেতার দিকে মনোযোগী হয়ে কাজ করেও তিনি দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করেন।

তার উল্লেখযোগ্য ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয় পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলংকার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘তরুলতা’, ‘গাঁয়ের ছেলে’, ‘রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’, ‘পুত্রবধূ’সহ চার শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন।