মোহাম্মদ ছৈয়দুল আলম:
বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) বা ব্যক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড ও গ্রামে চলছে বাড়ির হোল্ডিং অ্যাসেসমেন্ট ও হোল্ডিং নাম্বার প্লেট প্রদানের কাজ এবং বকেয়া ট্যাক্স আদায়। এতে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার হচ্ছে বলে সচেতন মহলের অভিযোগ। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে গ্রাম-গঞ্জে। এই কাজে রয়েছে দেশ জুড়ে বিশাল সিন্ডিকেট, মন্ত্রী, উপ-মন্ত্রী ও সচিবদের নামে জাল স্বাক্ষরও ডকুমেন্ট তৈরি করে স্থানীয় প্রশাসনকে বোকা বানিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে চুক্তি করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
এবার আসুন আসল কথায়, উপরে উল্লেখিত পয়েন্টগুলো নিয়ে বিবেচনা করুন। দীর্ঘদিন যাবৎ দেখে আসছি যে, স্থানীয় সরকারের আওতাধীন ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের পরপরেই নামে-বেনামে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি পরিচয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে সাক্ষাৎ করার পর তারা বলেন যে, তাদের সংস্থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী/উপ-মন্ত্রী/সচিব অনুমোদন দিয়েছেন যে, হোল্ডিং অ্যাসেসমেন্ট কাজ সম্পন্ন বা বকেয়া টাক্স আদায় করার জন্য। এমন ভুয়া/জাল/মিথ্য তৈরীকৃত কাগজপত্রের ফাইল ইউপি চেয়ারম্যানকে % হিসাবে অর্থ ভাগ করার লোভ দেখিয়ে পরে উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র গোপন করে শুধু মাত্র ইউপির সাথে চুক্তিবদ্ধ হন সংস্থার প্রতিনিধি বা ব্যক্তিরা।
এর পর দেখা যায়, ওয়ার্ড ও এলাকা ভিত্তিক মাইকিং করে গ্রাম পুলিশ সাথে নিয়ে বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে বকেয়া ট্যাক্স কয় গুণ বেশি আদায় এবং জায়গা-জমি, ছেলে-মেয়ে, অবস্থান জরিপ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নামে ও হোল্ডিং নাম্বার প্লেট বাবদ-৫০-১৫০/- আদায় করে তারা ৫০-৮০% কাজ করে টাকাগুলা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে যায় সংস্থার প্রতিনিধি বা ব্যক্তিরা। ট্যাক্স আদায় চুক্তিতেও একই অবস্থা!
টাকা আদায়ের পর তাদের দেওয়া হোল্ডিং নাম্বার নিয়ে সেবার জন্য ইউপিতে গেলে মিলেনা কোন সেবা, কেউ প্রতিবাদ করলে ইউপি সচিব বলেন, এই হোল্ডিং নাম্বার ইউপি রেকর্ডের সাথে হোল্ডিং নং মিল নেই। দেশের অধিকাংশ ইউপিতে ২০০৪-৬, ২০১১-১২, ২০১৬-১৭ ও ২০২১-২৩ (চলমান) প্রতি ৫বছর পরপর ৩ বার হোল্ডিং নাম্বার নামে বাণিজ্য শুরু হয়, এই হোল্ডিং নাম্বারে জনগণকে ধোকা ছাড়া কিছু দেওয়া হয় না। এই ধরনের ঝামেলা কম-বেশি অধিকাংশ ইউপিতে হয়েছে। এই জন্যই মহোদয়গণের সু-দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমার ছোট এই বার্তা, আমি আশা রাখি যে, সংশ্লিষ্ট দপ্তর, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিগণ অতি গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি নিয়ে বিবেচনা করে সঠিক নির্দেশনা প্রদান করবেন।
লেখক: সাংগঠনিক সম্পাদক, বাঁশখালী প্রেস ক্লাব, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।