রুশ বন্দিশিবিরে যৌন নির্যাতনের শিকার ইউক্রেনীয় পুরুষেরা: জাতিসংঘ

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ২ দিন আগে
রুশ বন্দিশিবিরে যৌন নির্যাতনের শিকার ইউক্রেনীয়রা। ছবি: ইউএনএফপিএ ইউক্রেন

রাশিয়ার বন্দিশিবিরগুলোতে ব্যাপক যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন ইউক্রেনীয় পুরুষ বন্দিরা। তবে ‘লজ্জা ও সামাজিক কলঙ্কের ভয়ে’ অনেক ভুক্তভোগীই তাদের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে রাজি হন না।

সম্প্রতি জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে ১১৪ জন পুরুষ এ ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। যদিও প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

ইউএনএফপিএর মতে, প্রতিটি রেকর্ড করা ঘটনার পেছনে আরও ১০ থেকে ২০টি ঘটনা অপ্রকাশিত থেকে যেতে পারে।

যৌন নির্যাতনকে নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের একটি কমিশন জানায়, রুশ কর্তৃপক্ষ পরিকল্পিতভাবে যৌন নির্যাতনকে বন্দিদের ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের একটি পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করছে। তদন্তে দেখা গেছে, উচ্চপদস্থ রুশ কর্মকর্তারা এ ধরনের অপরাধ বন্ধ করার পরিবর্তে তা মেনে নিয়েছেন বা উপেক্ষা করেছেন।

পুরুষ ভুক্তভোগীদের জন্য বাড়তি চ্যালেঞ্জ
ইউএনএফপিএ ইউক্রেনের প্রতিনিধি ম্যাসিমো ডায়ানা জানিয়েছেন, যুদ্ধকালীন যৌন নির্যাতনের শিকারদের জন্য মানসিক ও শারীরিক পুনর্বাসনের প্রয়োজনীয়তা অনেক। কিন্তু তা বাস্তবায়নের পথে বেশ কিছু বাধা রয়েছে। পুরুষ ভুক্তভোগীদের ক্ষেত্রে সমস্যাগুলো আরও জটিল।

ডায়ানা বলেন, পুরুষ ভুক্তভোগীদের অনেকেই লজ্জা এবং ভুল বোঝার ভয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করেন না। তারা প্রায়ই সমকামী হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় থাকেন।

ব্ল্যাকমেইল
ইউএনএফপিএ জানিয়েছে, রুশ সেনারা অনেক সময় বন্দি ইউক্রেনীয়দের যৌন নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে তা তাদের পরিবারের কাছে পাঠায়। এসব ভিডিও ব্ল্যাকমেইল বা অপমানের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

কিয়েভ-ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিজের প্রধান ওলেক্সান্দ্রা মাতভিইচুক জানিয়েছেন, রুশ বন্দিদশায় থাকা অনেক ভুক্তভোগী তাদের ওপর চালানো শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণ এবং বৈদ্যুতিক শক দেওয়ার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন।

জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনে যৌন সহিংসতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্রমবর্ধমান সমস্যাগুলো তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এসব অপরাধ প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।

সূত্র: আল-জাজিরা