প্রেমের টানে ‘সংসার ছেড়ে’ ভারত থেকে প্রায় ৪০ দিন আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জে এসেছেন শাবনুর (১৭) নামে এক কিশোরী। রোববার (১০ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ ঘটনার কথা জানাজানি হয়।
শাবনুরের বাড়ি ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন থানার মান্দাপাড়া এলাকায়। প্রেমিক মাসুদের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের গোঠাপাড়া এলাকায়। তার বাবার নাম আনারুল ইসলাম।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ৮ বছর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের গোঠাপাড়া এলাকার আনারুল ইসলামের ছেলে মাসুদ ভারতে যান রাজমিস্ত্রীর কাজে। সেখানে শাবনুরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে মাসুদের। এরপর শাবনুরকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন এবং বিয়ে করেন।
আরও জানা যায়, শাবনুরের আগে একটি বিয়ে হয়েছিল। আগের স্বামী ও তার পরিবার তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো। তাই পূর্বের স্বামীকে তালাক দিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি।
প্রেমের টানে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আসা শাবনুর বলেন, আমার আগে একজন স্বামী ছিল। তিনি আমাকে অনেক নির্যাতন করতেন। এ ছাড়া তার মা-বাবা ও বোন মিলে আমার ওপর নির্যাতন করতো। তারপর ভারতে মাসুদের সঙ্গে আমর পরিচয় হয়। এরপর থেকে আমরা রিলেশন করছিলাম। তাকে ভালো লাগার কারণে আমি বাংলাদেশে চলে এসেছি। এখানে এসে আমরা কাজির মাধ্যমে বিয়ে করেছি। আমার বর্তমান শ্বশুর-শাশুড়ি আমাকে অনেক ভালোবাসেন। কোনো ধরনের নির্যাতন করেন না। আমি আগের থেকে ভালো আছি। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।
প্রেমিক মাসুদ বলেন, আমি তার গ্রামে (ভারতে) গিয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করতাম। তিন বছর ধরে তার সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক। সে বললো আমাকে নিয়ে যাও, তারপর তাকে নিয়ে আসি এবং কাজির মাধ্যমে আমরা বিয়ে করেছি। আমরা ভালো আছি, আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
প্রতিবেশী সেলিম বলেন, মাসুদ আমাদের প্রতিবেশী। সে ইন্ডিয়াতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতো। সেখানে একটা মেয়ের সঙ্গে তার রিলেশন হয়, এরপর তাকে (শাবনুর) নিয়ে এসেছে। এখানে ধর্মীয় রীতি মেনে তাদের বিয়ে হয়েছে। এখন তারা খুব ভালো আছে।
বয়োবৃদ্ধ প্রতিবেশী এনামুল বলেন, মাসুদ আমার সম্পর্কে নাতি হয়। সে ভারতে কাজ করতে গিয়েছিল। সেখানে একজন মেয়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক হয়। দেশে নিয়ে এসে তাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ে হয়েছে। তারা এখন অনেক সুখে আছে। এটা দেখে খুব ভালো লাগছে। তারা সুখে থাক এই দোয়াই করি।
প্রতিবেশী হাবিবুর রহমান নামে আরও একজন বলেন, আমাদের এলাকা থেকে প্রায়ই লোকজন ভারতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে যান। বর্ডার কাছে হওয়ায় তারা অবৈধভাবে যাতায়াত করেন। মাসুদ তার প্রেমিকাকে ভিসা লাগিয়ে বৈধভাবে নিয়ে আসেনি। কিন্তু আমাদের এখানে ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী বিয়ে হয়েছে।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৫৩ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মনির-উজ-জামান বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবৈধভাবে নাগরিকের থাকার সুযোগ নেই। বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি এবং তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।