শেখ হাসিনা দেশে ফিরলেই ফাঁসিতে ঝুলতে হবে: টুকু

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন রিপোর্ট | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ৩ সপ্তাহ আগে

শেখ হাসিনা কোনো দিন দেশে ফিরতে পারবে না। দেশে ফিরলেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রায় দুই হাজার ছাত্র-জনতা হত্যাকাণ্ডের দায়ে তাকে ফাঁসিতে ঝুলতে হবে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ শহরে গয়লা ঈদগাহ মাঠে শহর বিএনপি আয়োজিত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ সুমন, লতিফ ও রশিদের স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের জন্য আতঙ্ক। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় থেকেছে তখনই মানুষকে অত্যাচার-নির্যাতন, গুম ও খুন করেছে।

তিনি বলেন, ৭১-৭৫ পর্যন্ত অত্যাচার-গুম-খুন করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জে চারটি ক্যাম্প স্থাপন করে অনেক মানুষকে হত্যা করে যমুনা নদীতে ফেলা হয়েছিল। যমুনা নদী কথা বলতে পারলে আজ সব বলে দিতো। এসব কারণে আওয়ামী-বাকশাল নিষিদ্ধ করা হয়েছিল হয়েছিল। আর বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। তাই জিয়াউর রহমান পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের লাইসেন্স দিয়েছিল। তারপর আওয়ামী লীগ রাজনীতি ফিরেছিল। এরপর ক্ষমতায় এসে মানুষে ওপর কী পরিমাণ অত্যাচার-নির্যাতন, দুনীতি-লুটপাট করেছে তা জনগণ ইতোমধ্যে জেনে গেছে।

হাসিনা দেশে ফিরলেই ফাঁসিতে ঝুলতে হবে: টুকু

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ চারিত্রিকভাবে ফ্যাসিস্ট, চারিত্রিকভাবে রক্তপিপাসু ও চারিত্রিকভাবে বিরোধীদল নিধনকারী। তারা একদলীয় শাসন কায়েকম করতে চেয়েছিল। বিরোধীদল নেতাকে দমন করতে হাজার হাজার মিথ্যা মামলা দিয়েছি। সিরাজগঞ্জের প্রতিটি নেতাকে ২০-২৫টি করে মামলা দিয়ে জেল খাটিয়েছে।

তিনি শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বলেন, আবু সাঈদ বুক পেতে গুলি খেয়েছে। টিয়ারশেলের কালো ধোয়ার মধ্যেই পানি পানি বলে গুলি খেয়ে মুগ্ধ মারা গেছে। অনেক নিরাপরাধ শিশু নিহত হয়েছে। গনঅভ্যুত্থানে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করা হয়েছে-এটাই প্রথম বাংলাদেশে হয়েছে। এসব শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে ফ্যাসিষ্টদের ঠাঁই হবে না।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ খালেদা জিয়ার কাছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছিল। খালেদা জিয়া সেই দাবি মেনে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছিল। সেই নির্বাচনে খালেদা জিয়া বিরোধী দল হয়েছিল। কিন্ত তিনি পালিয়ে যাননি। তিনি জনগণের সাথে ছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে একতরফা নির্বাচন করেছে। তার অধীনে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে সব অবৈধ। জনগণ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি।

ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, সিরাজগঞ্জের এক রাজার জন্ম হয়েছিল। সেই রাজার নির্দেশে আমাকে সিরাজগঞ্জে আসতে দেওয়া হয়নি। সিরাজগঞ্জে আসলেও গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিল। তার নির্দেশে বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদকে দুবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। আমাকে একবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল।

দুর্নীতির উদাহরণ টানতে গিয়ে তিনি বলেন, সিরাজগঞ্জে একজন স্কুল শিক্ষিকা ১৫শ কোটি টাকার মালিক হয়েছে। একজন চেয়ারম্যান ৫শ কোটি টাকার মালিক হয়েছে। এটা কীভাবে সম্ভব? সব টাকাই জনগণের। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, আপনাদের নেত্রী আর কোনো দিন আসবে না। তাই ওতোগোতে থেকে মিছিল করার চেষ্টা করবেন না। কারো বাড়িতে হামলার চেষ্টা করবেন না। মনে রাখবেন এখন পুলিশ আপনাদের সাথে থাকবে না। জনগণ আপনাদের প্রতিহত করবে। জনগণর হাতে পড়লে মাংস-হাড্ডি আলাদা করে দেবে।

ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আমাকে মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আদালতের বিচার হাসিনার মনপুত হয়নি। তাই আরেকটি কোর্টে মামলা দিয়ে আমাকে সাজা দেওয়া হয়েছিল। আমিও আল্লাহকে বলেছিলাম হাসিনার জেলে আমি জেল খাটব না-প্রয়োজনে আমার লাশ দেশে যাবে। আল্লাহ দোয়া কবুল করেছে। আজ সেই হাসিনার বিরুদ্ধে সত্য কথা বলার জন্য আমাকে আল্লাহ তায়ালা দেশে এনেছে।

সমাবেশে শেষে তিনি তিনজন শহীদ পরিবারকে ১ লাখ টাকা করে অনুদান প্রদান করেন।