বিশ্বজুড়ে কমছে ফেসবুকের ব্যবহার

::
প্রকাশ: ২ years ago
জাকারবার্গ

পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক: 
দিনকে দিন জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে মার্ক জাকারবার্গের ফেসবুক। বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও তার প্রতিষ্ঠান মেটা হারাচ্ছে গ্রহণযোগ্যতা। মেটার অবস্থা এতটাই শোচনীয়, প্রশ্ন উঠছে ফেসবুক না থাকলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিকল্প ব্যবস্থা কী তা নিয়ে।

এক দশক ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক রকমের একাধিপত্য চালিয়ে এসেছে ফেসবুক। কিন্তু গত বছর থেকে চলতি বছরে এক রকমের চ্যালেঞ্জিং সময় কাটাচ্ছে ফেসবুক। ফেসবুকের জায়গা দখল করে নিচ্ছে টিকটকের মতো অ্যাপগুলো।

এক বছর আগে ফেসবুক নিজের নাম পরিবর্তন করে মেটাভার্সের সঙ্গে মিলিয়ে মেটা রাখে। সে সময় ধারণা করা হয়েছিল, বড় রকমের কিছু একটা করতে যাচ্ছেন জাকারবার্গ। বিনিয়োগকারীরাও আকৃষ্ট হচ্ছিলেন জাকারবার্গের মেটার প্রতি।

কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই মেটার জনপ্রিয়তা হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। চলতি মাসে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দিনকে দিন মেটার ব্যবহারকারীর সংখ্যা ও বিজ্ঞাপন কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ সমানুপাতিক হারে কমছে। এরই মধ্যে মেটার শেয়ারের দাম কমেছে ৬০ শতাংশ; যা আধা ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি লোকসানের কারণ।

খুব জলদি যে মেটার দরপতন কমছে এমন কোনো আভাসও পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে মেটার শেয়ারের দাম আরও কমবে। ধারণা করা হচ্ছে, দাম কমে ৫০ শতাংশে নেমে আসবে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মেটার শেয়ার বিক্রি করতে শুরু করেন বিনিয়োগকারীরা। মূলত ফেসবুকের ব্যবহারকারী কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। টানা ১৮ বছর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একরকমের আধিপত্য চালানোর পর, বর্তমানে ঝিমিয়ে পড়েছে মেটা। যদিও হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রামে মেটা ব্যবহারকারীদের সংখ্যা বেড়েছে, তবে এদের সিংহভাগই গরিব দেশ থেকে হওয়ায় বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলো তাদের পণ্য বিক্রি করতে মেটার ওপর ভরসা করতে পারছে না।

কেবল শেয়ারের দামই নয়, মেটার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কমতে শুরু করেছে কোম্পানিটির রাজস্বের পরিমাণ। বলা হচ্ছে, ভুল বাণিজ্য নীতি, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি ও রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের সরাসরি প্রভাব পড়েছে মেটার ওপর।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ফেসবুকের পতন ঘটলে ব্যবহারকারীরা কোন মাধ্যমগুলোতে ঝুঁকবে। মূলত ভিডিও কিংবা রিলের জন্য ইতোমধ্যে তরুণরা ফেসবুকের থেকে টিকটককে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। ছবি পোস্টের জন্য মেটারই অঙ্গ সংগঠন ইনস্টাগ্রামকে বেছে নিচ্ছেন ব্যবহারকারীরা।

এদিকে ব্যক্তিগত ম্যাসেজিংয়ের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামের মতো অ্যাপগুলো জনপ্রিয় হচ্ছে দিনকে দিন। স্ট্যাটাসের মাধ্যমে মতামত শেয়ারের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীরা বেছে নিচ্ছেন টুইটারকে। বিশেষ করে ইলন মাস্ক টুইটারকে সুপার অ্যাপ হিসেবে ঘোষণা দেয়ার পর অনেকেই ভাবছেন এবার টুইটার বড় রকমের একটি সাড়া ফেলতে পারবে।

এর মধ্যে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বার্তা সংস্থা ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিলিয়নিয়রদের মধ্যে এত দ্রুত কারও সম্পত্তি কমেনি, যতটা জাকারবার্গের কমেছে।

গত বছর সেপ্টেম্বরেও জাকারবার্গের সম্পত্তির আর্থিক মূল্য ছিল ১৪২ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে মাস্কের সম্পত্তির এ মূল্য কমে হয়েছে ৩৮ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার। শীর্ষ ধনীর তিন নম্বরে থাকা জাকারবার্গ নেমে এসেছেন ২৮ নম্বরে। এখন দেখার পালা জাকারবার্গ ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবেন, নাকি মেটা ডুবে যাবে অতল গহ্বরে।