যে কারণে মেয়র-চেয়ারম্যানদের অপসারণ, জানালেন উপদেষ্টা

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন রিপোর্ট | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ৩ মাস আগে

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এবং একটি সিস্টেমের পরিবর্তনের জন্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে জনপ্রতিনিধি সরিয়ে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে এসব কথা জানান তিনি।

এ এফ হাসান আরিফ বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে, যারা রাষ্ট্রের সংস্কার চায়। তাই স্থানীয় সরকারের সব প্রতিষ্ঠানগুলোতে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

এ জন্য তাদের প্রত্যেককে অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

তবে কাউন্সিলরদেরও অপসারণ হবে কিনা, তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা

এর আগে, দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়র, ৬০ জেলা পরিষদ, ৪৯৩ উপজেলা পরিষদ, ৩২৩টি পৌরসভার চেয়ারম্যানদের অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে সবগুলো প্রতিষ্ঠানে প্রশাসক নিয়োগের আদেশও জারি করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, কতদিনের জন্য প্রশাসক নিয়োগ হলো সেটার কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নিয়োগ হবে কিনা তা পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ধারাবাহিকভাবে কাজ করবো। এখানে মার-মার কাট-কাটের কোনো বিষয় নেই। এটি সমগ্র স্থানীয় সরকারকে পরিচ্ছন্ন করার একটি প্রচেষ্টা।

স্থানীয় সরকার (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’ এর ধারা ১৩ক প্রয়োগ করে প্রথম প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশের সিটি করপোরেশন সমূহের মেয়রগণকে স্ব স্ব পদ থেকে অপসারণ করা হয় এবং একই অধ্যাদেশের ধারা ২৫ক এর উপধারা(১) প্রয়োগ করে দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপনে সিটি করপোরেশনের প্রশাসক নিয়োগ প্রদান করা হয়৷ স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মহ. শের আলীকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, স্থানীয় সরকার বিভাগের মহাপরিচালক মো. মাহমুদুল হাসানকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, খুলনার বিভাগীয় কমিশনারকে খুলনা সিটি করপোরেশন, রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনারকে রাজশাহী সিটি করপোরেশন, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনারকে সিলেট সিটি করপোরেশন, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারকে বরিশাল সিটি করপোরেশন, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ, এইচ, এম কামরুজ্জামানকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) মহাপরিচালককে (অতিরিক্ত সচিব) কুমিল্লা সিটি করপোরেশন, রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারকে রংপুর সিটি করপোরেশন, গাজীপুরের বিভাগীয় কমিশনারকে গাজীপুর সিটি করপোরেশন এবং ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারকে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক করা হয়েছে।

এছাড়াও পৃথক পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করে পৌরসভার মেয়র এবং উপজেলা ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানগণকে অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। তবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণের বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোন স্বিদ্ধান্ত হয়নি। পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে এ ব্যাপারে স্বিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতে পারে৷

ইউপি চেয়ারম্যানদের অপসারণ এখনই নয়
হাসান আরিফ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে এখন হাত দিচ্ছি না। যাচাই-বাছাই করে দেখা যাক সেখানে কার্যক্রম কী রকম আছে, যদি পরবর্তীকালে প্রয়োজন হয় বা প্রয়োজনের তাগিদে কোনো পদক্ষেপ নিতে হয় সেটি নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, দৈনন্দিন যে কাজগুলো নিয়ে প্রত্যেকের আগ্রহের জায়গা ছিল যেমন, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনসহ অন্যান্য যে কাজগুলো দৈনন্দিন করতে হয় সেগুলো যাতে চালু থাকে, গ্রামীণ পর্যায়ে যে উন্নয়ন কার্যক্রম তা যেন চলমান থাকে সেজন্য প্রথম দিকেই স্থানীয় যারা সরকারি কর্মচারি আছেন তাদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করে সেখানে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। জেলা, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদেও প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই সরকার রুটিন সরকার নয়। এটা একটা বিপ্লবের মাধ্যমে ছাত্র-জনতা, সেনা সবার সম্মিলিতভাবে দেশের প্রতিটি জায়গার মানুষের আন্দোলনের ফলে এই সরকার এসেছে। আমরা তাদেরই প্রতিনিধি। ছাত্র-জনতা, সেনার যে দাবি দাওয়া কার্যকরের জন্য আমাদের ওপর বিশ্বাস রেখেছে সেটার আমরা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি।