সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন জানিয়েছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসে যাদের নাম উঠে এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ হলে পিএসসি সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে গত ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিল, তদন্তে এমন প্রমাণ পেলে নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিএসসির ভবনে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা জানান।
প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে সিআইডির হাতে পিএসসির দুই উপ-পরিচালক, এক সহকারী পরিচালকসহ ১৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। জড়িত অন্যদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চলছে বলে সিআইডি জানিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, যে অপরাধ করার অভিযোগ উঠেছে, তা প্রমাণ হলে পিএসসির এখতিয়ারভূত সব ধরনের সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে আমরা প্রস্তুত। এক্ষেত্রে আমরা কাউকে ছাড় দেব না।
একটি বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদনে গত এক যুগ ধরে বিসিএসসহ অন্যান্য নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ প্রসঙ্গে সোহরাব হোসাইন বলেন, টিভিতে প্রচারিত প্রতিবেদনটি তদন্ত কমিটিকে দেওয়া হয়েছে। তারা সবটা নিয়েই তদন্ত করবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘উপ-সহকারী প্রকৌশলী’ পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, তদন্তে এমন প্রমাণ পেলেই নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করা হবে।
এ সময় পিএসসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, ১২ বছর ধরে প্রশ্নফাঁসের কথা বলা হচ্ছে। সেই অভিযোগ এখন প্রমাণ করা সম্ভব নয়। তবে, গত ৫ জুলাই রেলওয়ের যে পরীক্ষা হয়েছে, তার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ প্রমাণিত হলেই সঙ্গে সঙ্গে আমরা পরীক্ষা বাতিল করবো। এটা নিয়ে কোনও সন্দেহ-সংশয় নেই।
এ সময় প্রশ্নপত্র প্রণয়ন থেকে কেন্দ্রে পৌঁছানোর প্রক্রিয়াও তুলে ধরেন তিনি।
এক যুগ ধরে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। আগের পরীক্ষাগুলোর বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে সোহরাব হোসাইন বলেন, এটা কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত হবে। এককভাবে আমি এটা নিয়ে বলতে পারি না। দেখুন, ১২ বছর মানে তিন জন চেয়ারম্যানের মেয়াদকাল। সে সময়ের পরীক্ষায় কী হয়েছে, তা নিয়ে কমিশন সভা সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তাছাড়া আগের পরীক্ষাগুলো বাতিল করাটা আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে কি না, সেটাও আইন-কানুনের বিষয় রয়েছে। হুট করে এটা নিয়ে বলাটা কঠিন।
এদিকে, সকালে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. আজাদ রহমান জানিয়েছেন, সোমবার (৮ জুলাই) রাতে সিআইডির পক্ষ থেকে পল্টন থানায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ১৭ জনকে। আসামির সংখ্যা দেখানো হয়েছে অর্ধশতাধিক।
ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে সরকারি কর্ম কমিশনের যুগ্ম সচিব আব্দুল আলীম খানকে। সদস্য সচিব করা হয়েছে পিএসসির পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুল হককে। এ ছাড়া সদস্য করা হয়েছে পিএসসির পরিচালক দিলাওয়েজ দুরদানাকে।