ঢাকার ৬টি স্ট্রিট ফুডে মিলেছে মাত্রাতিরিক্ত ই-কোলাই

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন রিপোর্ট | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ৬ মাস আগে

চটপটি, আখের রসসহ রাজধানী ঢাকার ছয়টি স্ট্রিট ফুডে মিলেছে মাত্রাতিরিক্ত এশেরিকিয়া কোলাই (ই-কোলাই), সালমোনেলা এসপিপি ও ভিব্রিও এসপিপি ব্যাকটেরিয়া। এসব ব্যাকটেরিয়া ডায়রিয়াসহ মানুষের পেটের পীড়ার বিভিন্ন সমস্যার জন্য দায়ী।

রোববার (৯ জুন) বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) গবেষণার ফল অবহিতকরণ শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য জানানো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড নিউট্রেশন অ্যান্ড এগ্রিকালচার রিসার্চ ল্যাবরেটরির প্রধান ও গবেষণা দলের প্রধান ড. মো. লতিফুল বারি এই তথ্য জানান। বিএফএস-এর প্রশিক্ষণ কক্ষে এ গবেষণা ফল তুলে ধরা হয়। বিএফএস-এর অর্থায়নে মো. লতিফুল বারি ও তার দল এই গবেষণা করেন।

চটপটি, ছোলামুড়ি, স্যান্ডউইচ, আখের রস, অ্যালোভেরা শরবত ও মিক্সড সালাদের ওপর এ গবেষণা চালায় গবেষক দলটি। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৭টি জোন থেকে এসব স্ট্রিট ফুডের ৪৫০টি নমুনা সংগ্রহ করে সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।

গবেষণার ফলে দেখা যায়, গড়ে প্রতি প্লেট চটপটিতে ৭ কোটি ২০ লাখ ই-কোলাই, ৭৫০ সালমোনেলা ও সাড়ে ৭৫০ ভিব্রিও ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। ছোলামুড়িতে ই-কোলাই পাওয়া গেছে ৭ লাখ ৪০ হাজার, সালমোনেলা ২ হাজার ও ভিব্রিও ৩০ লাখ। স্যান্ডউইচে ইকোলাই পাওয়া গেছে ২ হাজার, সালমোনেলা ২ হাজার ও ভিব্রিও ১ কোটি ৬০ হাজার। আখের রসে ই-কোলাই পাওয়া গেছে ৬৫ হাজার, সালমোনেলা ১৭ হাজার ও ভিব্রিও ১৩ হাজার। অ্যালোভেরা শরবতে ই-কোলাই পাওয়া গেছে ৫৬ হাজার, সালমোনেলা ১৮ লাখ ও ভিব্রিও ১৪ হাজার। মিক্সড সালাদে ই-কোলাই পাওয়া গেছে ১৮০০, সালমেনোলা ৫১০ ও ভিব্রিও ৩০০।

গবেষণায় দেখা গেছে, এসব স্ট্রিট ফুড খেয়ে প্রতি ১০ হাজার মানুষের মধ্যে ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়ার কারণে ২ জন, সালমেনোলা ব্যাকটেরিয়ার কারণে ৪ জন ও ভিব্রিও ব্যাকটেরিয়ার কারণে ১ জন অসুস্থ হচ্ছেন।

ঢাকার ৬টি স্ট্রিট ফুডে মিলেছে মাত্রাতিরিক্ত ই-কোলাই

গবেষণা দলের প্রধান মো. লতিফুল বারি বলেন, ‘দূষিত পানি, নোংরা গামছা, অপরিষ্কার হাত, ধুলাবালিময় পরিবেশের কারণে এ ধরনের জীবাণু খাবারে মিশে যাচ্ছে। বিক্রেতাদের স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন সম্পর্কে জ্ঞান ও ধারণা কম থাকায় খাবার ও জুসে জীবাণু ঢুকে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘সড়কের বিভিন্ন খাবার খেয়ে মানুষ ই-কোলাই, সালমেনোলা ও ভিব্রিওর মতো জীবাণুতে সংক্রমিত হচ্ছে। কিন্তু অসুস্থ হচ্ছে না। কেন মানুষ অসুস্থ হচ্ছে না তা জানা যায়নি। এসময় তিনি স্ট্রিট ফুড নিরাপদ করতে বিক্রেতাদের প্রশিক্ষণ ও প্রতিদিন মনিটরিং করার ওপর জোর দেন।’

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জাকারিয়ার সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য ড. মোহাম্মদ মোস্তফা। এসময় ফল নিয়ে আরেকটি গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের হর্টিকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল হাসান এম সোলায়মান।