মোদি যে পাঁচ কারণে হেরে যেতে পারেন

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ৭ মাস আগে

শশী থারুর জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং ভারতের পররাষ্ট্র ও মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। চিন্তাবিদ। বেশ কিছু  যিনি বই লেখেছেন ইংরেজিতে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তার লেখক হিসেবে খ্যাতি ব্যাপক।

তিনি প্রজেক্ট সিন্ডিকেটে একটি মতামত জানিয়েছেন। তার ধারণা মোদি এবার ভারতের নির্বাচনে হেরে যেতে পারেন।

কারণগুলো তুলে ধরা হলো:
চাকরির বাজারে ব্যর্থ মোদি: মোদি আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন চাকরির নতুন নতুন বাজার সৃষ্টি করবেন।  শিক্ষিত কেউ বেকার থাকবে না। এমন আশায়  ২০১৪ সালের পর ২০১৯ সালেও যাঁরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন, তারা হতাশ। কারণ চাকরির নতুন বাজার সৃষ্টি হয়নি।  বেকারত্ব কমেনি। প্রকৃত অবস্থা হলো, ২০১৪ সাল থেকে ভারতের ৮০ শতাংশ লোকের আয় কমতির দিকে রয়েছে। এসব লোকের জিনিসপত্র কেনার ক্ষমতা এবং সঞ্চয় করার ক্ষমতা দুটিই ধসে গেছে।

মুসলিমবিরোধী হাঁকডাক : মোদি হিন্দুত্ব জাতীয়তাবাদী লেবাস পরে ‘সাধু’পুরুষ সেজে থাকতে চাইলেও সেটা যে ভন্ডামি সেটি অনেক ভোটারই বুঝতে পারছেন। মোদি বলেছেন, কংগ্রেস পার্টির ইশতেহারে ‘মুসলিম লিগের সিল লাগানো আছে’। গত মাসে একটি নির্বাচনী প্রচারণা সভায় মোদি কোনো রকম রাখঢাক না করেই বলেছেন, কংগ্রেস পার্টি সরকার গঠন করলে সেই সরকার হিন্দুদের জমিজমা, সহায়-সম্পত্তি সবকিছু মুসলমানদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে দেবে। একজন প্রধানমন্ত্রী হয়ে তার এমন বক্তব্য শুধু মুসলিমদেরই নয় , ভারতে যারা অসাম্প্রদায়িক চিন্তাচেতনার অপরাপর গোষ্ঠির মানুষ তাদেরও হতাশ করেছে।

ক্লিন ইমেজ প্রশ্নবিদ্ধ: মোদি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ বহু। বড় বড় শিল্পগোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া এগুলো ওপেন সিক্রেট। কৃষকদের প্রতি অবিচার করেছেন। কৃষকরা আত্মহত্যা করেছেন অতীতে।

ম্যানুফ্যারচারিং ইস্যু নেই এবার : ২০১৯ সালের নির্বাচনের মাস কয়েক আগে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদ জম্মু–কাশ্মীরে একটি সামরিক বহরে হামলা চালানোর পর সেই ঘটনাকে ভোটের মাঠে বিজেপি কাজে লাগিয়েছিল। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। এবারের নির্বাচনে ভোটারদের আচ্ছন্ন করার মতো সে ধরনের কোনো ঘটনা নেই।

অন্য দলের প্রতি সহিংস মনোভাব: কংগ্রেসের মতো বড় ও পুরনো দলের প্রতি আচরণ ভাল করেননি মোদি।  দলটির ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো জব্দ করা হয়েছে। একটি লুটের মামলার অনুসন্ধান কাজের অংশ হিসেবে গত মাসেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর হেলিকপ্টারে তল্লাশি করা হয়। একই আচরণ করা হয় আম আদমি পার্টির ক্ষেত্রে।  দলটির প্রধান ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে  কোনো রকম অভিযোগ ছাড়াই প্রায় এক বছর কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছে। অন্যদিকে অন্ধ্র প্রদেশের তেলেগু দেশম পার্টি এসব দলের একটি। বছর কয়েক আগে লোকসভায় তারা মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল এবং দলটির নেতা মোদির তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। কিন্তু এখন আচমকা তাদের সব কসুর মাফ করে দেওয়া হয়েছে। এই কসুর মাফ করা যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এটা ভোটাররা বুঝতে পারছেন।