ত্রাণভাণ্ডারের শাড়ি দুই বন্ধুর স্ত্রীকে উপহার দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট ও মাধবপুর) আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক ওরফে ব্যারিস্টার সুমন।
জানা গেছে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৪০০টি শাড়ি, ৪৮টি থ্রি-পিসসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক বরাদ্দ পান হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক। যা ছিল তার নির্বাচনি এলাকার গরিব ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য। সেখান থেকে সুমন তার এসএসসি-৯৫ ব্যাচের আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের গাদি শাইল গ্রামের পশু চিকিৎসক আব্দুল মুকতি ও গেরারুক গ্রামের মো. সানু মিয়ার স্ত্রীকে শাড়ি দেন। এরপর তার বন্ধু সানু আহমেদ ও আব্দুল মুকতি এ শাড়ি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন, যা সমালোচনার ঝড় তুলেছে।
সানু আহমেদ তার পোস্টে লিখেছেন, ব্যারিস্টার সুমনের দেওয়া আমার বউয়ের জন্য যাকাতের সুতি শাড়ি, যার বাজার মূল্য প্রায় ২৮০ টাকা। পিএস সোহাগের কারসাজি। আমার বউ এসব শাড়ি পরে না। আগামীকাল একজন অসহায় মানুষ দেখে শাড়িটি দিয়ে দিব। আর দুলালের কথায় কেন ৯৫ বন্ধু শুনতে হবে!?
অপর বন্ধু আব্দুল মুকতি লিখেছেন, ঈদের আগের রাত ১২টার সময় আমার বউয়ের জন্যে শাড়িটি পাঠাইছে ব্যারিস্টার সুমন, উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী রায়হানের মাধ্যমে। তবে ব্যারিস্টার সুমন হয়তো জানে না, সেটা নিখুঁত পরিচালনা করেছে পিএস সোহাগ। বাড়িতে নিয়ে খুলে দেখি, এটা যাকাতের শাড়ি, ততক্ষণাৎ ফেরত পাঠানোর কোনো ব্যবস্থা না না-পেয়ে, যাদের জন্য যাকাত খাওয়া প্রযোজ্য এমন একজন অসহায় মহিলাকে দান করে দিলাম। যারা আমার পোস্টে নেগেটিভ কমেন্ট করেছেন, তাদের কাছে বলছি, চোখের পানি আর বুক ফাটা কান্না কি এমনি এমনি আসে!?
এরপর ওই পোস্টে নানা ধরনের মন্তব্য শুরু হয়। শফিকুর রহমান সাপু নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, শুরুতেই এ অবস্থা না জানি ৫ বছরে কি হবে।
রিপন আমিন লিখেছেন, আপনি যথেষ্ট স্বাবলম্বী। যাকাতের শাড়ি কেন আপনার বউ পাবে? আপনিই বা কেন নিতে যাবেন? আপনার কি ভাবির জন্য শাড়ি কেনার তৌফিক নেই। দামী শাড়ি হলে বিষয়টা সোস্যাল মিডিয়ায় না এনে নীরবে ভাবিকে গিফট করতেন। এখানে দু’জনই সমান অপরাধী। আপনি কেন নিলেন? সোহাগ ভাই কেন দিলেন?।
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক গণমাধ্যমে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে গত ২০ বছর আমার আসনের কোনো সংসদ সদস্য তা প্রকাশ করেননি। এবার প্রথম আমি এই তালিকা জনগণের মধ্যে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রকাশ করি। প্রধানমন্ত্রীর এ উপহার আমার দুই উপজেলায় বিতরণের জন্য যাদের দায়িত্ব দেই, তাদের একজন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে চান। তিনি তার এক বন্ধুর স্ত্রীকে এ শাড়ি বিলি করেন। আবার তারাই একই শাড়ি অন্যজনকে দিয়ে ফেসবুকে এ প্রচারণা চালান। প্রকৃত বিষয় হচ্ছে, একটা পক্ষ আছে, যারা আমার ত্রুটি খুঁজে বেড়ায়। এ পক্ষই এখন এ শাড়ি নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।