ভরদুপুরে নামবে রাতের অন্ধকার, যেভাবে দেখবেন পূর্ণগ্রাস

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন রিপোর্ট | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ৭ মাস আগে

আজ সোমবার (৮ এপ্রিল) বিরল পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বিশ্ব। এদিন ভরদুপুরে চাঁদের ছায়া সূর্যকে প্রায় চার মিনিট সম্পূর্ণ ঢেকে রাখবে।

ব্রহ্মাণ্ডের এই প্রাকৃতিক ঘটনায় চাঁদ যখন পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে চলে আসবে, সে সময়ে চাঁদের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় দুই হাজার ৪০০ কিলোমিটার।

নাসা বলছে, আগামী ৮ এপ্রিল মেক্সিকোর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৭ মিনিটে প্রথম সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। এছাড়া আমেরিকা, কানাডা ও মেক্সিকো, পশ্চিম ইউরোপ প্যাসিফিক, আটলান্টিক, আর্কটিক, আয়ারল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডের উত্তর পশ্চিম অঞ্চল থেকেও মহাজাগতিক এ দৃশ্য দেখা যাবে। তবে বাংলাদেশ থেকে এ পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে না।

এবারের এই পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণে চাঁদ সূর্যকে চার মিনিটের জন্য পুরোপুরি ঢেকে ফেলবে। এ সময় দিন হবে রাতের মতো অন্ধকার। ফলে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, এইদিন গ্রহণ অঞ্চলে শতাধিক গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এবং এইসব দুর্ঘটনায় মারা যেতে পারেন সহস্রাধিক মানুষ। এমনকি এর ফলে বেশকিছু রাজ্যের স্কুল এরইমধ্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মেক্সিকোর স্থানীয় সময় বেলা ১টা ৩০ মিনিটে গ্রহণ শুরু হয়ে ধীরে ধীর সূর্যকে ঢাকতে থাকবে চাঁদ। তবে পূর্ণগ্রাস শেষ হবে ৩টা ৩৫ মিনিটে। প্রায় চার মিনিট স্থায়ী হতে পারে মহাজাগতিক ঘটনাটি। এ ধরনের বিরল আরেকটি ঘটনা দেখতে মানবজাতিকে অপেক্ষা করতে হবে ২০৪৪ সাল পর্যন্ত।

যুক্তরাষ্ট্রে সবশেষ সূর্যগ্রহণ ছিল ২০১৭ সালে। মাত্র সাত বছরের ব্যবধানে আরেকটি পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ অস্বাভাবিক বলছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০১৭ এর আগে সূর্যগ্রহণ ঘটেছিল ১৯৭৯ সালে এবং যুক্তরাষ্ট্রে পরের সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে ২০৪৪ সালের আগস্টের পর।

পূর্ণগ্রাস গ্রহণ কেন বিরল? যেভাবে দেখবেন
বছরের প্রথম সূর্যগ্রহণ। চাঁদের ছায়ায় সম্পূর্ণ ঢাকা পড়ে যাবে সূর্য। দিনের বেলায় ঘনিয়ে আসবে আঁধার। সেই দৃশ্য দেখার জন্য মুখিয়ে আছেন অনেকেই। তবে সূর্যগ্রহণটি বাংলাদেশ থেকে দেখা যাবে না। গ্রহণ দেখতে পাবেন আমেরিকা, কানাডা-সহ পৃথিবীর অপর প্রান্তের মানুষ।

সোমবার যে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ হতে চলেছে, তার বিশেষত্ব রয়েছে। যে কারণে অনেকে একে বিরল বলেও অভিহিত করছেন। কারণ, এই ধরনের গ্রহণ সচরাচর দেখা যায় না।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সোমবারের গ্রহণের বিশেষত্ব হল এর স্থায়িত্ব। অপেক্ষাকৃত বেশি সময় ধরে এই গ্রহণ স্থায়ী হবে। টানা চার মিনিট চাঁদের ছায়ায় সম্পূর্ণ ঢেকে থাকবে সূর্য, যা গত ৫০ বছরে কখনও কোনো গ্রহণেই হয়নি। গ্রহণের সময়ে ওই চার মিনিট ধরে সূর্যের বাহ্যিক স্তর করোনার আভা স্পষ্ট দেখা যাবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

বিরল এই গ্রহণ দেখতে আগ্রহীদের ভিড় বাড়ছে বিভিন্ন এলাকায়। সোমবার সর্বপ্রথম গ্রহণ দেখা যাবে উত্তর আমেরিকার মেক্সিকো থেকে। মেক্সিকোর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ০৭ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ০৭ মিনিট) গ্রহণ দেখা যাবে। ক্রমে তা দেখা যাবে আমেরিকার টেক্সাস, ওকালহোমা, আরকানসাস, মিসৌরি, ইন্ডিয়ানা, ওহায়ো, পেনসিলভানিয়া, নিউ ইয়র্ক, নিউ হ্যাম্পশায়ার এবং মিশিগানে। কানাডা থেকেও গ্রহণ দেখা যাবে। কানাডার দক্ষিণ ওন্টারিয়ো, কিউবেক, প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ডে গ্রহণ দেখা যাবে। স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১৬ মিনিটে গ্রহণ শেষ হবে।

যে সময়ে গ্রহণ হবে, বাংলাদেশে তখন রাত। তাই আকাশে সূর্য বা তার গ্রহণ দেখা যাবে না। তবে আগ্রহীরা গ্রহণের সরাসরি সম্প্রচার দেখতে পারবেন পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে বসে। নাসার তরফে সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা থেকে গ্রহণের সরাসরি সম্প্রচার শুরু হবে। তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে গ্রহণ দেখা যাবে।