সাবেক প্রেমিকের সাথে বিয়ে পূর্ববর্তী অন্তরঙ্গ সম্পর্কের ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে প্রকাশের ঘটনায় ‘বিচার না পেয়ে’ হামিদা আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের টেকেরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
হামিদা মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের টেকেরহাট এলাকার হালিম ঢালীর মেয়ে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবারের বরাতে জানা গেছে, ৯ বছর আগে শরীয়তপুরের তুলসির চর এলাকার আশরাফ খানের ছেলে শামীম খানের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয় থেকে প্রেম হয় হামিদার। পরে দুজনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়। এক সময় শামীম খানের সঙ্গে হামিদা আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যায়। এরপর, সিলেটের লিটন হোসেন নামের আরেক তরুণের সাথে তার মোবাইল ফোনে প্রেম হয়। পরবর্তীতে লিটনকে বিয়ে করে সংসার করতে শুরু করেন হামিদা। বিয়ের পরেই হামিদার একটি ছেলে সন্তান হয়, যার বয়স ৮ বছর। বর্তমানে হামিদার স্বামী লিটন হোসেন সৌদি আরব থাকেন। এই সুযোগে শামীম খান পুনরায় হামিদার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে। শামীম হোসেন হামিদার অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও সৌদি প্রবাসী স্বামী লিটনের কাছে পাঠায়। এতে হামিদার সাথে লিটনের দাম্পত্য জীবনে চরম অশান্তি দেখা দেয়।
এ ঘটনার পরে নিহত গৃহবধূ থানায় মামলার চেষ্টা করলেও পুলিশ মামলা নেয়নি বলে পরিবারের অভিযোগ।
নিরুপায় হয়ে হামিদা ১৮ ডিসেম্বর মাদারীপুর আদালতে শামীমের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তু মামলা দায়েরের পরে শামীম খান আরও ক্ষিপ্ত হয়ে হামিদা ও তার স্বামী লিটনের সাথে পুরনো সম্পর্কের বিষয় নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় মঙ্গলবার বিকেলে বিষপান করেন হামিদা। পরে গুরুতর অবস্থায় মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত হামিদার ছোট বোন হালিমা আক্তার বলেন, আমার বোনের সাথে বিয়ের আগে শামীমের ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের বিষয় নিয়ে আমার দুলাভাই ও বোনকে নানা ধরনের হুমকি-ধমকি শামীম দিয়ে আসছিল। শামীমের কারণেই আমার বোনকে মরতে হয়েছে। আমরা এই মৃত্যুর বিচার চাই। গতকাল কোর্টে আমার বোন শামীমের বিরুদ্ধে মামলা করায় সে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ওর জন্যই আমার বোন মারা গেছে।
এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, নিহত হামিদা আদালতে একটি মামলা দায়ের করার পরের দিনই আত্মহত্যা করেছেন। আমরা লাশ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। মৃত্যুর কারণ উদঘাটনের জন্য তদন্ত করছি। তদন্ত প্রতিবেদন পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পারব।