৩১৪ চরমপন্থী পেল প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তা

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ১ বছর আগে

সিরাজগঞ্জে আত্মসমর্পণের মাধ্যমে আলোর পথে ফিরে আসা ৭ জেলার ৩১৪ জন চরমপন্থী পেলেন প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তা। প্রত্যেককে এক লাখ করে টাকা দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে র‌্যাব-১২ সিরাজগঞ্জ সদর দপ্তরে সিইও মো. মারুফ হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে অনুদানের চেক বিতরণ করেন র‌্যাবের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত আইজিপি) এম. খুরশীদ হোসেন।

র‌্যার-১২’র সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া অফিসার) মো. উসমান গনি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, রাজবাড়ী ও টাঙ্গাইল জেলার ৩১৪ জন্য চরমপন্থী সদস্যদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে বিতরণ করা হবে। এদের মধ্যে কেউ কেউ জামিনে এবং কেউবা জেলে রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, মার্কস-লেলিন ও মাওবাদী আদর্শের নামে সক্রিয় ১৪টি চরমপন্থী সংগঠনের দাপটে ত্রাস বিরাজ করছিল উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। এর মধ্যে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি এম এল (লাল পতাকা), পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টি (এমবিআরএম) ও পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টি (জনযুদ্ধ) অন্যতম। চরমপন্থী শীর্ষ নেতারা তরুণ সমাজকে ভুল বুঝিয়ে দলে টানে এবং সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে প্রকাশ্যে সশস্ত্র মহড়া দিয়ে আলাদা রাজত্ব কায়েম করতো।

র‌্যাব-১২’র সদর দপ্তরের মাধ্যমে জানা যায়, ২০২০ সালে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জনপদকে চরমপন্থীদের আগ্রাসন থেকে রক্ষায় তাদের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। র‌্যাবের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকা বেশ কয়েকটি সক্রিয় দলের নেতা প্রায় তিন শতাধিক সদস্য ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ ২১ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে আত্মসমর্পণ করেন।

আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থী সদস্যদের পুনর্বাসনের জন্য আর্থিক সহযোগিতার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করেন র‌্যাব মহাপরিচালক। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি বিবেচনা করে তার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে প্রতিজনকে এক লাখ করে টাকা মোট ৩ কোটি ১৪ লাখ টাকার অনুদান মঞ্জুর করেন। প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের চেক হাতে পেয়ে আবেগে আপ্লুত চরমপন্থী সদস্যরা। তারা প্রধানমন্ত্রী ও র‌্যাব সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন।

আত্মসমর্পণকারী দলের সদস্য সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার শামসুল হক, আল-আমিন, জামাল, বেলকুচির আব্দুর রহমান ও বগুড়ার গোলাম রব্বানী জানান, আত্মসমর্পণের পর তারা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার চেষ্টা করছেন।
এদের অনেকেই বর্তমানে সিএনজি, অটোরিকশা, ওয়ার্কশপ, কৃষিকাজ ও মুদি দোকান দিয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে স্বাভাবিকভাবে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থী দলের নেতা মোহাম্মদ সাধু বলেন, বর্তমানে পুলিশের ভয় ও প্রতিপক্ষের ভয়ে পালিয়ে বেড়াতে হয় আমাদের। স্বাভাবিক জীবনে অনেক শান্তি। পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করলে কোনো চিন্তা নেই। সত্যিই এতদিন আদর্শের নামে অন্ধকার পথে ছিলাম আমরা। র‌্যাব আমাদের আলোর পথে নিয়ে এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী অনুদান দেওয়ায় ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তারা।