১০ ডিসেম্বরে সফলতা কার কত?

::
প্রকাশ: ২ years ago

এমদাদুল হক:
১০ দফা দাবি নিয়ে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির পূর্বঘোষিত শুধুমাত্র একটা বিভাগীয় সমাবেশ ছিলো। এটা কোনো জাতীয় সমাবেশ ছিলো না। এবং তারা আগে থেকেই বলে আসছিলো ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ থেকে তারা যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা ঘোষণা করবে। অনেক নাটকীয়তার মধ্যে শত বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে তারা সমাবেশ করেছে এবং সেটা নিজেদের পছন্দের গোলাপবাগ মাঠে, পূর্বাচল কিংবা কালসীতে নয়।

আগে থেকেই বলা হচ্ছিল খেলা হবে, খেলা হবে। কিন্তু দেখা গেলো খেলার আগেই মূল খেলোয়াড়দের গ্রেফতার করে খেলার মাঠ নেতৃত্বশূন্য করা হলো। মাঠে দু’পক্ষ না থাকলে খেলা হয় কীভাবে?

বিশ্বকাপের উন্মাদনাকে চাপিয়ে আলোচনার শীর্ষে ছিল বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ। বিএনপি নয়াপল্টন ঘিরে গণমাধ্যমে কভারেজ এবং আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ পাওয়া শুরু করলো সমাবেশ শুরুর দুতিনদিন আগে থেকে। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে মোটাদাগে লাগাতার কভারেজও পাচ্ছে এখন বিএনপি।

১০ ডিসেম্বর তাদের চুড়ান্ত আন্দোলন নয় সেটা বিএনপি নেতারা আগেই বলেছিলেন। তবুও তাদেরকে এতো বাঁধা দিয়ে কী লাভ হলো?

বিএনপির কতটুকু লাভক্ষতি হয়েছে সেই হিসাব করার সময় এখনো আসেনি। সেটা তাদের ধারাবাহিক যুগপৎ আন্দোলনের পরে দেখা যাবে। তবে শুধুমাত্র ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে সফলতার হিসাব কষলে বিএনপির প্রত্যাশার চেয়ে প্রাপ্তিটাই বেশি হয়েছে বলবো।

নয়া পল্টনে সমাবেশ করলে শুধুমাত্র রাস্তার ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশ হতো। কিন্তু গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ করতে পারায় মাঠের ছবি এবং রাস্তার ছবি গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক বড় আকারে প্রকাশ পেয়েছে। তাছাড়া নয়াপল্টন সহ আশপাশের রাস্তাগুলো একাধিক দিন বন্ধ থাকায় মানুষের ভোগান্তির কথাও এসেছে গণমাধ্যমে।

১০ ডিসেম্বর ছিল বিএনপির একক আন্দোলন। ধারাবাহিক বিভাগীয় সমাবেশের অংশ হিসেবে সর্বশেষ একটা বিভাগীয় সমাবেশ। আগামীর যুগপৎ আন্দোলন কেমন হবে সেটা নিশ্চই অনুমেয়। তবে অন্য সব বিভাগীয় সমাবেশের চেয়ে ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ বিএনপির জন্য একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। সেই চ্যালেঞ্জ তারা মোকাবেলা করেছে কোনো নেতৃত্ব ছাড়াই বলা চলে। যেখানে একদিকে ছিল সকল ক্ষমতাসীন শক্তি এবং অন্যদিকে লন্ডনের ইশারার শক্তি।

ইতিহাস সবসময় বিজয়ের পক্ষে কথা বলে। বাঁধা দিয়ে যদি সমাবেশ বন্ধ করা যেতো তাহলে নিশ্চই বিএনপি পরাজিত বলা যেতো। যেই বাঁধা দিয়ে আন্দোলন ঠেকানো যায়না সেই বাঁধা তৈরি করার কোনো মানে নাই। বরং বাঁধা ভেঙে সফল হওয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরা কয়েকগুণ বেশি উজ্জীবিত হয়েছে নিশ্চই। বাঁধা ভেঙে আন্দোলন সফল করা যায় এটাও বুঝে গেছে তারা।

তবে বাঁধার সম্মুখীন না হলে বিএনপি হয়তোবা এতোটা সফল হতে পারতোনা। এজন্য ক্ষমতাসীন দলকে বিএনপির ধন্যবাদ জানানো উচিত।

 

লেখক: ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক