রাজধানীতে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বেড়েছে। আজ ভোররাত থেকেই আকাশ ছিল মেঘলা।
শনিবার (২৯ জুন) রাত থেকেই থেমে থেমে হালকা বৃষ্টি হলেও, সকাল ১০টার পর ঝুম বৃষ্টি হয়। এতে অনেক স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন কর্মজীবী মানুষ।
এদিকে দেশের ১০টি অঞ্চলে রয়েছে ঝড়ের শঙ্কা৷ তাই সে সকল এলকার নদীবন্দরে তোলা হয়েছে এক নম্বর সংকেত। অন্যদিকে সমুদ্রবন্দরগুলোতে বলবৎ রাখা হয়েছে তিন নম্বর সংকেত।
সহকারী আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা জানিয়েছেন, খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পুর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কি.মি. বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা-ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে তিনদিনের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রোববার (৩০ জুন) সকাল পর্যন্ত রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
রোববার সকাল থেকে সোমবার (০১ জুলাই) সকাল পর্যন্ত রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সে. হ্রাস পেতে পারে।
সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার (০২ জুলাই) সকাল পর্যন্ত রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিবজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
বর্ধিত পাঁচ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে, বৃষ্টিপাত কমায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর পানি কমছিলো গত কিছুদিন ধরে। তবে জুলাইয়ের প্রথম দিকে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নদীর পানি বেড়ে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বন্যার মধ্যমেয়াদি পূর্বাভাস সম্পর্কিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্যানুযায়ী, মৌসুমি বায়ু দেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। ফলে দেশের অভ্যন্তরে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা অববাহিকার উজানের কিছু স্থানে বিভিন্ন সময়ে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে মাঝারি থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রধান নদ-নদীগুলোর ২৮ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত আগামী ১০ দিনের নদী-অববাহিকা ও অঞ্চলভিত্তিক বন্যা পরিস্থিতির সম্ভাব্য অবস্থা নিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
এর আগে, গত ১৬ জুন থেকে সৃষ্ট বন্যায় বিপাকে পড়েছিল সুনামগঞ্জের মানুষ। উজানের পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিপাতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছিল প্রায় ১০ লাখ মানুষ। বন্যার পানি এখন কমে গেলেও নতুন করে আবারও বন্যার পূর্বাভাসে জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, আগামী দু-দিন মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এতে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করবে। বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও ততটা ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা নেই।