১৫৫ দিন পর বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া

::
প্রকাশ: ১১ মাস আগে

গত ৯ আগস্ট শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তে এভারকেয়ার হাসপাতাল ভর্তি হন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। টানা ৫ মাস ২ দিন চিকিৎসা শেষে চিকিৎসকদের পরামর্শে তিনি হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় তিনি রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতাল থেকে তার গুলশানের বাসভবন ফিরোজার উদ্দেশে রওনা করেন।

দুপুর থেকে তাকে দেখার জন্য ও তার খবর নেওয়ার জন্য কয়েক হাজার নেতাকর্মী বসুন্ধরার এভার কেয়ার হাসপাতালের সামনে জড়ো হয়েছেন। নেতাকর্মীদের ভিড়ের কারণে বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহর হাসপাতাল এলাকা ছাড়তে বেগ পেতে হচ্ছে।

বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের সঙ্গে আছেন বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

এদিকে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় উপস্থিত রয়েছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও বেগম সেলিমা রহমান।

গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট, চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন। তার হার্টে তিনটি ব্লকের মধ্যে একটিতে রিং পরানো হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কয়েকবার তাকে কেবিন থেকে সিসিইউতে নেওয়া হয়েছিল।

খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে তার পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি মেলেনি। এমন পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে এনে খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস আক্রান্ত রক্তনালীতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রে থেকে আসা চিকিৎসকরা হলেন- ডা. হামিদ আহমেদ আব্দুর রব, ডা. ক্রিসটোস স্যাভাস জর্জিয়াডেস ও ডা. জেমস পিটার অ্যাডাম হ্যামিলটন। তারা তিনজনই বিশ্বখ্যাত মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় জনস হপকিন্সের চিকিৎসক।

বর্তমানে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য অনেকটা স্থিতিশীল, তাই তাকে বাসায় নেওয়া হচ্ছে বলে জানান চিকিৎসকেরা।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন গতকাল বুধবারই জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে খালেদা জিয়াকে বাসায় নেওয়া হবে। মেডিকেল বোর্ড তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

৭৮ বছর বয়সি এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনিসহ নানা রোগে ভুগছেন। এরপর করোনায় আক্রান্ত হওয়াসহ বেশ কয়েকবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি।

খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন। এরপর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে তাকে মুক্তি দিয়েছিল সরকার। তখন থেকে ছয় মাস পরপর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।