সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে গেছে। বুধবার সকাল ৮টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ভোট।
মঙ্গলবার (২০ জুন) সকাল ১১টায় সিলেটের আবুল মাল আব্দুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সাল কাদিরের উপস্থিতিতে নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। পরে সেসব সামগ্রী ভোট কেন্দ্রে নেওয়া শুরু হয়।
ভোটের সরঞ্জামাদি বিতরণকালে নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সাল কাদির বলেন, ‘ভোট শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার এবং আর্মড পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে।’
তিনি জানান, প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুরো নির্বাচনী এলাকায় সাতজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন।
বুধবার অনুষ্ঠেয় সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বর্ধিত ১৫টি ওয়ার্ডসহ ৪২টি ওয়ার্ডে ১৯০টি কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। এবার ৪২ সাধারণ ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন।
এদিকে নির্বাচনে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. ইলিয়াস শরিফ।
তিনি জানিয়েছেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন করতে নগরীতে কাজ করছে প্রায় ২ হাজার ৬০০ পুলিশ সদস্য। মাঠে রয়েছেন ১৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৪২টি ওয়ার্ডে ৪২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। নির্বাচনে কোনো বিশৃঙ্খলা হলে তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা করবেন।
মঙ্গলবার (২০ জুন) সকালে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্সে এক সংবাদ সম্মেলনে এসএমপি কমিশনার এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১জন পুলিশ পরিদর্শক, একজন উপ পুলিশ পরিদর্শক ১ জন ও ৫ জন পুলিশ সদস্য এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডে একজন পুলিশ পরিদর্শক, একজন উপ পুলিশ পরিদর্শক ও ৪ জন পুলিশ সদস্য এবং ৭ জন নারী ও ৭ জন পুরুষসহ মোট ১৪ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রতি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে পুলিশের ৪২টি মোবাইল টিম, প্রতি তিনটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে ১৪টি স্ট্রাইকিং টিম এবং প্রতি থানায় একটি করে ৬টি করে ৬টি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং টিম থাকবে। পাশাপাশি থাকবে ২টি ওয়ার্ডে ১টি করে র্যাবের মোট ২২টি ও ৫টি ওয়ার্ডে এক প্লাটুন করে মোট ১০ প্লাটুন বিজিবির টহল। এ সময় পুলিশ কমিশনার নির্বিঘ্নে ভোটদানের জন্য ভোটারদের প্রতি আহবান জানান।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আটজন, ৪২টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৭৩ জন এবং ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
১৯০টি কেন্দ্রে মোট ভোটকক্ষ রয়েছে ১ হাজার ৩৬৪টি। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের প্রতিটি কক্ষে একাধিক সিসি ক্যামেরা থাকবে।
সিটির ১৯০টি কেন্দ্রের ১৩২টিকেই গুরুত্বপূর্ণ ধরা হয়েছে। ৫১টি মোবাইল টিম, ১৫টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, ছয়টি রিজার্ভ ফোর্স এবং প্রত্যেক জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে ফোর্স থাকবে।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া) সুদীপ দাস এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘কয়েকটি বিষয়কে সামনে রেখে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কেন্দ্রে নিরাপত্তাবেষ্টনী না থাকা, কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে সহিংসতার শঙ্কা, যোগাযোগ বিড়ম্বিত কেন্দ্র, অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার শঙ্কাসহ নানা দিক।
‘‘কেন্দ্রগুলোর দূরত্ব বুঝে চারজন, ছয়জন ও সাতজনের ফোর্স মোতায়েন থাকবে। নির্বাচনী মাঠকে উত্তর ও দক্ষিণ এই দুটি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। উত্তর সেক্টর দায়িত্বে থাকছেন উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ এবং দক্ষিণের দায়িত্বে উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) সোহেল রেজা।’’
উপ কমিশনার সুদীপ দাস আরও বলেন, ‘‘গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণের স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর থাকবেন।’’
সিলেট/ অমিতা সিনহা/ ২০ জুন ২০২৩।