সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমই আমাদের কম সামাজিক করছে

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন রিপোর্ট
প্রকাশ: ১ বছর আগে

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নামে সামাজিক হলেও মূলত এই মাধ্যম আমাদের কম সামাজিক করে ফেলছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘ভয়েস অফ ফ্রিডম’ শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বক্তা ও বিচারকদের মতামতে বিষয়টি উঠে আসে।

আজ মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি ‘ভয়েস অফ ফ্রিডম’ শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অর্থায়নে, ডিনেট এবং ফ্রেডরিক নওম্যান ফাউন্ডেশন ফর ফ্রিডম যৌথভাবে ‘Foster Responsible Digital Citizenship to Promote Freedom of Expression in Bangladesh’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে দায়িত্বশীল ডিজিটাল সিটিজেন হতে সহায়তা করা এবং তাদের মাঝে গঠনমূলকভাবে স্বাধীন মত প্রকাশের চেতনা গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে এই প্রকল্পের সূচনা।

এই প্রতিযোগীতায় প্রতিযোগী অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন বিভাগ থেকে বাছাইকৃত চারটি দলে মোট ১২ জন শিক্ষার্থী এবং দর্শক হিসেবে উপস্থিত ছিল বিভিন্ন বিভাগ থেকে শিক্ষকসহ প্রায় ২০০ জনের অধিক শিক্ষার্থী। দর্শকদের জন্যও সেশনে রাখা হয় আকর্ষণীয় কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন।

ডিনেটের এফআরডিসি প্রকল্প পরিচালক আসিফ আহমেদ তন্ময় বলেন, “আমাদের এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দ্যেশ্য হলো তরুণ সমাজকে ডিজিটাল সিটিজেনশিপ শিক্ষার ধারণাসমূহ ব্যবহার করে অনলাইনে স্বাধীন ও গঠনমূলক উপায়ে মত প্রকাশের মাধ্যমে দায়িত্বশীল হতে সহায়তা করা। এই লক্ষ্যে, নানান পদক্ষেপ ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে এবং সেগুলো সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আজকের এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার মাধ্যমেও তরুণ সমাজ ডিজিটাল সিটিজেনশিপ সম্পর্কে জানতে পারছে। আশা করছি, আমরা শুরু করা এই উদ্যোগ তারা সুষ্ঠু চর্চার মাধ্যমে ভবিষ্যতেও চলমান রাখবে।”

ফ্রেডরিক নওম্যান ফাউন্ডেশন ফর ফ্রিডম এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাইরা নিজাম বলেন, “মুক্তচিন্তার বিকাশ ও ইতিবাচক চর্চার বৃদ্ধিতে এফআরডিসি প্রকল্প বিগত দুই বছর ধরে কাজে করে যাচ্ছে। এই প্রচেষ্টার একটি নতুন অংশ হিসেবে আয়োজিত এই বিতর্ক প্রতিযোগিতা ক্যাম্পাসে ভালো আচরণের সাধু বার্তা ছড়িয়ে দেবে।”

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রবিউল ইসলাম বলেন, “এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে, বিতর্কের মতো এই ধরনের আরও উদ্যোগের মধ্য দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ইতিবাচক আচরণের চর্চা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নিজেরা অন্যদের মাঝে এই শিক্ষাকে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।”

প্রতিযোগিতায় দুই ধাপে বিতর্কের আয়োজন করা হয়। প্রথম ধাপের দুই বিজয়ীর মাঝে চূড়ান্ত পর্বের বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। চূড়ান্ত পর্বের বিষয় ছিলো- ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের কম সামাজিক করে ফেলে।’ প্রতিযোগিতায় তাদের অসাধারণ বাগ্মিতায় বিজয়ী হয়: আসাদুজ্জামান সিয়াম, আব্দুল্লাহ নীল ও মোসাম্মৎ আশরেফা আফরিন নাইচ।

এফআরডিসি প্রকল্পের নানান সচেতনতা কর্মকান্ডের পাশাপাশি রয়েছে একটি বিনা মূল্যের অনলাইন কোর্সের ওয়েবসাইট। ওয়েবসাইট (www.digitalcitizenbd.com) থেকে তরুণ সমাজবান্ধব বিভিন্ন উদ্যোগ যা থেকে শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল সিটিজেনশিপ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষণীয় বিষয় জানতে পারবেন এবং একটি গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে বিশ্লেষণধর্মী চিন্তা চর্চার পদ্ধতি সম্পর্কে জানবেন। যা তাদের ডিজিটাল দুনিয়ায় বিচরণের ক্ষেত্রে আচরণগত পরিবর্তন এনে একজন গর্বিত ডিজিটাল নাগরিকে পরিণত হতে সহায়তা করবে।