সামনে আরও দুর্দিন আসতে পারে: প্রধানমন্ত্রী

:: পা.রি. ডেস্ক | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ১০ মাস আগে
কোটালীপাড়ায় সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, করোনাভাইরাসের কারণে জিনিসপত্রে দাম বেড়েছে। আবার হামলা শুরু হয়েছে। এ জন্য সামনে আরও দুর্দিন আসতে পারে। আমাদের দেশের মাটি উর্বর।

আমাদের মানুষ আছে। এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। সঙ্গে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল পালন করতে হবে। আমাদের খাদ্য আমাদের উৎপাদন করতে হবে।’

রোববার (১৪ জানুয়ারি) বিকালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যতোবার নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছে বাংলাদেশের মানুষ তাতে সাড়া দেয়নি। দৃষ্টান্ত হচ্ছে ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন। খালেদা জিয়া নির্বাচন করেছিল ক্ষমতায় থেকে। সেখানে কিন্তু দেশের সমস্ত প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী সবাইকে নামিয়ে দিয়ে নির্বাচন করা হয়। কিন্তু সেখানে ভোটার যায়নি। সিল মেরে বাক্স ভরে ভোট নেওয়ার পরেও মাত্র ২১ পার্সেন্ট ভোট হয়েছিল। জনগণ কিন্তু মেনে নেয়নি তার ভোট চুরি। যে কারণে আন্দোলন হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হলো। ৩০ মার্চ খালেদা জিয়া পদত্যাগে বাধ্য হন। ভোট চুরির অপরাধে নাকে খত দিয়ে খালেদা জিয়ার বিদায়। তারা এখন আন্দোলন করে গণতন্ত্রের জন্য। যারা গণতন্ত্রের ‘গ’ও বোঝে না। তারা গণতন্ত্র বানানও করতে পারবে না। তাদের আন্দোলন হলো মানুষ পুড়িয়ে মারা। তারা জানে জ্বালাও পোড়াও। জীবন্ত মানুষগুলোকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মারা। বাসে আগুন, গাড়িতে আগুন, রেলে আগুন, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে যা করেছে এখন আবার তা শুরু করেছে। এই নির্বাচন ঠেকাও আন্দোলন করতে গিয়ে ট্রেনে আগুন দিয়ে মা-সন্তানকে পুড়িয়ে মেরেছে। এই দৃশ্য কোনো মানুষ সহ্য করতে পারে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে কারণে তারা যতই চিৎকার করুক তাদের কথায় জনগণ সাড়া দেয়নি। যারা এ ধরনের জঘন্য কাজ করেছে তাদের কোনো ছাড় নেই। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো। যারা এ ধরনের কাজগুলো করেছে তাদের খুঁজে খুঁজে বের করে বিচার করবো। ইতোমধ্যে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর যারা হুমুকদাতা, যারা জ্বালাও পোড়াও করার জন্য হুকুম দিয়েছে, তাদেরও আমরা গ্রেপ্তার করছি। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবো, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা বা এ ধরনের জঘন্য কাজ করতে সাহস না পায়।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, ষড়যন্ত্র চক্রান্ত কখনো শেষ হয় না। এই ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’

কোটালীপাড়াবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শক্ত একটা ঘাঁটি আছে বলেই আমি যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে পারি। সেই শক্তি আপনারা দিযেছেন। টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়ার মানুষ আমার বড় শক্তি। বাংলাদেশের মানুষ আমার বড় শক্তি। আগামীতেও বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশের কোনো উন্নতি হয়নি। বাংলাদেশের উন্নতি হয়েছে যখন আওয়ামী লীগ সরকারে এসেছে। ৯৬ সালে প্রথম সরকার গঠন করে মানুষের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করি। স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি করি। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন করি। এরপর ২০০১ সালে আসতে পারিনি। সেটাও একটা চক্রান্ত ছিল। তখন বিএনপির দুঃশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট, মানিলন্ডারিং, গ্রেনেড হামলা, বোমা হামলার কারণে জনগণ তাদের ওপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ে। তাদের দুঃশাসনের কারণে ইমারজেন্সি আসে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে আওয়ামী লীগ সরকারে থাকায় দেশের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সকল ষড়যন্ত্র ভেদ করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সবাই আমরা একসঙ্গে কাজ করে এই বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ করবো ইনশাল্লাহ। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণের জয় হয়েছে। এ জয় গণতন্ত্রের জয়, এ জয় বাংলাদেশের জনগণের জয়। কাজেই বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’