বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা।
তারা বলেছেন, নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠান ব্যতিরেকে অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই তদারকি সরকারের নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করতে হবে। এজন্য আন্দোলনের মাধ্যমে চলমান স্বৈরশাসনের অবসান ঘটাতে হবে।
শুক্রবার (৪ আগস্ট) পল্টনে সিপিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন।
সিপিবি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির সভাপতি জামসেদ আনোয়ার তপনের সভাপতিত্বে ও সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাইফুল ইসলাম সমীরের পরিচালনায় বক্তব্য দেন সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আক্তার হোসেন ও ত্রিদিব সাহা, জেলা কমিটির সদস্য মঞ্জুর মঈন প্রমুখ।
সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ’সরকার মানুষের মুখের অন্ন কেড়ে নিয়েছে। প্রতিবাদ করার গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। দেশের সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে মানুষের কাঁধে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন চাপিয়েছে। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে যারা দেশের শাসন প্রক্রিয়ায় ন্যূনতম গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বিনাশ করেছে, তারা জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে একটি তথাকথিত সংবিধানসম্মত স্বৈরশাসন কায়েম করেছে। ক্ষমতাসীন সরকার আজীবন ক্ষমতায় থাকতে আগামী নির্বাচন অতীতের মতো ভোটারবিহীন, প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন, একতরফা উপায়ে সম্পন্ন করতে চায়।’
বক্তারা বলেন, বিনা বাধায় একতরফা নির্বাচন করার লক্ষ্যে ক্ষমতাসীনদের সকল চক্রান্ত বরবাদ হতে চলেছে। দেশের মানুষ ভোটাধিকারের সংগ্রাম থেকে স্বাধীনতার সংগ্রামে উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছিল। এই বাংলাদেশে জনগণের ভাত ও ভোটের অধিকার হরণ করে কারও পক্ষেই শাসনক্ষমতা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।
সমাবেশে অভিযোগ করা হয়, সিপিবিসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা-হুলিয়ার মাধ্যমে আন্দোলন দমনের অপচেষ্টা করা হচ্ছে। রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সকল জুলুম-নির্যাতন মোকাবিলা করে দাবি আদায় করা হবে।
নেতারা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে অতীতের মতোই একটি প্রহসনের নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দলকে টেনে আনার সব ধরনের প্রচেষ্টা চলমান আছে। তাতে ব্যর্থ হলে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী যত বেশি সম্ভব রাজনৈতিক দল ও শক্তিকে নির্বাচনে নিতে চায়। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সম্প্রতি বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক দল, এমনকি জামায়াতকে নিয়েও রাষ্ট্রশক্তির নানান তৎপরতা চোখে পড়ছে।
তারা বলেন, গণতন্ত্র ও প্রতিনিধিত্বশীল শাসনের দীর্ঘ অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ, সার্বভৌমত্বের ওপর আগ্রাসী হওয়ার ক্ষেত্রে বিবাদমান সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও আঞ্চলিক আধিপত্যবাদী রাষ্ট্রগুলো চরম প্রতিযোগিতায় লিপ্ত আছে।