দেশের বিভিন্ন স্থানে কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা নেই। তার সঙ্গে বইছে হিমেল বাতাস, যা শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে তুলেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই অবস্থার আরও কয়েকদিন স্থায়ী থাকার আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের জানুয়ারি মাসব্যাপী পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, চলতি মাসে দেশে স্বাভাবিকের তুলনায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম। দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে একটি নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে।
তাপমাত্রার প্রভাব ও শীতের অনুভূতি নিয়ে পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, জানুয়ারিতে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেশি থাকতে পারে। তবে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কম থাকায় শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে।
শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ মাসে দেশের পশ্চিম, উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এক থেকে দুটি মাঝারি ধরনের এবং অন্যান্য স্থানে দুটি থেকে তিনটি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল এবং নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা দেখা দিতে পারে। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশা স্থায়ী থাকতে পারে।
ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে।
আজ বৃস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা (১-২) সেঃ হ্রাস পেতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে সারাদেশের কোথাও কোথাও দিবাভাগে শীতের অনুভূতি বিরাজমান থাকতে পারে।
অধিদপ্তর আরও বলছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, এর বর্ধিতাংশ উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
অধিদপ্তর বলছে, বর্ধিত ৫দিনে তাপমাত্রা আরো কমতে পারে।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, মধ্য রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীন নদী পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।
তিনি বলেন, জানুয়ারি বাংলাদেশের শীতলতম মাস। এ সময় তাপমাত্রা অনেক কমে যায়। এ বছরও জানুয়ারিতে তাপমাত্রা কম থাকবে। হয়তো ২-৩টা মৃদু থেকে মাঝারি ও ১-২টা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ চলে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে দেশের উত্তরাঞ্চলের তাপমাত্রা ৪-৫ ডিগ্রিতেও নেমে যেতে পারে।
এই আবহাওয়াবিদ আরো বলেন, চলতি মাসে ৩/৪ টি মাঝারি ও একাধিক তীব্র শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে। গত কয়েক বছরের মতো এবারো জানুয়ারিতে তাপমাত্রা কম থাকবে। হয়তো ২-৩টা মৃদু থেকে মাঝারি ও ১-২টা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ চলে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে দেশের উত্তরাঞ্চলের তাপমাত্রা ৪-৫ ডিগ্রিতেও নেমে যেতে পারে।
এদিকে, আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, আজ সকাল ছয়টায় ঢাকায় ১৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯১ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ছয় থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যাবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় আকাশ আজ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। আবহাওয়া প্রায় শুষ্ক থাকলেও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়বে।