শুভ নববর্ষ, ১৪৩১ | জাহান আরা খাতুন

:: জাহান আরা খাতুন ::
প্রকাশ: ৫ মাস আগে

“শুধু যাওয়া আসা,
শুধু স্রোতে ভাসা
শুধু দেখা পাওয়া,
শুধু ছুঁয়ে যাওয়া,
শুধু দূরে যেতে যেতে
কেঁদে চাওয়া”। (রবীন্দ্রনাথ)
সময় এক লীলাবতী ঝরনা। যেন এক বহতা নদী! নিরবধি ছুটে যায়।
সতত বয়ে চলে।
ও নদী, তুমি কই যাও? আত্মমগ্ন নদীর মুখে কোনো ভাষা নেই! বিশ্বচরাচরব্যাপ্ত প্রশ্নরা তবু আকুল- ব্যাকুল, তুমি কথা বলনা কেন? কেন বলনা কথা?
জবাব নেই!
নেই!!
তার নৃত্য -চপল তরঙ্গ- বিভঙ্গে
একটাই সুর, একটাই মূর্ছনা, “আমি চঞ্চল হে,
আমি সুদূরের পিয়াসী”। (রবীন্দ্রনাথ)

কোন সুদূরের ব্যাকুল বাঁশি তাকে চির চঞ্চল, চির অধীর করে রেখেছে কেউ জানে না। আমরাও না । শুধু জানি,যে নতুনের ঝলক একদিন পুলক- বিহ্বল করে, সংগোপনে সে-ও একদিন হারিয়ে যায় ব্যথিত অতীতে।
ক্লান্ত ফুলের ছায়াপথ ধরে ।

ভাঙা-গড়ার এই মধুমতী মায়ায় কুহকী সময় আমাদের আবিষ্ট করে রাখে। আমরা নিজের অজান্তেই বিনাশ,বিলয়,বিলুপ্তি আর বিদায়ের আলোছায়ার মাঝে জীবনের গভীরতর প্রত্যয়ে দীপ্র হই,
দীপ্ত হই।
বিজন রাতে পদ্ম দিঘির বুকেযে অথির জোছনা ঝরে, ঠিক ঠিক তার রং এনে জীবন সাজাই ।
আল্পনা আঁকি ।
মধুরিমা জীবন তখন সুধারসে হিল্লোলিয়া ওঠে।

“একি ঢেউ খেলা হায়
এক আসে আর যায়।
কাঁদিতে কাঁদিতে আসে হাসি,
বিদায়ের শেষ তান
না হইতে অবসান
কোথা হতে বেজে উঠে বাঁশি !”(রবীন্দ্রনাথ)

আসলে ১৪৩০ এর বিদায় মূর্ছনার অন্তরালে একদিকে আছে নতুনের হিরণ্ময় উৎসার। অন্যদিকে আছে নিভৃত প্রাণের বিজন দ্বীপে কথাহীন ব্যথাদের নিরন্তর বসবাস!

ওরা নাহয় ওদের মতই থাক।
আকাশ কাঁদুক সুদূরব্যাপ্ত মগ্ন মেঘমল্লারে!
ক্ষতি কি?
এমুহূর্তে আমরা সত্য, সুন্দর আর কল্যাণ-ডালায় নতুন বছরকে স্বাগত জানাই। সবার জীবনে ফুল ফুটুক। আনন্দলোকের মঙ্গলালোকে জীবন উদ্ভাসিত হোক।
সিঞ্চিত হোক শুভ আর কল্যাণের অমিয়ধারায়।
শুভ নববর্ষ, ১৪৩১

লেখক: জাহান আরা খাতুন, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, হবিগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ, হবিগঞ্জ।


[প্রিয় পাঠক, পাবলিক রিঅ্যাকশনের প্রায় প্রতিটি বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। আপনার অনুভূতির কথা আমাদের লিখে পাঠান। ছবিসহ মেইল করুন opinion2mail@gmail.com এই ঠিকানায়। যে কোনো খবর, ভ্রমণ, আড্ডা, গল্প, স্মৃতিচারণসহ যে কোনো বিষয়ে লিখে পাঠাতে পারেন। পাঠকের লেখা আমাদের কাছে সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ।]