পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক:
শীতকালে অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ঠান্ডার মৌসুমে পানি কম পান করা, প্রচুর চা বা কফি পান করা, কম ব্যায়াম করা, ফাইবারযুক্ত খাবার কম খাওয়ার কারণেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেশি দেখা যায়।
কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পেট পরিষ্কার হয় না। ফলে গ্যাসের সমস্যা লেগেই থাকে। দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগলে সেখান থেকে কোলন ক্যানসারও হতে পারে।
তাই শীতকালে জীবনযাপনের ব্যাপারে সচেতন হওয়া জরুরি। শীত মানেই সব খাবার খাওয়ায় ছাড় রয়েছে, এমন নয়। কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলো কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।
* অ্যালকোহল: কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্ভাব্য কারণ অ্যালকোহল হতে পারে। কারণ অত্যধিক অ্যালকোহল সেবনের ফলে প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর তরল বেরিয়ে যায়। যার ফলে ডিহাইড্রেশন হয়।
* কাঁচা কলা: কলা হজমের জন্য খুব ভালো হলেও, কাঁচা কলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। পাকা কলায় উচ্চ মাত্রায় ফাইবার থাকে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে সাহায্য করে। অন্যদিকে, কাঁচা কলায় প্রচুর পরিমাণে স্টার্চ থাকে, যা হজম করা বেশ কঠিন। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।
* ফ্রায়েড ফুড: ভাজা খাবার বা ফাস্ট ফুড বেশি খেলেও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। কারণ এই খাবারগুলোতে ফ্যাট বেশি এবং ফাইবার কম থাকে। এর ফলে হজম প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়।
* দুগ্ধজাত খাবার: দুগ্ধজাত খাবারের কারণেও অনেকে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন। গরুর দুধে পাওয়া প্রোটিনের প্রতি সেনসিটিভিটির কারণে ছোটো বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
* প্রক্রিয়াজাত শস্য: উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার হজমের জন্য দুর্দান্ত। কিন্তু সাদা রুটি যেমন পাউরুটি এবং সাদা ভাতের মতো উচ্চ প্রক্রিয়াজাত শস্যে ফাইবারের অভাব থাকে, যা কোষ্ঠকাঠিন্যের অন্যতম কারণ।
শীতে কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে করণীয়
* শীতেও পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। দিনের শুরুতে হালকা গরম পানিতে লেবু মিশিয়ে খেতে পারেন। সেই সঙ্গে নিয়মিত হাঁটুন। শরীরে পানির ঘাটতি পূরণে তরল জাতীয় খাবার খান।
* সকালে খালি পেটে কিংবা রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পানিতে ভিজিয়ে ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন।
* সকালের নাস্তায় বা রাতে খই খেতে পারেন। খইয়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকায় এটি পেট পরিষ্কার করতে ভূমিকা রাখে।
* বাঁ দিকে পাশ ফিরে ঘুমোলেও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমে।
* কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় প্রতিদিন পাকা পেঁপে, আপেল খেতে পারেন। এ ছাড়া প্রচুর পরিমাণ শাকসবজি, ডাল খেতে পারেন।
* কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় কিশমিশ খেতে পারেন। কিশমিশে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে দারুণ কার্যকর। তবে পানিতে ভিজিয়ে রেখে কিশমিশ খাওয়া ভালো। কারণ, শুকনো খাবার খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।
* দিনে ২ থেকে ৩ কাপের বেশি চা বা কফি না খাওয়াই ভালো।
* পেট পরিষ্কারের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম দরকার। ঘুম ভালো হলেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়।
তথ্যসূত্র: বোল্ডস্কাই