লেখক-সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মি শাহরিয়ার কবিরের মুক্তির দাবীতে বাংলাদেশের অন্তবর্তি কালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের প্রতি আবেদন জানিয়েছে জেনেভায় জাতিসংঘের দুটি মানবাধিকার সংগঠন।
‘’RADDHO’’ এবং IRESK সংগঠনের পক্ষে জাতিসংঘ জেনেভা থেকে RADDHO প্রোগ্রাম ম্যানেজার এবং প্রধান প্রতিনিধি দায়িত্ব প্রাপ্ত বিরো দিওয়ারা ও IRESK এর প্রধান ফজলুর রহমান চলতি সপ্তাহে পৃথক পৃথক ইমেল বার্তায় আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মানবাধিকার কর্মি শাহরিয়ার কবিরের প্রতি আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী আচরনের অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে, উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা উল্লেখ করে, মামলার প্রত্যাহার করে তাকে অভিলম্বে মুক্তি দেয়ার আহবান জানিয়েছেন।
পৃথক পৃথক ইমেইল বার্তায় বিরো দিওয়ারা ও ফজলুর রহমান আফ্রিদি বলেন, আমরা এশিয়া-ইউরোপ-আমেরিকা ও অষ্ট্রেলিয়ার মানবাধিকার কর্মী, বাকস্বাধীনতার রক্ষক এবং ইউরোপে বসবাসকারী। আমরা বাংলাদেশের একজন স্বীকৃত সাংবাদিক-বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত ডকুমেন্টারি চলচ্চিত্র নির্মাতা, একজন লেখক- একজন মানবতাবাদী এবং সর্বোপরি একজন আপসহীন মানবাধিকার কর্মী শাহরিয়ার কবিরের গ্রেপ্তারের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। কবির সেক্যুলার বাংলাদেশের ফোরামের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কমিটির উপদেষ্টা। আমরা তার মানবাধিকার সক্রিয়তা এবং একটি ধর্মনিরপেক্ষ দক্ষিণ এশিয়ার জন্য তার কাজের প্রশংসা করি।
তারা আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট সম্পর্কে অবগত আছি যা জুলাই থেকে ক্রমবর্ধমান এবং এর ফলে শাসন পরিবর্তন হয়েছে এবং নোবেল শান্তি বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়েছে। আমরা আপনার (ড. ইউনূস) প্রতি অত্যন্ত উচ্চমানের সম্মান রাখি এবং আপনার জন্য সর্বোচ্চ প্রশংসা করি কারণ আপনি বাংলাদেশে আপনার গ্রাউন্ড ব্রেকিং কাজের মাধ্যমে সমগ্র উপমহাদেশকে গর্বিত করেছেন।
চিঠিতে তারা লিখেন, আমরা অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে চাই যে নতুন শাসনের এক সপ্তাহের মধ্যে, ১৫ সেপ্টেম্বর শাহরিয়ার কবির ৭৩ বছর বয়সী, যাকে রাজনৈতিক অভিযোগে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যা প্রথমে হালকা বলে মনে হলেও রাষ্ট্রযন্ত্রের লক্ষ্যবস্তু প্রয়োগের এই জঘন্য কাজের নিন্দা করা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নেই যা ন্যায়বিচারের পরিবর্তে প্রতিহিংসার দ্বারা চালিত বলে প্রতিয়মান হয়। গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে তাকে এক সপ্তাহের রিমান্ডও দেওয়া হয়েছে যা খুবই উদ্বেগজনক ।
গভীর উদ্বেগের আরেকটি উল্লেখযোগ্য কারণ হলো, আপনার নেতৃত্বে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে শাহরিয়ার কবিরের উপর মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং গণহত্যার অভিযোগে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একাধিক ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি নিজে যেমন একাত্তরের বাংলাদেশ গণহত্যার শিকারদের স্বীকৃতির পক্ষে ছিলেন, তার উপর পরিকল্পিত ভাবে এসব মামলা যা সমগ্র উপমহাদেশ এবং সাড়া বিশ্বের জন্য একটি লাল অক্ষরের বছর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।