লিবিয়ায় মানবপাচার চক্রের মূল হোতাসহ দুই সদস্য গ্রেপ্তার

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ৬ মাস আগে

লিবিয়ায় মানব পাচারকারী চক্রের মূল হোতা বাদশা মিয়া (৪২) এবং তার অপর সহযোগী আরজু বেগমকে (৩১) কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বুধবার (২৬ জুন) সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি জনাব মোহাম্মদ আলী বিপিএম, পিপিএম এর নির্দেশনায় সিরিয়াস ক্রাইম টিএইচবি শাখার একটি টিম তাদেরকে গ্রেপ্তার করে।

মানব পাচারকারী চক্রটি বিদেশগামী অসহায় লোকদের উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে প্রথমে ভিজিট ভিসায় দুবাই নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে লিবিয়ায় অবস্থানরত গ্রেপ্তারকৃত আরজু বেগমের স্বামী রেজাউল করিমের তত্ত্বাবধানে আটক করে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে অন্য চক্রের নিকট হস্তান্তর করে। এ চক্রটি ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে ইমোতে কল দিয়ে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে মুক্তিপণ দাবি করতো।

মুক্তিপণ প্রদানের পর সেসব ভুক্তভোগীদের ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পাঠানো হতো।
এই প্রক্রিয়ায় অনেক ভুক্তভোগী সাগরেই প্রাণ হারিয়েছেন। সেখান থেকে কিছু লোক উদ্ধার হয়েছেন এবং অল্পসংখ্যক লোক ইউরোপে পৌঁছাতে পেরেছেন।

মানবপাচার এবং মুক্তিপণ আদায় সংক্রান্ত মাগুরা সদর থানার দায়ের করা এক মামলার তদন্তকালে জানা যায়, ভুক্তভোগী মোঃ নাছির হোসেন ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর তার চাচা ওমর আলীর মাধ্যমে ভারত ও দুবাই হয়ে লিবিয়া যান। সেখানে লিবিয়া প্রবাসী মাহবুবুর রহমান ছদরুলের তত্ত্বাবধানে তিনি টাইলসের কাজ করতেন। চার মাস পূর্বে নাছিরকে লিবিয়ার অজ্ঞাত স্থানে মানব পাচারকারী চক্র কর্তৃক আটক করা হয়। মুক্তিপণের দাবিতে বাদীর কাছে ইমোতে কল করে ১৫ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। মুক্তিপণ প্রদানের জন্য ভুক্তভোগীর পরিবারকে বিভিন্ন বিকাশ ও ব্যাংক একাউন্টে টাকা পাঠাতে বাধ্য করা হয়।

তদন্তে আরও দেখা যায়, বাদশা মিয়া তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে একটি কারেন্ট একাউন্ট খুলে আরজু বেগমকে তা ব্যবহার করতে দেন। উক্ত একাউন্টে মোট ১২,৫০,৯১০ টাকা জমা হয় এবং ১০,৯৭,২৮৫ টাকা উত্তোলন করা হয়। বাদশা মিয়াকে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া থানাধীন আবিদ স্টোর নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার প্রতিবেশী সম্পর্কীয় চাচাতো বোন আরজু বেগমের স্বামী রেজাউল করিম লিবিয়ায় মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে জানা যায়। আরজু বেগমকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত বাদশা মিয়া এবং আরজু বেগম আদালতে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের সাথে সংযোগ থাকার কথা স্বীকার করেছেন এবং স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

সিআইডি’র মানব পাচার প্রতিরোধ শাখা এই ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে জানা গেছে।