কাঁচা সড়কের পাশ থেকে ৩০ বছর বয়সী এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেসময় পাশেই অচেতন অবস্থায় পড়েছিল দেড় বছর বয়সী একটি শিশু। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন স্থানীয়রা।
ঘটনাটি ঘটেছে নেত্রকোনার পূর্বধলায়।
বুধবার (২৭ মে) দুপুরে মময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে শিশুটিকে ভর্তি করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নেওয়া হয় ওই নারীর মরদেহ। এর আগে সকালে পূর্বধলার বিশকাকুনি ইউনিয়নের কাছিয়াকান্দা এলাকার একটি গ্রামীণ সড়কের পাশে ওই নারীর মরদেহ এবং শিশুটিকে পাওয়া যায়।
মমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম জানান, ওই শিশুর বিষয়ে সার্বিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তার মাথার সিটি স্ক্যান করানো হয়েছে। রিপোর্টে শিশুটির মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ধরা পড়েনি। তাই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এই মুহূর্তে শিশুটির কোনো অস্ত্রোপ্রচারের প্রয়োজন নেই।
ডা. জাকিউল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শামীউল আলম সিদ্দিকী শামীমের তত্ত্বাবধানে শিশুটির চিকিৎসা চলছে। বিস্তারিত পরে জানা যাবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভোরে স্থানীয় এক ব্যক্তি ফজরের নামাজ পড়ে মাদরাসার পাশে তার মায়ের কবর জিয়ারত করতে যান। এসময় ওই নারীর মরদেহ ও শিশুটিকে কাঁচা রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেই মরদেহ উদ্ধার করে। শিশুটিকে জীবিত পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল ইসলাম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অচেতন অবস্থায় জীবিত এক শিশু ও তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করেছে। এরই মধ্যে নারীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া তার পরিচয় শনাক্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), র্যাব ও পুলিশ কাজ করছে।
জানা যায়, বতর্মানে মমেক হাসপাতালে শিশুটির দেখাশোনা করছেন কাছিয়াকান্দা গ্রামের ইউপি সদস্য (মেম্বার) রুস্তম আলী ও সুজাত মিয়া। তারাই শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন।
সুজাত মিয়া বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে নারীর মরদেহ ও শিশু পাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দেখে মৃত নারীর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তখন শিশুটি রক্তমাখা শরীরে অজ্ঞান অবস্থায় পড়েছিল।
মমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শামীউল আলম সিদ্দিকী শামীম বলেন, আঘাতে অনেক সময় মস্তিষ্ক নড়ে যায়। যে কারণে অনেক সময় জ্ঞান ফিরতে সময় লেগে যায়। ফলে এই শিশুর জ্ঞান ফিরতে কত সময় লাগবে, তা নিশ্চিত করে এখন বলা যাচ্ছে না।