রমজানে এতেকাফের ফজিলত

:: হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী ::
প্রকাশ: ২ years ago

আল্লাহর পক্ষ থেকে মুমিন বান্দার প্রতি অমূল্য তোহফা হল পবিত্র মাহে রমজান। অনাবিল শান্তি আর নিরবচ্ছিন্ন পুণ্যে বর্ষণের মাস। সৎ ও মুমিন বান্দাদের জন্য নেকি অর্জনের মাহেন্দ্রক্ষণ। এককথায়, আল্লাহর নৈকট্য হাসিল ও তাঁর ইবাদত করার বসন্তকাল পবিত্র মাহে রমজান। আমাদের মধ্য থেকে এ মহামূল্যবান মাস বিদায় নিতে চললো।

তবে শেষ দশকেও আল্লাহ তায়ালার পছন্দনীয় এমন কিছু আমল রয়েছে, যার মাধ্যমে বান্দা তাঁর অতি নিকটে পৌঁছুতে পারে। এরমধ্যে একটি হলো এতেকাফ। রাসুলুল্লাহ সা. এ আমলকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতেন। মসজিদে নববিতে নিজে এতেকাফ করতেন এবং অন্যকেও এতেকাফ করতে উৎসাহিত করতেন।

পাবলিক রিঅ্যাকশনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

হজরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল্লাহ সা. আমৃত্যু রমজানের শেষ দশকে এতেকাফ করেছেন। তাঁর পরে উম্মাহাতুল মুসলিমিন তা আদায় করতে থাকেন’। (বুখারি: ২/৭১৩) পুরো বৎসর দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততার কারণে আল্লাহর ইবাদত করতে বান্দার তেমন ফুরসত মিলে না।

তাই আল্লাহ তায়ালা এতেকাফের বিধান রেখেছেন, যেনো এক’টা দিন অন্যান্য কাজ থেকে নিজেকে মুক্ত রেখে একনিষ্ঠভাবে তাঁরই ইবাদতে বান্দা লিপ্ত থাকতে পারে। শুধু এ দশদিন গুরুত্বের সঙ্গে ইবাদত করাটাও অনেক লাভজনক। এতেকাফকারী এতেকাফরত অবস্থায় কোনো আমল না করতে পারলেও সর্বদা ইবাদতকারীর মধ্যে শামিল থাকে। তাই নিঃসন্দেহে শবে কদরের ফজিলতও অর্জিত হয় তার।

রাসুলুল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একদিন এতেকাফ করবে, আল্লাহ তায়ালা তার ও জাহান্নামের মধ্যে তিন খন্দক দূরত্ব সৃষ্টি করে দিবেন। এক খন্দকের পরিমাণ পূর্ব থেকে পশ্চিমের দূরত্বের সমান। (বায়হাকি: ৪২৪) | এতেকাফকারী বাইরের অন্যান্য আমল যেমন জানাজা, রোগী দেখতে যাওয়া ও সামাজিক অন্যান্য জনকল্যাণমূলক কাজে শরিক হতে না পারলেও, মসজিদে বসেই সে সওয়াব তার অর্জিত হয়ে যায়।

এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ স.বলেন, ‘এতেকাফকারী সমস্ত গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে। সে বাইরের অন্যান্য আমল না করতে পারলেও আমলকারীর সমন সওয়াব লাভ করে। (ইবনে মাজাহ: ৫৬৭) রাসুলুল্লাহ স. সাহাবায়ে কেরাম রা. কে এতেকাফের প্রতি উৎসাহিত করতে এর অনেক ফজিলতের কথা বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন ‘যে ব্যক্তি রমজানের দশদিন এতেকাফ করবে, তার এ আমল দুইটি হজ ও দুইটি ওমরার সমান হবে। (বায়হাকি: ৪২৫)

রমজানে কম আমল করলেও অনেক বেশি নেকি হাসিল হয়। আর এতেকাফ অবস্থায় তো হয় আরো বেশি। এটি আমাদের ওপর আল্লাহর অনেক বড় ইহসান। তাই প্রত্যেকের উচিৎ, দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততাকে পেছন রেখে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এতেকাফ করা। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে এতেকাফ করার তৌফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন।

লেখক: হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট।


আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে ভার্চুয়াল মতামত ও অন্যান্য ভিডিও পাবেন।

গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন।


Public Reaction একটি মতামতভিত্তিক সাইট।
মূলধারার সংবাদ এবং মতামত, প্রবন্ধ, গল্প, কবিতাসহ সৃজনশীল লেখা প্রকাশের একটি মুক্তমাধ্যম এটি। লিখুন আপনিও।
ইমেইল: opinion2mail@gmail.com, info@publicreaction.net