পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে রাখে চক্রটি। নিয়োগ পরীক্ষা যে প্রশ্নে অনুষ্ঠিত হয় তার একটা কপি পরীক্ষার অন্তত এক ঘণ্টা আগে প্রার্থীদের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয়। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছে আসামীরা।
বাংলাদেশ রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলীসহ পিএসসির (সরকারি কর্ম কমিশন) বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
এ ঘটনায় ঘটনায় রাজধানীর পল্টন মডেল থানার মামলায় পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবনসহ ছয় আসামি আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
সিআইডি সূত্র জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত ছিলেন। তারা একাধিক নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসেও জড়িত। তাদের সিআইডি কার্যালয়ে এখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) দুজন উপপরিচালক, দুজন সহকারী পরিচালক, পিএসসির আলোচিত সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীও রয়েছেন। সিআইডি সদরদপ্তর সূত্র এ তথ্য দিয়েছে।
গত রবিবার রাতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এখনো অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি। বিপিএসসির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম চক্রটির প্রধান বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, প্রশ্নফাঁসকারী চক্রটি গত ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলীর নিয়োগ পরীক্ষাকে বেছে নেয়। এ পরীক্ষা যে প্রশ্নে অনুষ্ঠিত হয় তার একটা কপি পরীক্ষার অন্তত এক ঘণ্টা আগে প্রার্থীদের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয়। এরপর ৫ জুলাই সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সে প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
সূত্র জানায়, চক্রের সদস্য উপপরিচালক মো. আবু জাফরের মাধ্যমে দুই কোটি টাকার বিনিময়ে রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করা হয়। তিনি শীর্ষ কর্মকর্তাদের ট্রাঙ্ক থেকে পরীক্ষার আগের দিন তাকে প্রশ্ন সরবরাহ করেন। তিনি সিআইডিকে জানান, ৪৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদুর রহমান বলেন, অভিযান চালিয়ে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরো কে কে এ চক্রের সঙ্গে রয়েছে, তাদেরও গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।