যুক্তরাজ্যে ৩৬০ বাড়িসহ সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সব সম্পদ জব্দের আদেশ

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন রিপোর্ট | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ২ মাস আগে

যুক্তরাজ্যে থাকা ৩৬০টি বাড়িসহ সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের দেশে-বিদেশের সব সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আদালত-সংশ্লিস্ট সূত্রে এ খবর জানা গেছে।

দুদকের উপ-পরিচালক রাম প্রসাদ মণ্ডলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনে দুদক জানায়, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ-দুর্নীতি, অবৈধ সম্পদ নানা প্রক্রিয়া দেশ থেকে যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে। এমনকি বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগও করেছে। দুদকে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলমান থাকায় যেকোনো সময় সম্পদ সরিয়ে ফেলতে পারে জানিয়ে দেশে-বিদেশে সাইফুজ্জামান দম্পতির সকল সম্পদ জব্দের আবেদন করে দুদক।

এদিকে জব্দের আদেশের পর সংশ্লিষ্ট দেশে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট রিকুয়েস্ট বা এমএলএআর পাঠিয়ে জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করবে দুদক।

এর আগে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রীর দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যে সম্পদের পাহাড় রয়েছে। যুক্তরাজ্যে তিনি ২৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে ৩৬০টি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন। যা বাংলাদেশি অর্থে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার সমান। ব্রিটেন ছাড়াও নিজের রিয়েল স্টেট ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করেছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়া পর্যন্ত। সবমিলিয়ে তিনি পাঁচশরও বেশি বাড়ি কিনেছেন। যেগুলোর মূল্য প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় ৮ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা।

আলজাজিরা জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বেশ সখ্যতা ছিল সাইফুজ্জামানের। যা তিনি নিজেই স্বীকার করে বলেছেন, ‘আমার বাবা শেখ হাসিনার খুব কাছের লোক ছিলেন। আমিও তার কাছের লোক। শেখ হাসিনা আমার বস, তিনি জানেন যুক্তরাজ্যে আমার ব্যবসা আছে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৭ সালের দিকে সম্পত্তি কেনা বাড়িয়ে দেন। ২০১৯ সালে যখন তিনি মন্ত্রী হন, তখন এটি আরও বাড়ে।

আলজাজিরা জানায়, গত বছর বিনিয়োগকারীর ছদ্মবেশে তাদের সাংবাদিক সাইফুজ্জামানের ১৪ মিলিয়ন ডলারের বাড়িতে যায়। ওই সময় ‘ছদ্মবেশী’ সাংবাদিকদের সাইফুজ্জামান বড়াই করে জানান, তিনি কুমিরের চামড়ার হাতে তৈরি জুতার ওপর হাজার হাজার ডলার খরচ করেন এবং লন্ডনের সবচেয়ে দামী দোকান থেকে ইতালিয়ান স্যুট তৈরি করে পরেন।

এছাড়া ওই সময় লন্ডনের নিজের বাড়িও ঘুরিয়ে দেখান তিনি। যেটিতে রয়েছে সিনেমা হল, জিম, ব্যক্তিগত এলিভেটর এবং নতুন রোলস রয়েলস গাড়ি রাখার নিরাপদ আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং এরিয়া।

সাবেক এই মন্ত্র আলজাজিরার কাছে বলেন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব আমিরাতে নিজের বৈধ ব্যবসার মাধ্যমে এই সম্পদ কিনেছেন তিনি। তবে অন্তর্বর্তী সরকার তার বিরুদ্ধে এখন অর্থপাচারের অভিযোগ এনে তদন্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ এবং তার পরিবারের মালিকানাধীন ইউসিবিএল ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এছাড়া ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে যখন শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে চলে যান তখন দেশে ছেড়ে চলে যান সাইফুজ্জামান।