পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক:
বাংলাদেশ বডি বিল্ডিং ফেডারেশনের দেওয়া পুরস্কার ছুড়ে ফেলে সম্প্রতি দেশজুড়ে আলোচনায় এসেছেন বডি বিল্ডার জাহিদ হাসান শুভ। চলতি মাসের ২৩ তারিখ (শুক্রবার) রাতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের শেখ কামাল মিলনায়তনে আয়োজিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এমন একটি ঘটনা অনেকের মনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সেই ঘটনার ভিডিওতে দেখা যায়, পুরস্কার গ্রহণের পর জাহিদ হাসান কিছু বলার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু তাকে কিছু বলতে না দিয়ে মঞ্চ থেকে হাতের ইশারায় নেমে যেতে বলেন আয়োজকদের একজন। এরপর জাহিদ হাসান মঞ্চ থেকে নেমে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে পুরস্কার সবার সামনেই ছুড়ে ফেলেন এবং লাথি মেরে দূরে ঠেলে দেন।
বিষয়টি তুমুল সমালোচনার জন্ম দিলে জাহিদ প্রতিযোগিতায় দুর্নীতির অভিযোগ করেন। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে আলোচনা শুরু হলে এক জরুরি সভায় জাহিদকে আজীবন নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ বডি বিল্ডিং ফেডারেশন। জাহিদও ফেডারেশনকে বয়কট করার ঘোষণা দেন। বিষয়টি নিয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন জাহিদ হাসান। উল্লেখ্য, প্রতিযোগিতায় ১১ জন বিচারক প্যানেলের ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রৌপ্য পদক লাভ করেন জাহিদ। এর আগে তিনি চারবার বডি বিল্ডিংয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন।
প্রশ্ন: সম্প্রতি দেশজুড়ে আলোচনা হচ্ছে আপনাকে নিয়ে। আপনার এই ক্ষোভ মূলত কী কারণে?
জাহিদ হাসান: প্রথমেই বলে রাখি, আমার এই ক্ষোভ পুরস্কারের প্রতি নয়, জাজমেন্টের প্রতি। পুরস্কার তো আমি কিনতেই পারি যে কোনো সময়। আমি দুই লাখ টাকা খরচ করে পুরস্কারের জন্য চিল্লাপাল্লা করবো? এই প্রতিযোগিতার জাজমেন্ট পুরোটাই ভুল হয়েছে।
প্রশ্ন: আপনি টাকার প্রসঙ্গ আনলেন। প্রতিযোগিতার জন্য নিজেকে তৈরি করতে আপনার ঠিক কত খরচ হয়েছে?
জাহিদ হাসান: এটা শুধু টাকার বিষয় নয়। দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। এই টাকা শুধু আমার খরচ হয়েছে তা নয়, প্রতিটি খেলোয়াড়েরই খরচ হয়েছে। যারা ভালো করে নিজেদের তৈরি করতে চায় তাদের এ টাকা খরচ করতেই হয়।
প্রশ্ন: আপনি দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। এটা কি ফেডারেশনের বিরুদ্ধে নাকি বিশেষ কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে?
জাহিদ হাসান: এই খেলা যেহেতু ফেডারেশনের, সেহেতু অভিযোগও ফেডারেশনের বিরুদ্ধে। বিশেষ কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়।
প্রশ্ন: প্রতিযোগিতায় জাজমেন্টের যে নির্ণায়ক কতটা যৌক্তিক বলে আপনি মনে করেন?
জাহিদ হাসান: সঠিক হলে তো আমিই চ্যাম্পিয়ন হতাম।
প্রশ্ন: কী করলে জাজমেন্ট সঠিক হতো বলে আপনি মনে করেন?
জাহিদ হাসান: জাজমেন্ট কীভাবে সঠিক হবে সেটা তো বিচারকরা জানেন। বিচারের নির্ণায়ক ঠিক আছে কিন্তু যারা বিচার করেছে তারা দুর্নীতি করেছে।
প্রশ্ন: আপনাকে তো নিষিদ্ধ করা হয়েছে, অন্যদিকে আপনিও বয়কট করেছেন- এখন আপনার লড়াইটা কীভাবে চালিয়ে যাবেন?
জাহিদ হাসান: দেশে তো আইন আছে, দরকার হলে আইনি লড়াই করবো। আমি আইনের ঊর্ধ্বে নই। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইনের আওতায় যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেটাই মেনে নেব।
প্রশ্ন: আপনি কি তাদের বিরুদ্ধে তাহলে মামলা করবেন?
জাহিদ হাসান: মামলা করলে জানতে পারবেন।
প্রশ্ন: আপনি যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন অন্য প্রতিযোগীরা কি সমর্থন করছেন?
জাহিদ হাসান: কেউ কেউ সঙ্গে আছেন, আমি তাদের নাম নিতে চাই না। বড় কথা বাংলাদেশের জনগণ আমার সঙ্গে আছে।
প্রশ্ন: যিনি চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তার সঙ্গে কি পুরস্কার বিতরণের পরে দেখা হয়েছে?
জাহিদ হাসান: সেভাবে তাকে আমি চিনতাম না, তবে জানতাম যে সে এরকম শরীরচর্চা করে। তেমন পরিচয় ছিল না।
সৌজন্যে: রাইজিংবিডি ডটকম