রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনায় ট্রেনটির জানালায় আটকে দগ্ধ হয়ে মারা যান এক যাত্রী। তাকে বাইরে থেকে কিছু লোক মরিয়া হয়ে বের করার চেষ্টা চালান। কিন্তু তারা বর্থ হলে চোখের সামনে অঙ্গার হন ওই যাত্রী।
জ্বলন্ত ট্রেন থেকে ওই যাত্রীকে উদ্ধার করতে এগিয়ে যান মাসুদ রানা।
তিনি বলেন, ওই লোক বলছিলেন, ‘আমার বাচ্চাসহ বউ পুড়ে গেছে ভেতরে। আমার শরীরও পুড়ে গেছে। বের হয়ে আর কী করব।’ কথা শেষ করতে না করতেই তার ঘাড়ের ওপর ট্রেনের জানালা ভেঙে পড়ে। তিনি আটকে যান।
শুক্রবার রাত ৯টা ৫ মিনিটে রাজধানীর গোপীবাগে ট্রেনটিতে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। তাদের আটটি ইউনিটের নিরলস চেষ্টায় রাত ১০টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চার জনের মৃত্যু হয়েছে।
মাসুদ রানা বলেন, ‘আগুন লাগার খবর শুনে ছুটে আসি। ততক্ষণে ‘চ’ নম্বর বগির ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। একজন জানালা দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। দূর থেকে বাঁশ দিয়ে জানালাটা সরানোর চেষ্টা করছিলাম, যাতে তিনি বের হতে পারেন। আমরা তাঁকে বের করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। কারণ সব কিছু অনেক গরম। কোনো কিছুই ধরা যাচ্ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘ছ’ নম্বর বগিতে আগুন ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের লোকজন পানি ছিটিয়ে নেভানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভালেও দুটি বগিই একেবারে পুড়ে গেছে। বগি দুটিতে এসি থাকায় আগুনে বেশি পুড়েছে। দুই বগির পাশেই ছিল পাওয়ার কেবলর কার বগি। রেলওয়ের কর্মীরা এসেও খুলতে ব্যর্থ হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রেনের কয়েকটি বগিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছিল। রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা পৌঁছাতে না পারায় আগুন বেশি ছড়িয়েছে। স্থানীয় লোকজন দ্রুত গিয়ে পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে।
এদিকে, এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এটি নাশকতা কি না তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।